2:51 pm , October 17, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ম্যাজিস্ট্রেটের বিকল হওয়া গাড়ি মেরামতের জন্য মিস্ত্রি না পাঠানোয় গ্যারেজের বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ মিটার নিয়ে গেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এই ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অবিরাম ধর্মঘট শুরু করেছেন ওয়ার্কসপ মালিক এবং শ্রমিকরা। পাশাপাশি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর সদর রোডস্থ অশ্বিনী কুমার টাইন হলের সামনে মানববন্ধন ও পরবর্তীতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।
ওয়ার্কসপ মালিক সমিতির সভাপতি নির্মল চন্দ্র দাস জানান, বুধবার দুপুরে বিদ্যুৎ বিভাগের জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মাসুদুর রহমান’র গাড়ি চালক সোহেল আমায় ফোন দিয়ে জানান যে পটুয়াখালী শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে ম্যাজিষ্ট্রেট’র গাড়ি বিকল হয়েছে। সে বরিশাল থেকে একজন মিস্ত্রি পাঠাতে বলে। কিন্তু পূজা’র ছুটি শেষে সকল মিস্ত্রি না আসায় এবং বরিশাল থেকে ঘটনাস্থল প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় মিস্ত্রি পাঠানো যাবেনা বলে জানাই। এর ২৫/৩০ মিনিট পরেই বিদ্যুৎ অফিস থেকে একজন সহকারী প্রকৌশলীর নেতৃত্বে কয়েকজন লোক এসে কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই গ্যারেজের বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করে তারসহ দুটি মিটার নিয়ে যায়। আমি জিজ্ঞেস করলে আমাকে বলা হয় ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবের সাথে দেখা করেন।’ নির্মল চন্দ্র দাস আরো বলেন, ‘আমার গ্যারেজে বহু বছর ধরে বিদ্যুৎ বিভাগের গাড়ি মেরামতে কাজ চলে। বিদ্যুৎ বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা এখানে প্রতিনিয়ত-ই আসেন। এতো বছরেও তারা কেউ দেখলেন না বিদ্যুৎ চুরি, আর আজই সেটা ধরা পড়লো ? প্রতি মাসে মিটার রিডার এসে মিটারের রিডিং নিয়ে যায়। তার চোখেও কিছু ধরা পড়লো না ? মিস্ত্রি পাঠাইনি বলে ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেব তার ক্ষমতা দেখিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমার বিদ্যুতের লাইন কেটে দিয়েছেন। যারা লাইন কাটতে আসলো তারা পর্যন্ত বলতে পারেনি যে কি কারনে লাইন কাটা হচ্ছে।’ বিষয়টি সর্ম্পকে জানতে যোগাযোগ করা হলে বিদ্যুৎ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী জুয়েল রানা বলেন, ‘নির্বাহী প্রকৌশলী স্যারের নির্দেশে সেখানে গিয়ে লাইন কেটে তার এবং মিটার নিয়ে এসেছি। এ বিষয়ে তিনি ভালো বলতে পারবেন।’ নির্বাহী প্রকৌশলী আমজাদ হোসাইন বলেন, ‘ওই গ্যারেজে মিটার বাইপাস করে বিদ্যুৎ চুরি করা হচ্ছিল। যা বুধবার সকালেই ধরা পড়ে। যে কারনে তারসহ মিটার খুলে আনা হয়েছে। ম্যাজিষ্ট্রেট’র সাথে কি হয়েছে বা না হয়েছে তা আমার জানা নেই। বিষয়টি সর্ম্পকে জানতে বিদ্যুত বিভাগের ম্যাজিষ্ট্রেট মাসুদুর রহমান’র ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
বরিশাল গ্যারেজ এবং ওয়ার্কসপ মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক কামাল চৌধুরী বলেন, ‘ক্ষমতার অপব্যাবহারের এমন নমুনা এর আগে আর কখনো দেখিনি। পটুয়াখালী শহরে অনেক গ্যারেজ আছে। কিন্তু তারপরও ৫০ কিলোমিটার দুরের বরিশাল থেকে গাড়ি মেরামতে মিস্ত্রি না পাঠানোয় এভাবে বিদ্যুতের লাইন কেটে দেয়া সম্পুর্ন বে আইনী।
আর তাই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের বেইনী কর্মকান্ডের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে নগরীর সকল গাড়ি মেরামতের গ্যারেজ এবং ওয়ার্কসপ বন্ধ রেখে ধর্মঘট, মানববন্ধন করা হচ্ছে। পাশাপাশি ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মরকলিপি প্রদান করা হয়েছে।