2:55 pm , January 20, 2020
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বিয়ের জাল কাবিননামা তৈরী করে শিক্ষককে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে চার সন্তানের জননী নারীর বিরুদ্ধে। জাল কাবিনের পরে ওই শিক্ষককে তালাকও দিয়েছেন তিনি। এর পরে আবার শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌতুক মামলা দিয়েছেন ওই নারী। ঘটনাটি ঘটিয়েছেন উজিরপুর উপজেলার বরাকোটা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডস্থ গাজীরপাড় গ্রামের বাসিন্দা মঞ্জুর আলমের স্ত্রী লিপি বেগম। সে ওই একই গ্রামের মনসুর আলী খান ও সাফিয়া দম্পতির মেয়ে এবং ৩ ছেলে ও ১ কন্যা সন্তানের জননী।
প্রতারনার শিকার শিক্ষক মো. বিপ্লব হোসেন মুলাদী উপজেলার দক্ষিণ গাছুয়া গ্রামের সেলিম আহম্মেদ খানের ছেলে এবং মুলাদীর কৃষ্ণপুরের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
অভিযোগকারী শিক্ষক মো. বিপ্লব হোসেন জানান, ‘তার ভাই সাইফুল ইসলামের শ^শুর বাড়ি উজিরপুরের গাজীরপাড় গ্রামে। সেই সুবাধে ওই গ্রামে আসা-যাওয়া ছিলো শিক্ষক বিপ্লব হোসেনের। একই গ্রামের বাসিন্দা লিপি বেগম। ভাইয়ের শ^শুর বাড়ির প্রতিবেশী সাইফুল নামের অপর এক ব্যক্তির সঙ্গে বিরোধ হয় বিপ্লবের।
তিনি আরও জানান, ‘গত চার বছর পূর্বে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন বিপ্লব। হঠাৎ করেই ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট শিক্ষক বিপ্লব জানতে পারেন তার বিরুদ্ধে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবির অভিযোগে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা হয়েছে। আর এ মামলাটি দায়ের করেছেন উজিরপুরের গাজীরপাড় গ্রামের লিপি বেগম।
আদালত সূত্রে জানাগেছে, ‘লিপি বেগম দাবি করেছেন ২০১৫ সালের ২৭ মে বিপ্লব হাওলাদারের সঙ্গে ৫ লক্ষ ১ টাকা দেনমোহরে তার বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পরেই পাঁচ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন শুরু করে বিপ্লব। এক পর্যায় যৌতুক না পেয়ে তাকে ঘর থেকে বের করে দেয়। এ নিয়ে স্থানীয় ভাবে সালিশ মিমাংশা হয়েছে বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে তাদের দু’জনের বিয়ে পরবর্তী তালাক সংক্রান্ত একটি হলফনামা আদালতে দাখিল করেছেন ওই নারী। ওই নারীর পক্ষে হলফনামাটি সম্পন্ন করেন এ্যাডভোকেট সুফিয়া আক্তার। ওই হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেছেন, লিপি বেগমের পূর্বে বিয়ে ছিলো। সম্মতি না থাকা সত্ত্বেও অন্যের কু-প্ররোচনায় অবৈধ পন্থা অবলম্বন করে ২০১৫ সালের ২৭ মে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিপ্লবকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। যার নোটারি নং ১৫৩০। পূর্বের স্বামী-সন্তান নিয়ে শান্তিতে বসবাস করার জন্য ২০১৭ সালের ৩০ জুন ওই হলফনামা স্বেচ্ছায় বাতিল করে বিপ্লবকে তালাক দেন। একই সাথে বিপ্লব হোসেনের কাছে কোন দেনমোহর বা ভরণ-পোষন কিংবা এ নিয়ে কোন ধরনের মামলা করবে না বলেও অঙ্গিকার করেন লিপি বেগম। আর করলেও তা সর্ব আদালতে অগ্রাহ্য হবে বলে উল্লেখ করা হয়। অথচ এর দু’বছর পরেই ২০১৯ সালে বিপ্লবের বিরুদ্ধে যৌতুকের অভিযোগ এনে মামলা করেন লিপি বেগম।
এদিকে মামলা দায়ের পরবর্তী আদালত উজিরপুরের বরাকোটা ইউপি চেয়ারম্যানকে তদন্তের নির্দেশ দেন। চেয়ারম্যান আসামির সঙ্গে কোন প্রকার যোগাযোগ না করেই আদালতে দায়সারা প্রতিবেদন জমা দেন। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। তবে এ মামলাটি লিপি বেগমের ষড়যন্ত্রমুলক দাবি করেছেন আসামি স্কুল শিক্ষক বিপ্লব হাওলাদার। এই ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচারের দাবিও জানিয়েছেন তিনি।