বিভাগের ২২ সরকারি বিদ্যালয়ের ২০টিতে নেই প্রধান শিক্ষক বিভাগের ২২ সরকারি বিদ্যালয়ের ২০টিতে নেই প্রধান শিক্ষক - ajkerparibartan.com
বিভাগের ২২ সরকারি বিদ্যালয়ের ২০টিতে নেই প্রধান শিক্ষক

2:57 pm , January 27, 2020

 

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বিভাগের ছয় জেলায় সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে মোট ২২টি। যার প্রতিটিতেই রয়েছে শিক্ষক সংকট। বিশেষ করে স্কুল গুলোতে নেই স্থায়ী প্রধান শিক্ষক। ২২টি বিদ্যালয়ের ২০টিই চলছে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক দিয়ে। যার ফলে বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের পাঠদানও মারাক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। যার অনন্য উদাহারণ বঙ্গোপসাগর তীর ঘেষা বরগুনা জেলার সরকারি বালিকা ও বালক মাধ্যমিক বিদ্যালয় দুটি। শিক্ষক সংকটের কারণে রুগ্ন দশায় ভুগছে বিদ্যালয় দুটি। যেখানে ভর্তির জন্যও পাওয়া যাচ্ছে না শিক্ষার্থী। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ‘চলতি বছর বরগুনা সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহনের জন্য দিবা শাখায় ১২০টি আসনের বিপরীতে আবেদন পড়ে মাত্র ৪টি। আর প্রভাতি শাখায় আবেদন করে ১৯৯ জন। এমন সংকটের কারণ খুজতে গিয়ে বেরিয়ে আসে শিক্ষক স্বল্পতার ভয়াবহ চিত্র। বরগুনা সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের ৫২টি পদের বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ১৫ জন। যা দিয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এ কারনে কয়েক বছর আগেই এই স্কুলে তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। স্কুলটির প্রধান শিক্ষক আজহারুল হক বলেন, ‘শিক্ষক সংকটের কারনে দুই শিফটে এক হাজার শিক্ষার্থীকে পাঠদান অসম্ভব। তাই তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তাছাড়া চলতি বছর ষষ্ঠ শ্রেণিতে প্রভাবিত শাখায় ভর্তি’র আবেদন করা ৫০ জনকে প্রভাতি শাখায় এনে ভর্তি করতে হয়েছে।
এদিকে বালিকার মতোই করুন অবস্থা বরগুনার সরকারি বালক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের। এখানেও ৫১টি পদের বিপরীতে শিক্ষক রয়েছে মাত্র ২২ জন। শিক্ষক সংকটের সুযোগে সরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের বাগিয়ে নেয়া হচ্ছে আশপাশে কোচিং সেন্টারের আদলে গড়ে ওঠা অনুমোদন বিহীন স্কুলে।
স্কুলটির শিক্ষকরা বলছেন, ‘বরিশাল নগরীতে নতুন ও পুরাতন ৪টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ওই স্কুল গুলোতে কর্মরত বরগুনা জেলার বাসিন্দা কয়েকজন শিক্ষক নিজ জেলায় ফিরে এলে তবে বরগুনার স্কুল দুটিতে এমন সংকট সৃষ্টি হতো না।অপরদিকে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ‘শুধু বরগুনায় নয়, শিক্ষক সংকট রয়েছে বিভাগীয় শহর বরিশাল নগরীসহ অন্যান্য জেলার সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলোতেও। ২০১৬ সালে স্থাপিত বরিশাল নগরীর দুটি নতুন সরকারি স্কুল প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছে।নগরীর কাউনিয়ার শহীদ আরজু মনি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. এমাদুল ইসলাম বলেন, ‘বিভাগীয় সদর বরিশালে স্থায়ী প্রধান শিক্ষক আছেন শুধুমাত্র জিলা স্কুলে। তবে ৪টি প্রতিষ্ঠানেই সহকারী শিক্ষক পদগুলো প্রায় পরিপূর্ন।তিনি বলেন, ‘ভোলা জেলায় ৪টি বিদ্যালয়ের সবগুলো চলছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে। পিরোজপুরের ৬টি বিদ্যালয়ের একমাত্র সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে স্থায়ী প্রধান শিক্ষক আছেন। ঝালকাঠীতে দুটি বিদ্যালয়ের একটিতেও প্রধান শিক্ষক নেই। এসব প্রতিষ্ঠানগুলোতে সহকারী শিক্ষকও আছে সৃষ্টপদের অর্ধেক। শিক্ষকরা প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে যেতে চায় না। তাই সেখানে শিক্ষক সংকট সবচেয়ে বেশী বলে মনে করেন তিনি।মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বরিশাল অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘বরিশাল বিভাগের ২২টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট ভয়াবহ। স্থায়ী প্রধান শিক্ষক আছে মাত্র দুটিতে। স্কুলগুলোতে গড়ে ৩৮ ভাগ শিক্ষক নেই। তবে বরিশাল নগরীর দুটি স্কুল বাদ দিলে তা গিয়ে দাঁড়াবে ৫০ ভাগের বেশি।তিনি আরও বলেন, ‘চলতি সপ্তাহে মাউশি’র পরিচালককে (মাধ্যমিক) এ বিষয়ে লিখিত তথ্য দেয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন শিক্ষক নিয়োগ এবং পদোন্নিত বন্ধ থাকায় এ জটের সৃষ্টি হয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকা বিশেষ করে ভোলার দৌলতখান, পিরোজপুরের কাউখালী এবং বরগুনার বিদ্যালয়গুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। কিভাবে এ সংকট দূর করা যায় তার চেষ্টা করা হচ্ছে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT