3:05 pm , January 12, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ মাঝারী থেকে ঘন কুয়শায় শেষ রাত থেকে দুপুর পর্যন্ত দিগন্ত ঢেকে থাকার সাথে উত্তরÑপুবের হিমেল হাওয়ায় সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবন বিপর্যস্ত। সাধারন মানুষের কষ্ট আর দূর্ভোগ পিছু ছাড়ছেনা। হাসপাতালগুলোতে ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বিকেলের পর থেকে বেশীরভাগ মানুষই ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। মৃদু শৈত্য প্রবাহের পরে গত ৪ দিন যাবত কুয়াশার সাথে হিমেল হাওয়া মানুষের কষ্টকে যথেষ্ট বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে তাপমাত্রার পারদও গত তিনদিনে ক্রমশ নামছে। শণিবারের তুলনায় ১ ডিগ্রী সেলসিয়াস হ্রাস পেয়ে রবিবার সকাল ৬টায় বরিশালে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রীতে স্থির হয়েছে। তবে তা স্বাভাবিকের দশমিক ১ডিগ্রী কম।
তবে দিনের বেলা কুয়শার কারনে সূর্য আড়াল থাকায় শীতের অনুভুতি যথেষ্ট বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে সাধারন মানুষের কষ্ট ক্রমশ বাড়ছে। চলতি মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চলে তাপমাত্রার পারদ এ পর্যন্ত ১০.২ ডিগ্রী সেলসিয়াসে নামলেও তা ছিল গত বছরের চেয়ে ৩.৪ ডিগ্রী বেশী। গত বছর শীত মৌসুমে বরিশালে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৬.৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস। তবে কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ার কারনে এবার শীতের অনুভুতি বেশী। মানুষ কষ্টও পাচ্ছে যথেষ্ট বেশী। ঠান্ডাজনিত রোগ ব্যাধির প্রকোপও বিগত যেকোন বছরের তুলনায় এবছল যথেষ্ট বেশী। অব্যাহত কুয়াশার সাথে হিমেল হাওয়ায় শীতকালীন সবজি সহ বোরো বীজতলার ক্ষতিও যথেষ্ট বেড়ে যাচ্ছে। পৌষের অকাল বর্ষনের পরে কুয়াশায় গোল আলুর গাছ ‘লেট ব্লাইট’ রোগে আক্রান্তের ঝুকি ক্রমশ বাড়ছে। বোরো বীজতলা ‘কোল্ড ইনজুরী’র কবলে পড়ছে। শীতকালীন সবজির গুনগত মান ও বৃদ্ধি ব্যহত হচ্ছে।
শীতকালীন নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে দক্ষিণাঞ্চলের জেলা-উপজেলা পর্যায়ের সরকারী হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১শ রোগী ভর্তি হচ্ছে। এছাড়াও ডায়রিয়া জনিত কারনেও দেড় শতাধিক রোগী ভর্তি হচ্ছে প্রতিদিন। এর বাইরেও প্রতিদিন আরো কয়েকগুন রোগী সরকারী হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগে এবং বেসরকারী বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিক ছাড়াও চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারে ভীড় করছেন। প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক রোগী ঠান্ডাজনিত নানা রোগ এবং এর উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আসছেন। আর এসব রোগে আক্রান্তদের সিংহভাগই শিশু ও বয়স্ক। দক্ষিণাঞ্চলের বেশীরভাগ হাসপাতালেই চিকিৎসক সংকট থাকায় চিকিৎসা ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত।
তবে বিভাগীয় স্বাস্থ্য অফিস থেকে দক্ষিণাঞ্চলে ঠান্ডাজনিত রোগ বালাই সহ ডায়রিয়া চিকিৎসায় ৪ শতাধিক মেডিকেল টিম কাজ করার কথা বলা হয়েছে। চিকৎসকদের তরফ থেকে শিশু ও বয়স্কদের ঠান্ডা এড়িয়ে চলা সহ গরম পানি পান করা ও হাল্কা গরম পানিতে শিশু ও বয়সীদের গোসল করানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে। অনুর্ধ ছয় মাস বয়সী শিশুদের প্রতি বিশেষ নজর রাখার কথা বলেছেন শিশু বিশেষজ্ঞগন। এসব শিশুকে প্রতিদিন গোসল না করিয়ে প্রয়োজনে হালকা গরম পানি দিয়ে শরীর মুছে দিতে বলেছেন চিকিৎসকগন। শিশুদেও ডায়াপার যাতে ভারি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা সহ কোন অবস্থাতেই তা ৩-৪ ঘন্টার বেশী ব্যবহার না করতেও পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকগন।