1:41 pm , May 5, 2020
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ছুটি না নিয়েই বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজের (শেবামেক) এনাটমি বিভাগের এক মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট গত ২৮ দিন ধরে অনুপুস্থিত রয়েছেন। গত ৮ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত করোনার প্রায় ১ হাজার ৭শ’ নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে এ ল্যাবে। দিনরাত কাজ করতে করতে হাঁপিয়ে উঠেছেন সংশ্লিষ্টরা। অথচ এই দুর্দিন ও জনবল সংকটের মাঝেও মাহমুদা খানম নামে শেবামেকের এনাটমি বিভাগের এক মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট কোনো কারণ ছাড়াই অফিস কামাই করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কর্তৃপক্ষও তার এ অনুপস্থিতির ব্যাপারে অবহিত নয় বলে জানিয়েছে। সূত্র জানায়, অনেক বছর ধরেই শেবামেকে টেকনোলজিস্ট সংকট রয়েছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন বিভাগে ৪ নারীসহ মোট ১২ জন টেকনোলজিস্ট কাজ করছেন। এই জনবল সংকটের মধ্যেও ৮ টেকনোলজিস্ট নিয়ে মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে করোনা পরীক্ষার আরটি-পিসিআর ল্যাবের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এই ৮জনের মধ্যে মাহমুদা খানম নেই। আর সেই সুযোগেই এ্যানাটমি বিভাগের হিস্টোলজি ল্যাবের মেডিকেল টেকনোজিস্ট মাহমুদা গোটা এপ্রিল মাস কর্মস্থলে যাননি। এ মাসের সোমবার পর্যন্ত একদিনও অফিস করেননি তিনি। শুধু তাই নয়, মার্চ মাসেও ১৬ দিন কর্মস্থলে না গিয়ে ‘অনৈতিকভাবে’ হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দেন বলেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাহমুদা খানম। মোবাইলে কথা হলে তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তিনি মার্চ মাসের শেষ দিন পর্যন্ত অফিস করেছেন। এরপর শারিরীকভাবে অসুস্থ বোধ করায় কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটির দরখাস্ত দিয়েছেন বলেও জানান। এর কিছুদিন পরই লকডাউন শুরু হওয়ায় যানবাহন সংকটের কারণে গৌরনদী উপজেলার বাসস্থান থেকে অফিসে যেতে পারছেন না বলে জানান মাহমুদা। ছুটির দরখাস্ত প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তা সুশীল চন্দ্র জানান, মাহমুদা খানম একটি ছুটির দরখাস্ত দিয়েছিলেন, কিন্তু কর্তৃপক্ষ সেটি পাশ করেনি। দরখাস্ত পাশ হওয়ার আগেই তিনি অফিসে আসা বন্ধ করে দেন। আজ অব্দি অফিসে আসেননি। এ প্রসঙ্গে কলেজের প্রশাসনিক বিভাগের প্রধান সহকারী দীপক চন্দ্র জানান, মৌখিকভাবে তারা এ ব্যাপারে শুনেছেন, তবে এখনও লিখিতভাবে বিভাগ থেকে বিষয়টি তাদের জানানো হয়নি। সোমবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যাপারটি অবহিত হয়ে লিখিতভাবে জানাতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে। এ ঘটনার ব্যাপারে কলেজের অধ্যক্ষ ডা. এস এম সরোয়ার জানান, বিষয়টি মৌখিকভাবে শোনার পরপরই সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বরতদের ডেকেছেন তিনি। তাদের কাছ থেকে হাজিরা খাতায় মাহমুদা খানমের স্বাক্ষর না থাকা ও বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি জেনেছেন। বিভাগ থেকে এ বিষয়ে লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কলেজের একটি সূত্র জানায়, ১২ এপ্রিল বরিশালে লকডাউন ঘোষণা করা হলেও তার আগে থেকেই মাহমুদা খানম কর্মস্থলে যান না। স্বাস্থ্যকর্মীদের আনা-নেওয়ার জন্য প্রশাসন যানবাহনের ব্যবস্থা করেছে, তারপরও অফিসে হাজির হতে না পারার অজুহাত গ্রহণযোগ্য নয়। মূলত করোনা পরীক্ষার পিসিআর ল্যাবে দায়িত্ব পড়তে পারে এ শঙ্কাতেই দীর্ঘদিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন তিনি।