গৌরনদীতে বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্র স্থাপন গৌরনদীতে বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্র স্থাপন - ajkerparibartan.com
গৌরনদীতে বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্র স্থাপন

2:17 pm , May 1, 2020

খালে বাঁধের কারণে ৩ গ্রামে জলাবদ্ধতা, ফসলের ক্ষতি

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের তাঁরাকুপি গ্রামে বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্র স্থাপনের কারনে উক্ত ৩টি গ্রামের পানি প্রবাহ’র একমাত্র খালটি ভরাট হয়ে পড়ায় বর্ষার পানি নিস্কাশন না হওয়ার কারনে সৃষ্টি হয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতা। জলাবদ্ধতাার ফলে প্রায় ৫শ একর জমির ধান, পাট, পান বরজসহ নানা ধরনের সবজির ব্যাপক ক্ষতিসহ অনাবাদী রয়েছে ফসলী জমি। ভূক্তভোগী ও ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা প্রতিকার চেয়ে শেষ বিকালে বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ডিজিএম বরাবরে লিখিত আবেদন করেছেন। জানা গেছে, বরিশাল-ঢাকা মাহসড়কের পাশে গৌরনদী উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের তাঁরাকুপি গ্রামে বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর আওতাধীন আরইইবিডিপি-২ এর অর্থায়নে গৌরনদী ৩,৩৩/১১ কেভি বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্র নির্মানের কাজ ২০১৮ সালের এপিল মাসে শুরু হয়। বার্থী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জহুরুল হক বেপারী বলেন, ‘বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্রটি নির্মাণ কাজের সময় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বালু ভরাট করে কটকস্থল, তাঁরাকুপি ও পশ্চিম বাউগাতি গ্রামের পানি প্রবাহ’র একমাত্র খালটি ভরাট করে। এসময় এলাকাবাসী পানি নিস্কাশনের জন্য কালভার্ট নির্মানের দাবিতে গৌরনদী পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজারের কাছে লিখিত আবেদন করা হলেও আবেদনে কোন সারা না পেয়ে এলাকাবাসি কাজে বাঁধা প্রদান করেন। বাঁধা উপেক্ষা করে গত বছর জুন মাসে ঠিকাদারী প্রতিষ্টান রাতের আধারে অপরিকল্পিত ভাবে নামে মাত্র একটি পাইপ বসিয়ে রাস্তা নির্মান করে পানি প্রবাহ বন্ধ করে দেয়। ওই পাইপ দিয়ে কোন প্রকার পানি প্রবাহ না হওয়ার কারনে সামান্য বৃষ্টি হলেই পুরো এলাকা জলাবদ্ধা সৃষ্টি হয়ে যায়। তাঁরাকুপি গ্রামের জানে আলম জানান, জলাবদ্ধতার কারনে তার ২০ শতক জমি অনাবাদি রয়েছে। কটকস্থল গ্রামের মোঃ মাসুদ মিয়া বলেন, ‘গত কয়েক দিনের ভাড়ি বর্ষনে জলাবদ্ধতার কারনে তার তিন একর জমির আঁধাপাকা বোরো ধান তলিয়ে গেছে। ধান ঘরে তোলা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি। তাঁরাকুপি গ্রামের আঃ হালিম বেপারী জানান, পল্লী বিদ্যুতের বাঁধের কারণে তারসহ অনেকের পান বরজে পানি জমে পানের ক্ষতি হয়েছে। কটকস্থল গ্রামের কৃষক কেরামত আলী মাঝি জানান, তার ৪ একর জমির পাট নষ্ট হয়ে গেছে। এ ছাড়া সবজিসহ অন্যান্য ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা নিজ উদ্যোগে বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্রের পাশের খালে দেয়া নামে মাত্র পাইপটির দু’পাশের মাটি কেটে পানি প্রবাহর জন্য চেষ্টা করেন। কিন্তু পানির স্থর থেকে নিস্কাশনের পাইপ অনেক উপরে স্থাপন করায় পানি প্রবাহ হচ্ছে না। ভূক্তভোগী কৃষকরা প্রতিকার চেয়ে বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও গৌরনদী পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার এর কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। বার্থী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহান প্যাদা তিনটি গ্রামের জলাবদ্ধাতা ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতির কথা স্বীকার করে বলেন, ‘স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের কথা চিন্তা করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে’। এ ব্যাপারে গৌরনদী পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার জুলফিকার হায়দার চৌধুরীর বক্তব্য চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত জাহান চাষিদের লিখিত আবেদন পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে’।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT