ঝাউতলা এলাকায় তুচ্ছ ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার চেষ্টা ঝাউতলা এলাকায় তুচ্ছ ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার চেষ্টা - ajkerparibartan.com
ঝাউতলা এলাকায় তুচ্ছ ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার চেষ্টা

3:22 pm , May 16, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ অপ রাজনৈতিক খেলায় নেমেছে নগরীর ১৯ নং ওয়াডের্র একটি কুচক্রী মহল। এলাকার তুচ্ছ একটি ঘটনাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করতে তারা এলাকার হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে বিভাজন করার চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার জন্য সামান্য ওই ঘটনাটি সিটি মেয়র পর্যন্ত নিয়ে গেছেন তারা। এছাড়া ওই ঘটনাকে হিন্দু নির্যাতন বলে প্রচার করে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশও সৃষ্টি করে রেখেছে। অভিযোগ রয়েছে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি ও তার ছেলে নেপথ্যে থেকে ওই চক্রটিকে মদদ দিচ্ছে। আর বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় উসকানীও দিচ্ছে। জানা গেছে, ঝাউতলা ২য় গলির বাসিন্দা মার্কাস মসজিদের সূরা সদস্য শফিকুল আলম আলিমের বাসার টিনের চালে বেশ কিছুদিন যাবৎ ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা। সর্বশেষ গত সোমবার রাত ১১টার দিকে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়মীলীগ সভাপতির পুত্র ফারহান এর সাঙ্গ-পাঙ্গরা ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এর প্রতিবাদ করলে শফিকুল আলম আলিমের ছেলে নাদিম ও ফাহিমকে মারধর করে ফারহানের সাঙ্গ-পাঙ্গরা। তাদের মা এগিয়ে আসলে তাকেও আহত করে উল্লেখিতরা। পরে বিষয়টি স্থানীয় গন্যমান্যদের জানালে তারা এ ঘটনার বিচার করতে গেলে এতে বাধা হয়ে দাড়ায় স্থানীয় ছিচকে ক্যাডার বিটন, লিটন, পান্না, মিশুক সহ কয়েকজন। এক পর্যায়ে ওয়ার্ড সভাপতির বাসায় অভিযুক্তদের প্রবেশ করিয়ে বাহির থেকে গেট তালা দিয়ে দেয়া হয়। সে সময় স্বপ্নীল নামের অভিযুক্ত একজনকে পেয়ে তাকে চড় থাপ্পর দেয় গন্যমান্যরা। এসময় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতির ছেলে ফারহান এসে অভিযুক্তদের পক্ষ হয়ে এলাকার গন্যমান্যদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। ঘটনার এখানেই সমাপ্তি হবার কথা থাকলেও পরের দিন ঘটে বিস্ময়কর ঘটনা। পরের দিন সকাল হওয়া মাত্রই এলাকায় চাউর হয় এলাকায় হিন্দু নির্যাতন হচ্ছে। আর যে দোষ চাপিয়ে দেয়া হয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মজিবর রহমান বাচ্চু ও সাবেক কাউন্সিলর এ্যাড আমিনুল ইসলাম আমিন, এ্যাডভোকেট কাজী বশির সহ স্থানীয় গন্যমান্যদের উপর। নেপথ্যে থেকে ওই চক্রটি ক্ষিপ্ত করে তোলে এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়কে। স্থানীয় দের একজন মনু মিয়া জানান, যারা ইট পাটকেল নিক্ষেপ ও মারধর করেছে তাদের বিচার করা উচিৎ ছিল ওয়ার্ড আ’লীগ সভাপতির নিজের। কিন্তু তিনি তা না করে বরং তার ছেলের সাঙ্গ-পাঙ্গদের রক্ষা করার চেষ্টা করছে। তিনি সহ দুস্কৃতিকারিরা এ ঘটনাকে উস্কানি দিয়ে ভিন্নখাতে নিয়ে হিন্দু মুসলিম ইস্যু তৈরী করছে। যাদের বাসায় ইট পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়েছে এবং মারধর করা হয়েছে তারা অত্যন্ত ভদ্র প্রকৃতির লোক। এ ঘটনার শাস্তি হওয়া উচিৎ বলে মন্তব্য করেন তিনি। ১৯নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মজিবর রহমান বাচ্চু জানান, ঝাউতলা ২য় গলির শফিকুল আলম আলিমের বাসায় বেশ কিছুদিন ধরে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করছিল দুর্বৃত্তরা। সর্বশেষ গত সোমবার রাত ১১টায় স্থানীয় ৭-৮ জন ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এর প্রতিবাদ করলে আলিমের ছেলে নাদিম ও ফাহিমকে মারধর করে। মারধরের সময় নাদিমের মা এগিয়ে আসলে তাকেও আহত করে। তারা পরে খবর পেয়ে এলাকার গন্যমান্যরা সহ গেলে যারা মারধর করছে তাদের মধ্যে একজনকে এলাকার গন্যমান্যরা একটা খাপ্পর দিয়ে পাঠিয়ে দেয়। পরে শুনি আমার বিরুদ্ধে মেয়রের কাছে লিখিত অভিযোগ করছে আমি নাকি এলাকায়, বিএনপি, জামাত শিবির নিয়া কাজ করি। তিনি বলেন ঝাউতলা নগরীর মধ্যে এমন একটি এলাকা যেখানে যুগ যুগ ধরে হিন্দু মুসলিম সাম্প্রদায়িকতার উর্ধ্বে থেকে বসবাস করে আসছে। এখানে সব উৎসবে সবাই সমান ভাবে অংশ গ্রহন করে। কারো উৎসব আলাদা করে দেখা হয়না। এ রকম একটি এলাকায় হিন্দু-মুসলিম বিভাজন কোন ভাবেই হতে পারে না। সামান্য একটি ঘটনাকে ইস্যু করে রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার জন্য একটি চক্র এমনটি করছে। তিনি আরো বলেন বাবরী মসজিদে হামলার ঘটনার সময় ২ মাস রাত জেগে এলাকার মন্দির পাহাড়া দিয়েছি। সেই আমার বিরুদ্ধেই এখন হিন্দু নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক ও হীন মানসিকতার পরিচয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ বিষয়ে ১৯নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি মনিরুল ইসলাম রুবেলের নাম্বারে একাধিকবার ফোন দিলে সে রিসিভ করেনি। তার ছেলে ফারহান বলেন তুচ্ছ ঘটনাকে এলাকার কিছু লোকজন বিষয়টিকে সাম্প্রদায়িক করে তুলেছে। মূলত এলাকার কিছু ছেলে আম পাড়তে গিয়ে ইট মারলে তা গিয়ে ওই লোকের বাসায় পরে। এর পরই বিষয়টি হিন্দু নির্যাতন বলে এলাকায় ছড়িয়ে পরে। তিনি ও তার বাবা নেপথ্যে থেকে এসব কাজ করছেন এমন সব অভিযোগ অস্বীকার করেন।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT