রাজাপুর-বেকুটিয়া সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে বালুর বদলে মাটি ! রাজাপুর-বেকুটিয়া সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে বালুর বদলে মাটি ! - ajkerparibartan.com
রাজাপুর-বেকুটিয়া সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে বালুর বদলে মাটি !

2:50 pm , January 8, 2020

 

রাজাপুর প্রতিবেদক ॥ রাজাপুর-নৈকাঠি-বেকুটিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে পূর্ণ নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সড়ক খোড়ার পর বেলেমাটি ও লোকাল বালু দেয়ার কারণে বৃষ্টিতে পলিমাটির মতোই কর্দমাক্ত হয়ে গেছে। বরিশাল-খুলনার যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটির এ নাজেহাল দশার কারনে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ। সড়কের এ অবস্থায় সঠিক সময়ে গিয়ে ফেরি ধরতে পারছে না বাস ও ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন। জানা গেছে, রাজাপুরের মেডিকেল মোড় এলাকা থেকে উপজেলার সীমান্ত সাতুরিয়া স্কুল সংলগ্ন স্টীল ব্রিজ পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার সড়ক পূর্ণ নির্মানের জন্য সড়ক ও জনপদ বিভাগের পক্ষ থেকে ১৭ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয় এবং আগামী ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার সময় বেধে দেয়া হয়। স্থানীয়রা জানান, ১ বছরেরও বেশি সময় ধরে রাস্তাটি সংস্কারের নামে খুড়ে রাখা হয়। যাতে ওই রাস্তায় চলাচলে জনসাধারন নাগোর দোলায় উঠার সাথে তূলনা করেন। সম্প্রতি বৃষ্টি হলে সড়কের বিভিন্ন স্থানে বালু ও রাস্তা খুড়ে পাশে ফেলে রাখা মাটি সড়কে ফেলে রাস্তা সমান করা হয়। পুরাতন ও নি¤œমানের বালু ফেলানোয় কাঁদা মাটি হয়ে একাকার হয়ে গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সঠিক তদারকি না থাকায় বৃষ্টির পানির মধ্যে দায়নসাড়াভাবে বেলেমাটি, লোকাল বালু দেয়ার কারণে পলিমাটির মতোই কাদা হয়ে গেছে। জনসাধারনের চলাচল করতে এবং এ সড়কে গাড়ী চালকদের সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। বিভিন্ন সময় সড়কে মালবাহি ট্রাক ও বাস আটকা পড়ারও ঘটনা ঘটেছে। পুরাতন পরিত্যক্ত বেলে মাটি দেয়ার ফলে রাস্তা কর্দমাক্ত হয়েছে। নারিকেল বাড়িয়া গ্রামের ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান মিল্টন জানান, উপজেলার ঠিকাদারী কাজ যে কতো নি¤œমানের তা আমরা দেখতে পেয়েছি। মা হারা সন্তানের যেমন অবস্থা, আমরা রাজাপুর উপজেলার জনগণও ওইরকম অবস্থায় আছি। ঝালকাঠি কুতুবনগর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল মান্নান জানান, সরকারের পর্যাপ্ত বরাদ্দ থাকা সত্বেও যাদের কারনে রাস্তা/ভবন ইত্যাদি মেয়াদ উত্তীর্ণের পূর্বেই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে যায় তাদের বিচারের আওতায় আনা উচিৎ। কাইউম নামের স্থানীয় এক যুবক জানান, এখন সবাই মিলে ধানের বীজ রোপণ করে প্রতিবাদ জানানো দরকার। দেশ এর এত উন্নতি দেখতে পারবে, হয়তোবা তাহলে উপরস্থ কারো টনক লড়বে। ওষুধ কোম্পানীর মেডিকেল উন্নয়ন প্রতিনিধি মোঃ কবিরুল ইসলাম বলেন, কিছু পাথর আর কিছু বালু দিলে এ অবস্থা হতো না। উপজেলা কাঠিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন মিলন বলেন, প্রথমে মনে করেছিলাম লোকাল বালু, এখন দেখাগেল বেলে মাটি, জীবনে অনেক রাস্তার কাজ করতে দেখেছি তবে এই রকম দেখি নাই। রাজাপুর থেকে গ্রামের বাড়ীতে গিয়েছিলাম বৃষ্টি বাদলের খোঁজ নিতে। পথেই দেখলাম বালুর ঢেউ কাটছে তুফান, রাস্তার দুই ধারে শত শত মানুষ অবলোকন করতেছে এই দৃশ্য, আর গালা গালী করতেছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঠিক তদারকি না থাকায় এ অবস্থা হয়েছে। বেলে মাটির উপরে কার্পেটিং হলে অবস্থাটা কি হবে, সেটা বেশি দিন টিকবে না। এই রাস্তা বছরে দুই তিন বার মেরামত হয়। কিন্তু কয়েক দিন পর ফের বেহাল হয়ে যায়। স্থানীয়রা প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি নজর দিয়ে সড়কটি সঠিকভাবে নির্মানের দাবি জানান। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ২/৩ হাত বদল হওয়ায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে সংস্কার কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা রাজাপুরের ক্ষমতাসীন দলের নেতা নাসির উদ্দিন মৃধা জানান, গোপালগঞ্জের ঠিকাদারসহ আমরা কয়েকজনে মিলে কাজটি করতেছি। সিলেট ও ঢাকা থেকে বালু এনে কিছু পাথর মিশিয়ে গ্রেডিং করেছিলাম। হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় একটু অসুবিধা হয়েছে। বেকুর মেশিন দিয়ে বালু অপসারণ করে নতুনভাবে মানসম্মত বালু ও পাথর দিয়ে পুনরায় গ্রেডিং কাজ চলমান রয়েছে। ঝালকাঠি সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শেখ মোঃ নাবিল হোসেন জানান, রাজাপুর মেডিকেল মোড় থেকে সাতুরিয়া স্টিল ব্রিজ পর্যন্ত ৯ কিলোমিটারের সংস্কার কাজ চলছে। সব সময়ই রাস্তার কাজ তদারকি করা হচ্ছে দপ্তরের পক্ষ থেকে। কার্যাদেশে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার সময় সীমা রয়েছে। এ কাজে প্রায় ১৭ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT