সাজানো হচ্ছে শহীদ মিনার সাজানো হচ্ছে শহীদ মিনার - ajkerparibartan.com
সাজানো হচ্ছে শহীদ মিনার

1:00 am , February 5, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সাজানো হচ্ছে নগরীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। প্রতি বছরের মতো ভাষার মাস শুরুর সাথে সাথে এ কাজ শুরু হয়েছে। দিবসটি পালনের পর শহীদ মিনার সুরক্ষায় তেমন তদারকি না থাকলেও এখন চলছে ঘষা-মাজাসহ নতুন সাজে সজ্জিতকরনের কাজ। যা প্রতি বছর হয়। এ মাসের শুরু থেকেই গনপূর্ত অধিদপ্তরের নির্দেশে দেশের সকল শহীদ মিনার সজ্জিত করা হয়। পহেলা ফেব্রুয়ারী থেকে সাজ সজ্জার কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে গনপূর্ত অধিদপ্তরের ঠিকাদার আব্দুল মতিন। তিনি জানান, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে সামনে রেখে তারা ১ ফেব্রুয়ারী থেকে শহীদ মিনার পরিস্কার করে, তাতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে প্রস্তুত করনের কাজ শুরু করছেন। ইতিমধ্যে পুরো শহীদ মিনার বেদীর সিংহভাগ এর সংস্কার ও রং এর কাজ শেষ করেছেন তারা। আর ৩/৪ দিনের মধ্যে বাকি কাজ শেষ করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের জন্য বেদী পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে যাবে।
সূত্র মতে, দেশের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম শহীদ মিনার এটি। নগরীর সার্কিট হাউসের উত্তর পার্শে গনপূর্ত অধিদপ্তরের ৬০ শতাংশ জমির উপরে এই শহীদ মিনার। রাজধানীর পরেই বরিশালের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি দেশের বৃহত্তম বলে দাবি বরিশালের সাংস্কৃতিকজনদের। এছাড়া এই শহীদ মিনারের সাথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর স্মৃতি রয়েছে। সংশ্লিষ্ঠদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, ভাষা আন্দোলনের পরের বছর থেকেই প্রতি ২০ ফেব্রুয়ারী রাতে অশ্বিনী কুমার হল চত্বরে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে শ্রদ্ধা নিবেদন করতো প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের কর্মীরা। কয়েক বছর পরে বিএম কলেজ চত্বরে অস্থায়ী শহীদ মিনার গড়ে তোলা হয়। এর পর তাতে প্রতি বছর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হত। এ অবস্থা চলতে থাকে ১৯৭২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত। ১৯৭৩ সালের ৩ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বরিশাল সফরকালে এখানকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। আড়াই লাখ টাকা ব্যয়ে এই শহীদ মিনার নির্মান করা হয়। বরাদ্দ পেতে দেরি হওয়ার কারনে এখানকার উদ্দ্যোক্তারা নিজস্ব উদ্দ্যোগে ৫২ হাজার ১১৫ টাকা চাঁদা তুলে নির্মান কাজ শুরু করে। ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে এই উদ্যোগ থমকে যায়। নির্মানকাজ সম্পন্ন না হলেও চেতনাদীপ্ত মানুষ অসম্পূর্ন শহীদ মিনার বেদীতে প্রতিবছর ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতো। পরে ১৯৮৫ সালে শহীদ দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন আয়োজিত সভায় পূর্নাঙ্গ শহীদ মিনার নির্মানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। তৎকালীন জেলা প্রসাশক আজীজ আহমেদ ১২ ফেব্রুয়ারী জেলা শহীদ মিনার নির্মানে ২১ সদস্যের কমিটি গঠন করেন। সেই কমিটির সভাপতি করা হয়েছিল অতিরিক্ত জেলা প্রসাশক সাইফুদ্দিন আহমেদ এবং সাধারন সম্পাদক করা হয় অধ্যক্ষ হোসেন আলীকে। পরে ২১ সদস্যের কমিটি ৫৭ সদস্যে উপনিত হয়। ৫২ হাজার ১১৫ টাকার সাথে নগরীর বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গের কাছ থেকে আরও টাকা তুলে নির্মানকাজ সম্পন্ন করা হয়। নির্মানে ব্যয় হয় ৬ লাখ টাকা। ১৯৮৬ সালে ১৭ থেকে ২১ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ৫ দিনব্যাপি অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে শহীদ মিনারে সকলের জন্য উন্মুক্ত অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়। শহীদ মিনার নির্মান কমিটির সভাপতি সাইফুদ্দিন আহমেদ ১৯৮৮ সালে জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করলে তাকে প্রথম শহীদ মিনারে প্রথম সংবর্ধনা দেয়া হয়। পরবর্তিতে শহীদ মিনার নির্মান কমিটি সংরক্ষন কমিটিতে রুপান্তর করা হয়। জেলা প্রসাশক সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা এনায়েত হোসেন চৌধুরি কে নিয়ে গঠিত এই কমিটি এখনও বিদ্যমান রয়েছে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT