কলাপাড়ায় ১৩ বছর পূর্বে এসিডে ঝলসে দেয়ার বিচার চেয়ে সাংবাদিক সম্মেলন কলাপাড়ায় ১৩ বছর পূর্বে এসিডে ঝলসে দেয়ার বিচার চেয়ে সাংবাদিক সম্মেলন - ajkerparibartan.com
কলাপাড়ায় ১৩ বছর পূর্বে এসিডে ঝলসে দেয়ার বিচার চেয়ে সাংবাদিক সম্মেলন

3:11 pm , September 30, 2019

কলাপাড়া প্রতিবেদক ॥ নানী গোলভানু এবং চার বছরের শিশু মো. মাছুম ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় ১৩ বছর আগে দুজনকেই এসিডে ঝলসে দেয় দূর্বৃত্তরা। ঘটনাটি ঘটেছিলো পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের আক্কেলপুর গ্রামে ২০০৬ সালে। সেই সময়ের শিশু আজ ১৭ বছরের যুবক। এসিডে দগ্ধ শরীর নিয়েই ঘটনার ছয় বছর পর মৃত্যুবরণ করেন নানী গোলভানু। নানী ও নাতীকে এসিডে ঝলসে দেওয়ার ঘটনায় চিহ্নিত দূর্বৃত্তদের অব্যাহত হুমকিতে দীর্ঘ বছরেও কলাপাড়ায় থানায় মামলা করতে পারেনি এসিডে ঝলসানো মাছুমের মা বিধবা নিলুফা বেগম। আইনী সহায়তা এবং দূর্বৃত্তদের বিচারের দাবিতে গতকাল সোমবার কলাপাড়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে দাবি করেন নিলুফা বেগম। নিলুফা বেগম আরো জানায়, পাঁচ সন্তান নিয়ে স্বামীর ভিটা ছেড়ে তাকে পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে সাড়ে ১৩ বছর। অবশেষে এসিডে নানী ও শিশু পুত্রকে ঝলসানো ঘটনার বিচার চেয়ে এবছরের গত ২৩ সেপ্টেম্বর কলাপাড়া থানায় মামলা রুজু করার পর আবারও জীবননাশের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন নিলুফা বেগম।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো জানায়, স্বামী মৃতঃ কাদের ফকিরের রেখে যাওয়া ভিটাও এখন বেদখল হয়ে গেছে তার। জীবনের শেষলগ্নে এসে স্বামীর ভিটা রক্ষা ও সন্তান ও মায়ের উপর এসিড নিক্ষেপের বিচার দেখে যাওয়ার ইচ্ছা। নিলুফা বেগমের পক্ষে বোনের মেয়ে মোসাঃ মরিয়ম লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ২০০৬ সালের ১ মার্চ রাতে ঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় চার বছরের শিশু মাছুম ও তার মা গোলভানুর উপর এসিড নিক্ষেপ করে। পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী জাহাঙ্গীর হাওলাদার, সেলিম হাওলাদার, আঃ আজিজ শরীফ, হাবিব ফকির, আঃ মজিদ শরীফ ও খালেক পাহোলান এ এসিড নিক্ষেপের সাথে জড়িত। শুধু তাই না, শিশু সন্তান ও মায়ের চিকিৎসার জন্য সে যখন হাসপাতালে, তখন এই সুযোগে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের ঘর থেকে নামিয়ে দেয়। লুট করে নিয়ে যায় ঘরের মালামাল। কেটে ফেলে বাড়ির চারপাশে রোপন করা বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। লুট করে নেয় পুকুরের মাছ। এসিড নিক্ষেপকারীদের অব্যাহত হুমকিতে দীর্ঘ বছর পাঁচসন্তান নিয়ে ঘর ছাড়া থাকায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন নি।
নিলুফা বেগম বলেন, ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের নিয়ে ঢাকায় গিয়ে কাজ করেছেন। ইট ভেঙ্গেছেন। মহিপুরে জেলেদের মাছ বাছাইয়ের কাজ করেছেন তাদের থেকে পালিয়ে। ছেলেরা একটু বড় হওয়ায় তারা কেউ রাজমিস্ত্রী, কেউ রিক্সা চালিয়ে
দিনানিপাত করছেন। ভয় উপেক্ষা করে জীবনের শেষলগ্নে স্বামীর ভিটায় গিয়ে দেখি তা দখল করে হাজীপুরের খালেক পাহলান ঘর তুলেছে। নিজের অধিকার আদায়ে বাড়ির এক কোনে পুকুরের পাশে ছোট্র একটি ঘর তুলে বসবাস শুরু করলেও এখন রয়েছেন হুমকিতে।
তিনি বলেন, মৃত্যুর হুমকি উপেক্ষা করে গত ১৭ সেপ্টেম্বর কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে আদালত কলাপাড়া থানার ওসিকে মামলাটি এফআইআর হিসেবে নেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। গত ২৩ সেপ্টেম্বর কলাপাড়া থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। এ মামলা দায়েরের পরই তাকে আবার হুমকি দিচ্ছেন মামলার আসামীরা। এঘটনায় ২৯ সেপ্টেম্বর কলাপাড়া থানায় ১০ জনের বিরুদ্ধে জিডি করেন। বর্তমানে তিনি ও তার সন্তানরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এজন্য তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামরা করছেন। এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কলাপাড়া থানার ওসি (তদন্ত) মো. আসাদুর রহমান বলেন, যেহেতু দীর্ঘ বছর আগের একটি স্পর্শকাতর মামলা। আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। ঘটনা যদি সত্যি হয় তাহলে জড়িত সকলকেই আইনের আওতায় আনা হবে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT