করোনা উপেক্ষিত : বরিশালে ঈদ বাজারে ক্রেতাদের ভীড় করোনা উপেক্ষিত : বরিশালে ঈদ বাজারে ক্রেতাদের ভীড় - ajkerparibartan.com
করোনা উপেক্ষিত : বরিশালে ঈদ বাজারে ক্রেতাদের ভীড়

3:12 pm , May 12, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ নগরীতে প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ কোরানা ভাইরাসকে উপেক্ষা দীর্ঘদেড় মাস পর মহিলা ক্রেতারা গৃহবন্ধি থাকার পর শ্বাস ছেড়ে ঘড় থেকে বেড়িয়ে আসতে পেরে মহা খুশি তারা। মহা আনন্দে নগরীর বাণিজ্যিক এলাকা চকবাজারে ও ফুটপাতের দোকান গুলোতে কেনা কাটার জন্য শারিরীক সু-রক্ষার কথা ভুলে গিয়ে এক অপরের গায় গেসে কেনা কাটায় এমনভাবে মগ্ন হয়ে পড়েছেন। দেখে মনে হয়, ঈদ উৎসবের আনন্দে ভুলে গেছেন লকডাউনের কথা। চকবাজার ব্যবসায়ী মালিক কল্যাণ সমিতি সদস্যরা বিসিসি মেয়রের আহবানে দোকান-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু ঈদ বাজারের লোভনিয় আয়োজনের কারণে ভুলে গেছেন নেই সিদ্ধান্তও। মালিক সমিতি অধিকাংশ সদস্যরা তাদের নেয়া সিদ্ধান্ত ভংঙ্গ করে প্রতিষ্ঠানের অর্ধেক সাটার খুলে চালিয়ে যাচ্ছেন বেচা বিক্রি। আর সেখানে হুমরী খেয়ে পড়েছেন নারী ক্রেতারা।
বরিশাল শহরের কতিপয় খেটে খাওয়া দৈনিক আয়ের অটোচালকদের বিভিন্ন মোড়ে ট্রাফিক পুলিশ দিয়ে তাদের চলাচল বন্ধ করতে সক্ষম হলেও অপরদিকে ব্যবসায়ী বাণিজ্যিক এলাকা চকবাজার, কাটপট্রি, গ্রীজ্জা মহল¬া এলাকা নিয়ন্ত্রন করতে পারে নি তারা। গাড়ী চলেনা তাই হেটে হেটে ঈদ বাজার করতে ছুটে এসেছেন হাজার হাজার মানুষ। রাস্তায় এতো পরিমানে মানুষের চলাচল বৃদ্ধি পেয়েছে, যে দেখলে মনে হয় না বরিশাল নগরীতে প্রশাসনের জারী করেয়েছে লকডাউন।
সরেজমিন নগরীর চকবাজার এলাকায় গেলে দেখা যায় অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাটার অর্ধেক খোলা ভিতরে মহিলা ও পুরুষ ক্রেতাদের নিকট চলছে বেচা বিক্রি সামনে দোকানের কর্মচারীরা রয়েছে দাড়িয়ে এসময় তারা গণমাধ্যম কর্মীদের দেখলে ভিতরে ক্রেতা রেখে বাহির থেকে পুনরায় সাটার টেনে লাগিয়ে দিচ্ছেন তালা। অপরদিকে রেডিমেড দোকানের পাশাপাশি সড়কের ফুটপাতে বসেছে অজস্্র দোকান। সেখানে মহিলা ক্রেতাদের সাথে সাথে রয়েছে পুরুষ ক্রেতাদের ভীড়। জানা গেছে ফুটপাতে বসা অধিকাংশ ব্যবসায়ী পাশ্ববর্তি দোকানের কর্মচারী। ভ্রাম্যমান দোকানীরা বলেন, গত দুই মাস আমাদের মালিকা আমাদের বেতন দেয়নি। এখন ঈদের আগে আবার দোকান বন্ধ রয়েছে। তাই মালিকের কাছ থেকে কিছু অল্প দামের পন্য নিয়ে রাস্তায় বসেছি। আয়ের ৮০ভাগ মালিককে দিয়ে ২০ ভাগ আমরা নেবো। তারা বলেন,
গত দেড় মাস পর শুনেছি প্রশাসন থেকে নামের তালিকা চেয়েছে তারা কি দেবে কিছু চাল, ডাল তেল, আলু অর পেয়াজ তা দিয়ে কি একটি নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সংসার চলে? আমরা আমাদের দুঃখের কথা কারো কাছে না বলতে পারার কারণে কেহ আমাদের একবারের জন্য খোঁজ নেয়নি।
করোনার এই সংকটেও ঈদ বাজার করতে আসা মো: রিপন নামে এক ক্রেতা জানান, বিয়ে নতুন করেছি। প্রথম ঈদ চাইলেই এড়িয়ে যেতে পারি না। তাই শশুরবাড়ির লোকজনের জন্য কিছু পোষাক কিনতে এসেছি। তিনি বলেন, মানুষের এতো চাপ থাকবে বুঝলে আমিও আসতাম না। আমি মানুষের কাছ থেকে দুরে থাকতে চাইলেও মানুষ আমার শরীর ঘেষে দাড়ায়। এখানে স্বাস্থ্য বিধির কোন বালাই নেই।
নগরীর চকবাজার ব্যবসায়ী মালিক কল্যাণ সমিতির সাধারন সম্পাদক শেখ আঃ রহিমের সাথে বার বার যোগাযোগ করেও তার কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে নগরীর চকবাজার দোকান কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি স্বপন দত্ত বলেন, বর্তমান করোনা সমস্য সরকারের একার সমস্যা নয় এটা সকলের সমস্যা। তাই আমি সকল সচেতন ক্রেতাদেরকে অনুরোধ করব তারা যেন নিজেরা শারিরীক দুরুত্ব বজায় রেখে স্বাস্থ্য সু-রক্ষা নিয়ম মেনে কেনা কাটা ও চলা ফেরা করেন। সেই সাথে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষ ও আমার কর্মচারী ইউনিয়নের সদস্যদের বলব তারা নিজেরা স্বাস্থ বিধি অনুযায়ী ক্রেতাদের দুরুত্ব বজায় রাখার চেষ্টার করার মাধ্যমেই ব্যবসা-বাণিজ্য অব্যাহত রাখবেন। মনে রাখতে হবে মালিক-কর্মচারী ও ক্রেতাদের আমাদের করোনার বিপদ এখনো কাটেনি আমাদের সকলের সচেতনতার মাধ্যমে এই মহামারীকে প্রতিরোধ করতে হবে।
এবিষয়ে বরিশাল জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান বলেন ‘আমরা জোড় করে কারো দোকান বন্ধ করতে পারবো না। আমরা চাই সবাই যেন স্বাস্থ্য সচেতনভাবে চলাফেরার মাধ্যমে মার্কেট করেন। তিনি আরো বলেন, আমি শুনেছি শহরে বেশ মানুষের সমাগমের সৃষ্ঠি হয়েছে। এব্যাপারে মানুষকে পুনরায় সচেতন করার জন্য আমি সেনা বাহিনীর সাথে কথা বলেছি।
প্রসঙ্গত, ৯ মে রাতে বিসিসি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল¬াহ নগরীর চকবাজার ব্যবসায়ী মালিক কল্যাণ সমিতির সদস্যদের তার বাসায় আমন্ত্রন জানিয়ে বর্তমান করোনার সার্বিক সমস্যা নিয়ে আলোচনার এক প্রর্যায়ে ঈদের আগে দোকান-পাঠ না খোলার আহবান জানান। এতে মেয়রের আহবানে মালিক সমিতি মেয়রের আহবান মেনে নিয়ে ১০ মে রবিবার সাধারন সম্পাদক শেখ আঃ রহিমের বাস ভবনের সামনে বসে মালিক সমিতি যৌথভাবে এক আলোচনার মাধ্যমে দোকান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছিল।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT