আইএইচটিতে এক র‌্যাগিংয়ের ঘটনা ধামাচাপা দিতে দ্বিতীয় দফায় র‌্যাগিং আইএইচটিতে এক র‌্যাগিংয়ের ঘটনা ধামাচাপা দিতে দ্বিতীয় দফায় র‌্যাগিং - ajkerparibartan.com
আইএইচটিতে এক র‌্যাগিংয়ের ঘটনা ধামাচাপা দিতে দ্বিতীয় দফায় র‌্যাগিং

2:43 pm , October 27, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ্ টেকনোলজী (আইএইচটি) ছাত্রীকে র‌্যাগিংয়ের ঘটনা ধামা চাপা দিতে উঠে পড়ে লেগেছে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা। তারা ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে আত্মহত্যার চেষ্টাকারী ছাত্রীর বিরুদ্ধে অপবাদ ছড়াচ্ছে। এমনকি এই ঘটনায় মুখ বন্ধ রাখার জন্য আত্মহত্যার চেষ্টা করা ছাত্রী’র রুমমেটকেও মারধর করে মোবাইল ছিনতাই করেছে র‌্যাগিংকারী ছাত্রীরা। আর এতে সহযোগিতা করছে ইনস্টিটিউটের ছাত্রলীগ নামধারী কতিপয় ছাত্র।
আইএইচটি’র কতিপয় শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, ‘তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী কর্তৃক র‌্যাগিংয়ের প্রতিবাদ করে মারধরের শিকার হওয়া দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী আমেনার আত্মহত্যা চেষ্টার খবরটি গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ হয় র‌্যাগিংকারীরা। রাতে কয়েকজন সাংবাদিক ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে ক্যাম্পাসে গেলে তাদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। এসময় আমেনার রুমমেট জ্যোতির সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তাকেও সাংবাদিকদের সামনে আসতে দেয়া হয়নি। বরং তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী লাম্মিম, পাপড়ি, মৌ, জুই, নাফিজা, ফাতেমা ও দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী মিনা, তাসমিয়া ও সালমাসহ বেশ কয়েকজন মিলে জ্যোতিকেও র‌্যাগিং করে। যাতে সে বিষয়টি নিয়ে কারোর সাথে যোগাযোগ করতে না পারে সে জন্য ছিনিয়ে নেয়া হয় জ্যোতির হাতে থাকা মোবাইল সেট। অভিযোগ রয়েছে ওই রাতে জ্যোতিকেও শারীরিক লাঞ্চিত করার। যদিও বিষয়টি নিয়ে জ্যোতির সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
আইএইচটি’র কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন, আমেনাকে ‘র‌্যাগিংকারী উৎশৃঙ্খল শিক্ষার্থীদের উসকে দিয়েছে ছাত্রলীগ নামধারী কয়েকজন ছাত্র। এরা হলেন- বিভিন্ন অনুষদের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী রাহাত, অপূর্ব, হাসিব ও সুব্রতসহ বেশ কয়েকজন। এরা র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় অভিযুক্তদের রক্ষা করতে আমেনার চরিত্র নিয়েও বদনাম ছড়াচ্ছে। আমেনার বিরুদ্ধে মানববন্ধনের পরিকল্পনাও করেছে তারা। এমনকি গতকাল রোববার যেসব সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে যান তাদের কাছেও আমাদের চরিত্র সম্পর্কে মিথ্যাচার করে বক্তব্য দেয় অভিযুক্ত ছাত্রীরা। ফলে আমেনাকে র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচার নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে।
তারা বলেন, ছাত্রলীগ নামধারী কয়েকজন ছাত্র টাকার বিনিময়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের পক্ষে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের চেষ্টা করায়। অবশ্য এর সব কিছুর মুলে হোস্টেল সুপার এবং সহকারী সুপারের ইন্দন রয়েছে বলেও অভিযোগ অনেকের। এর কারন উল্লেখ করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী হোস্টেল সুপার ও সহকারী সুপারের হোস্টেলে থাকতে হবে। কিন্তু এরা কেউ নিয়মিত হোস্টেলে থাকাতো দুরের কথা ভিজিটেও যান না। সেই সুযোগেই আমেনাসহ অসংখ্য জুনিয়র ছাত্রী প্রতিনিয়ত র‌্যাগিংয়ের শিকার হচ্ছে। এমনকি আমেনার ঘটনার একদিনের পরে জ্যোতিকে র‌্যাগিংয়ের ঘটনাটিও ঘটেছে তাদের অনুপস্থিতিতেই। সঠিক তদন্তে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের ফেসে যাওয়ার পাশাপাশি দায়িত্ব অবহেলার কারনে ফেসে যেতে পারেন হোস্টেল সুপার এবং সহকারী সুপার। এ কারনেই র‌্যাগিংয়ের ঘটনা ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে পেছনে থেকে তারাই ইন্দন যোগাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে হোস্টেল সুপার এবং সহকারী সুপারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য, র‌্যাগিংয়ের প্রতিবাদ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় আইএইচটি ছাত্রী হোস্টেলে পুনরায় র‌্যাগিংসহ শারীরিকভাবে লাঞ্চিত হন ফিজিওথেরাপী অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী আমেনা আক্তার। এজন্য রাগে ঘৃনায় মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ সেবন করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে আমেনা। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT