বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে আগৈলঝাড়ারর ধর্ষিত কলেজ ছাত্রী বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে আগৈলঝাড়ারর ধর্ষিত কলেজ ছাত্রী - ajkerparibartan.com
বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে আগৈলঝাড়ারর ধর্ষিত কলেজ ছাত্রী

3:45 pm , July 11, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ প্রেমিকের সাথে দেখা করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ নেতার ভাতিজার হাতে ইজ্জত হারিয়ে বাড়ি ফিরল আগৈলঝাড়ার কলেজ ছাত্রী। বিচারের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ধর্ণা। স্থানীয়ভাবে অভিযুক্তর বিচারের নামে প্রহসনের কালক্ষেপন করে চলছে আর্থিকভাবে ম্যানেজ করার প্রক্রিয়া। ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী কালকিনির একটি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে এক বিষয়ে ফেল করা শিক্ষার্থী ও রাজিহার ইউনিয়নের রামানন্দেরআঁক গ্রামের বাসিন্দা। ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রী জানান, তার সাথে আগৈলঝাড়ার সীমান্তবর্তী কোটালীপাড়া উপজেলার রামশীল ইউনিয়নের নারকেলবাড়ি গ্রামের সুকদেব রায়ের ছেলে ডিপ্লোমার ছাত্র রঞ্জন রায় এর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্কের সূত্র ধরে গত বুধবার ওই ছাত্রী রঞ্জনের সাথে দেখা করতে রামশীল কলেজের সামনে যায়। রঞ্জনের আসতে দেরী হওয়ার মধ্যে আকস্মিক বৃষ্টি নামায় ছাত্রী নিরুপায় হয়ে কলেজের নাইটগার্ড এর রুমে আশ্রয় নেয়। বৃষ্টির সময়ে সেখানে অন্যান্য লোকজনের সাথে আশ্রয় নেয় রামশীল গ্রামের সুভাষ বালার ছেলে অনিমেষ বালা (৩০) ও একই গ্রামের কেশব বালার ছেলে বিপুল বালা। অনিমেষ রামশীল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জগদীশ বালার ভাতিজা ও এক সন্তানের জনক।
বৃষ্টি থামলে রুম থেকে অন্যান্যরা চলে গেলেও সেখানে অনিমেষ ও বিপুল ছাত্রী রুম থেকে বের হতে বাধা দিয়ে অনিমেষ তাকে জোর করে বসিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করে। এক পর্যায়ে ওই ছাত্রীকে জোর করে চেপে ধরে অনিমেষ তার সাথে বিভিন্ন অশালীন ভঙ্গিতে মোবাইল ফোনে ছবি তুলতে বাধ্য করে। বিষয়টি ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে ওই ছাত্রী তার প্রেমিক রঞ্জনকে অবহিত করে। ছাত্রী আরও জানায়, এক পর্যায়ে অনিমেষ তার সাথে থাকা বিপুলকে কৌশলে দোকানে সিগারেট আনতে পাঠিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে ধর্ষনের চেষ্টা চালায়। এরপরে বিপুল ঘটনাস্থলে এসে ওই ছাত্রীকে তার বাড়িতে নিয়ে খাবার খাইয়ে বিভিন্নস্থান ঘুরিয়ে সন্ধ্যায় মোটরসাইকেলে বাড়ি পাঠায়। বিষয়টি ওই ছাত্রী বাড়ি ফিরে তার মাকে খুলে বলে।
অনিমেষের বিরুদ্ধে এলাকায় গৃহবধু ধর্ষণসহ এলাকায় লাম্পট্যের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। একাধিক ঘটনার মামলায় জেল হাজও খেটেছিল অনিমেষ।
এদিকে স্থানীয়ভাবে বিষয়টি জানাজানি হলে কোদালধোয়া গ্রামের কিছু লোকজন লম্পট অনিমেষের বিচারের জন্য ওই ছাত্রীকে বৃহস্পতিবার সেখানে ডেকে পাঠিয়েভুক্তভোগীর মুখে ঘটনা শোনেন। সেখানেই ভুক্তভোগী ছাত্রী এই স্থানী গণমাধ্যম কর্মীদেরকে ঘটনার বিস্তারিত বর্ননা খুলে বলেন। বিষয়টি ছাত্রীর এলাকায় জানাজানি হলে স্থানীয় ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ছাত্রীর বংশের মুরব্বী মিহির মন্ডল, বিভুতি মন্ডল বিষয়টি নিয়ে শালিস মিমাংসার মাধ্যমে সমাধানের জন্য শনিবার দিনভর দৌড়ঝাপ করেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ললিত গাইন জানান, ভুক্তভোগী ছাত্রীর কাকা বিভুতি তাকে ফোনে সম্ভ্রম হারানোর কথা জানিয়েছেন। তাকেও ঘটনা নিরসনের জন্য ডাকা হয়েছিল। নারী নির্যাতনের বিষয় হওয়ায় তিনি শালিশ বৈঠকের মধ্যে যাননি।স্থানীয়ভাবে জেনে তিনি আরও বলেন, বিষয়টি নিয়ে ৫লাখ টাকায় টাকায় শালিকারী মধ্যস্বত্বভোগীরা রফাদফার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যার তিন লাখ টাকা দেয়া হবে ভুক্তভোগী মেয়েকে ও দুই লাখ সালিশদারা নিবে বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ছাত্রীর বংশের মুরুব্বী মিহির মন্ডল বলেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি কোন শালিশ বৈঠকের আয়োজন করেন নি। তবে শুক্রবার মেয়ের ভাই রিপনের কাছে অনিমেষের বাবা এসেছিল বলে শুনেছেন, তবে তাদের মধ্যে কি আলোচনা হয়েছে তা তিনি জানেন না। তিনিও ঘটনার বিচার দাবি করেন।
রামশীল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও অভিযুক্ত অনিমেষের কাকা জগদীশ বালা জানান, নারী ঘটিত একটি বিষয় তিনি শুক্রবার জানতে পেরে অনিমেষের বাবাকে ডেকেছিলেন। তার বাবা তাকে জানিয়েছেন ঘটনার পর থেকে অনিমেষ লাপাত্তা রয়েছে। তবে ভুক্তভোগী মেয়ে তার কাছে বিচার চাইলে তিনি শক্ত বিচার করবেন বলেও জানান।
কোটালীপাড়া থানা অফিসার ইনচার্জ শেখ লুৎফর রহমান জানান, বিষয়টি তিনি লোকমুখে শুনেছেন। তবে এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাননি।অভিযোগ পেলে মামলা গ্রহন করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রীর মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করেছেন তিনি।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT