নগরীর করোনা সংক্রমন পরিস্থিতি ভয়াবহ ॥ নেই প্রতিরোধের উদ্যোগ নগরীর করোনা সংক্রমন পরিস্থিতি ভয়াবহ ॥ নেই প্রতিরোধের উদ্যোগ - ajkerparibartan.com
নগরীর করোনা সংক্রমন পরিস্থিতি ভয়াবহ ॥ নেই প্রতিরোধের উদ্যোগ

2:22 pm , June 7, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দক্ষিণাঞ্চলে ভয়াবহ করোনা সংক্রমন হাজার ছুতে চলেছে। মহানগরীর পরিস্থিতি ক্রমে ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় পৌছলেও তা থেকে উত্তরনে নুন্যতম কোন উদ্যোগ নেই। অথচ স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে অবিলম্বে মহানগরী লক ডাউন করার সুপারিশ করা হয়েছে। রবিবার দুপুরের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণাঞ্চলে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৫১ জন। যার মধ্যে বরিশাল জেলায় ৪৯ জনের মধ্যে ৪৫ জনই মহানগরীতে। এছাড়া পটুয়াখালীতে নতুন করে দুজনের দেহে করোনা ভাইরাস সনাক্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। এ জেলাটির পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের মধ্যেও করোনা সংক্রমন ঘটেছে। রোববার দুপুর পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা দাড়িয়েছে ৯৮৩। যার মধ্যে বরিশাল জেলার অবস্থান শীর্ষে । এ জেলায় ৬১৫ কোভিড-১৯ রোগীর মধ্যে মহানগরীতেই আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় পৌনে ৬শ। এ নগরীতে পুলিশ বাহিনীর প্রায় দেড়শ সদস্য ইতোমধ্যে কোভিড-১৯’এ আক্রান্ত হয়েছে। চিকিৎসা কর্মী আক্রান্তের সংখ্যাও অর্ধ শতাধিক। গোটা মহানগরীর প্রতিটি এলাকায় করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু এ নগরীতে নুন্যতম স্বাস্থ্য বিধি পালনের কোন বালাই নেই। পথে পথে মানুষের জটলা। দোকানপাট থেকে শুরু করে সব কিছুই চলছে আগের মত করে। এমনকি নগরীতে পথ খাবারের দোকানগুলো পর্যন্ত খুলে দেয়া হয়েছে। চালচিত্র দেখলে কারো বোঝার উপায় নেই যে ভয়াবহ স্বাস্থ্য ঝুকির মধ্যে রয়েছে এ নগরী। পরিস্থিতি ক্রমে ভয়াবহ রূপ ধারন করতে চললেও কোন প্রতিরোধে নুন্যতম কোন কার্যক্রম লক্ষনীয় নয়। রবিবার দুপুর পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলে মোট আক্রান্ত ৯৮৩ জনের মধ্যে বরিশালের পরের অবস্থান পিরোজপুরের। জেলাটিতে মোট আক্রান্ত ৮৬, মারা গেছেন ৩জন। বরগুনাতে আক্রান্ত ৮০, মারা গেছেন দুই জন। পটুয়াখালীতে আক্রান্ত ৭৭, মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। ঝালকাঠীতে অক্রান্তের সংখ্যা ৬৩। মারা গেছেন ২জন এবং দ্বীপজেলা ভোলাতে আক্রান্ত ৬২, মৃত্যু হয়েছে দু জনের। তবে দক্ষিণাঞ্চচলে এপর্যন্ত করেনা সংক্রমনে মৃত ১৮ জনের মধ্যে ৫ জনই বরিশালে। এমনকি সারা দেশের তুলনায় দক্ষিণাঞ্চলে মৃত্যু হারও বেশী। এ অঞ্চলে আক্রান্ত ৯৮৩ জনের মধ্যে ১৮জনের মৃত্যু হয়েছে। যা প্রায় ২%-এর কাছে। অথচ সারা দেশে এ হার ১.৪০%-এর নিচে। পটুয়াখালী সহ অন্য জেলাগুলোর মৃত্যহার আরো বেশী।
তবে গত ২৪ ঘন্টায় পিরোজপুরে নতুন করে ৯জন সুস্থ হবার মধ্যে দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা ২২৩ জনে উন্নীত হয়েছে। অপরদিকে করোনা সংক্রমিত মোট রোগীর মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৫%-এরও কম সরকারী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। রবিবার সকাল পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া রোগীর সংখ্যা ছিল মাত্র ২০৯জন।
শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে রবিবার সকালে ৩১ জন ও আইসোলেশনে আরো ২৫ জন চিকিৎসাধীন ছিল। গত ২৪ ঘন্টায় এ হাসপাতালটির আইসোলেশনে নতুন ৯জনকে ভর্তি করা হলেও করোনা ওয়ার্ডে কোন নতুন রোগী ভর্তি হয়নি। দক্ষিণাঞ্চলে সর্ববৃহত এ চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানটিতে এ অঞ্চলের সব জেলা-উপজেলার রোগী ভর্তি হলেও ইতোমধ্যে প্রায় ৫০ জন চিকিৎসক ও নার্স সহ চিকিৎসা কর্মীও আক্রান্ত হয়েছেন। হাসপাতালটির উপ-পরিচালকও করোনা সংক্রমিত হয়ে এখন হোম আইসোলেশনে। এমনকি শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজের যে পিসিআর ল্যাবে করেনা ভাইরাস চিহিৃত করার কাজ চলছে, সেখানে এক কর্মীও আক্রান্ত হওয়ায় রবিবার ল্যাবটি জীবানু মূক্ত করতে সব কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে।
শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করেনা ওয়ার্ডে এ পর্যন্ত ভর্তিকৃত ৯২ জনের মধ্যে ৪৬ জনকে সুস্থাবস্থায় ছাড়পত্র প্রদান করা হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। অপরদিকে এ হাসপাতালটির আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তিকৃত ১৯৯ জনের মধ্যে ১২০জনকে ছাড়পত্র প্রদানের পাশাপাশি আরো কুড়ি জনকে অন্যত্র রেফার করা হয়েছে। তবে এ ওয়ার্ডে মৃত্যু হয়েছে ৩৪ জনের। যারমধ্যে ৩জনের রক্তে পরিক্ষার ফলাফল এখনো পাওয়া যায়নি।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT