রোগীর দালালের ভূমিকায় চিকিৎসক! রোগীর দালালের ভূমিকায় চিকিৎসক! - ajkerparibartan.com
রোগীর দালালের ভূমিকায় চিকিৎসক!

3:27 pm , January 16, 2020

 

সাঈদ পান্থ ॥ ডা. মো. শহিদুল ইসলাম। যিনি ডিজিও, এমসিপিসি (গাইনী), কনসালটেন্ট (গাইনী) পরিচয় বহন করেন। তিনি বরিশাল নগরীর আমানতগঞ্জে হলিং বেরী সৈয়দ মোয়াজ্জেম রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে গত ৬ বছর যাবত রোগী দেখছেন। তার বিরুদ্ধে রয়েছে কমিশনের বিনিময়ে রোগী এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরের অভিযোগ। রয়েছে ওষুধ চুরির অভিযোগ। এনিয়ে শাস্তিও ভোগ করতে হয়েছে ওই চিকিৎসককে। শুধু তাই নয় ডা. মো. শহীদুল ইসলাম এমবিবিএস পাস করেছেন কিনা তা নিয়ে রয়েছে ধু¤্রজাল। এমনকি তার নেইমপ্লেট, ভিজিটিংকার্ডের কোথাও এমবিবিএস শব্দটি পাওয়া যায়নি। তবে তিনি বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) রেজিস্ট্রেশন নম্বর জানাতে পারেননি। উল্টো তার অফিসে চা খাওয়ার আমন্ত্রণ জানান।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ডা. শহিদুল ইসলাম দীর্ঘদিন যাবত গর্ভবতী নারীদের সিজারিং করছেন। তবে তিনি এখানকার রোগীদের নগরীর সিটি হাসপাতাল, ডায়াবেটিকস হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে কমিশনের বিনিময়ে রোগীদের নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। এছাড়াও রোগীর স্বজনদের দিয়ে অধিক মূল্যের অতিরিক্ত ওষুধ ক্রয় করানোর অভিযোগ রয়েছে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। আবার অনেক সময় ‘কন্ট্রাকে’ তিনি নিজেই ওষুধ সরবরাহ করে থাকেন। যেকারনে হাসপাতালের সভাপতি, বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ এক বছর যাবত ওই চিকিৎসকের বেতন ভাতা প্রদান বন্ধ রেখেছেন। শুধু তাই নয় এখানকার রোগী সিটি হাসপাতালে দেওয়ার অভিযোগে সেই হাসপাতালেও তালা দিয়েছিলেন মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ।
হলিং বেরী সৈয়দ মোয়াজ্জেম রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোশারেফ হোসেন খান বলেন, ‘ডা. শহিদুল বিগত ৬ বছর যাবত এই হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। যার কারনে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারী মাস থেকে তার বেতনভাতা বন্ধ রেখেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ’। ওই ডাক্তার এমবিবিএস পাস করেছেন কিনা তা জানতে চাইলে সিইও মোশারেফ হোসেন বলেন, ‘আমি ৩ বছর যাবত এই হাসপাতালে কর্মরত রয়েছি। আর ডা. শহিদুল ইসলামের নিয়োগ হয়েছে আরো ৩ বছর আগে। যার কারনে তার এমবিবিএস পাস করার বিষয়ে আমার জানা নেই’।
হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য, বরিশাল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু জানান, ‘বিভিন্ন অভিযোগে ওই চিকিৎসকের বেতনভাতা বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে তার এমবিবিএস’র বিষয়ে আমার জানা নেই’। বরিশাল সিভিল সার্জন ডা. মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘তিনি যদি ভূয়া চিকিৎসক হন তবে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে’। বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. বাসুদেব কুমার দাস বলেন, ‘বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্রত্যেক চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রে লেখা বাধ্যতামূলক। কিন্তু ওই চিকিৎসক তার রেজিস্ট্রেশন নম্বর গোপন করলো কেন তা আমার জানা নেই। এরমধ্যে কোন অনিয়ম লুকানো থাকলে তা বের করে ব্যবস্থা নেয়া হবে’। এব্যাপারে অভিযুক্ত ডা. শহিদুল ইসলাম জানান, ‘আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য নয়। এছাড়া আমি বরিশাল মেডিকেল কলেজের ২৬তম ব্যাচের ছাত্র’।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT