কীর্তনখোলা দখলমুক্ত করতে মাঠে নামছে বিআইডব্লিউটিএ কীর্তনখোলা দখলমুক্ত করতে মাঠে নামছে বিআইডব্লিউটিএ - ajkerparibartan.com
কীর্তনখোলা দখলমুক্ত করতে মাঠে নামছে বিআইডব্লিউটিএ

2:49 pm , October 2, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ কীর্তনখোলা নদী দখল মুক্ত করতে মাঠে নামছে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। এর অংশ হিসেবে আগামী সপ্তাহের প্রথম দিকেই মাঠ পর্যায়ে নদীর সীমানা নির্ধারণ কার্যক্রম শুরু করবে তারা। এরপর শুরু হবে উচ্ছেদ অভিযান। ভাঙা হবে পাঁচ শতাধীক অবৈধ স্থাপনা। তবে নতুন মাঠ জরিপে অবৈধ স্থাপনার সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ’র বরিশাল বন্দর কর্মকর্তা মো. আজমল হুদা মিঠু সরকার। জানাগেছে, ‘বরিশাল নদী বন্দরের অধীভুক্ত ৩৬ দশমিক ৩০ একর ফোরশোর (তীরভূমি) জমি রয়েছে। যার মধ্যে নদী বন্দরের উত্তরে আমানতগঞ্জ খাল হতে রূপাতলী সিএসডি গোডাউনের দক্ষিণ তীরে প্রাবহিত খালের দক্ষিণ প্রান্ত পর্যন্ত প্রায় ৩ দশমিক ৫৭ কিলোমিটার জমি। যার বিআইডব্লিউটিএ’র বেশিরভাগ জমিই বেদখল হয়ে আছে দীর্ঘ দিন ধরে। যেখানে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, আবাসস্থল ও বিভিন্ন স্থাপনা। তাছাড়া কিছু অংশ লিজ নিয়ে ব্যবহার বা বানিজ্যিকভাবে ভাড়া দিচ্ছেন জেলা প্রশাসন ও সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ।
তবে বছরের পর বছর ধরে অবৈধ দখলদারদের তালিকা দীর্ঘ হলেও উচ্ছেদের জন্য নেয়া হচ্ছে না প্রয়োজনীয় কোন ব্যবস্থা। শুধুমাত্র বছর বছর তালিকা করেই সীমাবদ্ধ থেকে যায় বন্দর কর্তৃপক্ষ। এমনকি বর্তমান সময়ে দেশব্যাপী নদী ও খাল উদ্ধারে সরকার কঠোর অবস্থানে গেলেও রহস্যজনক কারনে নিরব বরিশাল নদী বন্দর এবং সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।
সরেজমিনে দেখাগেছে, নদী বন্দর এলাকাতেই অবৈধ দখলদারের সংখ্যা বেশি। বালু ঘাটে বহুতল আবাসিক হোটেল ভবন, রসুলপুর চর কলোনী, লঞ্চঘাট সংলগ্নে নদী বন্দরের তীরভূমি দখল হয়ে আছে বহু বছর আগেই। কিন্তু এগুলো উচ্ছেদের উদ্যোগ দৃশ্যমান হয়নি আদৌ।
নৌ বন্দর সূত্রে জানাগেছে, ‘বন্দরের দায়িত্বে থাকা সাবেক যুগ্ম পরিচালক দুই দফা অবৈধ স্থাপনার তালিকা করেছিলেন। প্রথম তালিকায় উঠে আসে আড়াইশ’র বেশি অবৈধ স্থাপনা। সর্বশেষ ২০১৬ সালে অবৈধ দখলদারদের আরেকটি তালিকা তৈরী করা হয়। সেই তালিকা অনুযায়ী বর্তমানে অবৈধ স্থাপনার সংখ্যা ৫১৭টি। তবে এ পরিসংখ্যান সঠিক নয় বলে মনে করছেন নদী বন্দরের বর্তমান কর্তৃপক্ষ।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, চলতি বছরের গত ৬ মার্চ বরিশাল জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠন করে দেয়া হয়। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্বা) কে আহ্বায়ক করে এই কমিটিতে সিটি কর্পোরেশন, সহকারী কমিশনার (ভূমি), পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিআইডব্লিউটিএ, নদী বন্দর কর্তৃপক্ষ, পরিবেশ অধিদপ্তর ও সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার বা তাদের প্রতিনিধিদের সদস্য করা হয়েছিলো। এই কমিটি নদী-নদী ও খাল যৌথ সার্ভের মাধ্যমে সীমানা নির্ধারণ, অবৈধ দখলদারদের তালিকা তৈরী ও অবৈধ দখল উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনার কথা। কিন্তু গত প্রায় ৬ মাসেও ওই কমিটির অগ্রগতি দৃশ্যমান হয়নি। ফলে অবৈধ দখলদাররা রয়েছে বহাল তবিয়তে।
বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ম পরিচালক ও বন্দর কর্মকর্তা আজমল হুদা মিঠু সরকার জানান, ‘২০১৬ সালে যে তালিকাটি হয়েছে সেটা অসম্পন্ন। যে কারনে তালিকায় থাকা অবৈধ স্থাপনা পরিপূর্ণভাবে উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি। নদীর সীমানা যথাযথভাবে নির্ধারণ না করেই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনার কারনে ওই তালিকা টেকসই হয়নি।
নতুন করে বরিশাল নদী বন্দরের নিয়ন্ত্রণাধীন ফোরশোর ভূমির অবৈধস্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রমে হাত দিয়েছি। এজন্য সবার আগে ফোরশোর ভূমির পুনঃজরিপ করা হবে। যা আগামী সপ্তাহে শুরু করা হবে। খুব সল্প সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করে অবৈধ স্থাপনার তালিকা প্রস্তুত করে নৌ পরিবহন অধিদপ্তরে প্রেরন করা হবে। তাছাড়া জরিপ শেষ করে নদী বন্দর এলাকায় স্থায়ী সীমানা পিলার স্থাপন করা হবে। তার পরে হবে উচ্ছেদ অভিযান।
অপরদিকে বরিশাল জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, নদী দখলমুক্ত এবং অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে কর্মপরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে। তাছাড়া উচ্ছেদ অভিযানের জন্য আর্থিক বরাদ্দ এবং জনবলের প্রয়োজন রয়েছে। যা বিআইডব্লিটিএ’র নেই। সে জন্য বিআইডব্লিউটিএ একটি বাজেট ঢাকায় প্রেরণ করেছে। ওই বাজেট অনুমোদন হলে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে। তবে তার আগেই জমির সীমনা নির্ধারনে জরিপ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT