3:03 pm , September 27, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দক্ষিণাঞ্চলে জঙ্গি দমনে তৎপর র্যাব-৮। তাদের সতর্ক অবস্থানের কারনে এ অঞ্চল থেকে পুরোপুরি নিস্ক্রিয় হয়েছে নিষিদ্ধ এই সংগঠনের কার্যক্রম। এরই মধ্যে র্যাবের তৎপরতায় গ্রেফতার হচ্ছে জঙ্গি সংগঠনের একের পর এক সক্রিয় সদস্য। সর্বশেষ গত ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে দু’জন জেএমবি সদস্যকে। আর গত দু’বছরে ১৭ জন জেএমবি সদস্যকে গ্রেফতার করেছে তারা। যাদের মধ্যে রয়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত আনসার উল্লাহ টিমের সদস্যও। র্যাব-৮ এর উপ-অধিনায়ক মেজর খান সজিবুল ইসলাম এই তথ্য জানিয়েছেন।
জানাগেছে, দক্ষিণাঞ্চলে জঙ্গি, সন্ত্রাস, মাদক ও নারী-শিশু নির্যাতনসহ সকল ধরনের অপরাধ দমনে কাজ করছে র্যাব-৮। বিশেষ করে তাদের তৎপরতায় অনেকটাই জলদস্যু এবং বনদস্যু শূণ্য হয়ে পড়েছে সুন্দরবন। বন্দুকযুদ্ধে জলদস্যু এবং বনদস্যু নিহত হওয়া ছাড়াও এ যাবৎ আত্মসমর্পন করেছে একাধিক দস্যু বাহিনী। এদিকে জলদস্যুর ন্যায়, দক্ষিণাঞ্চলে জঙ্গি দমনেও বেশ তৎপর র্যাব-৮। তাদের তৎপরতার কারনে জঙ্গি দমনে বেশ সফলতাও এসেছে এরই মধ্যে। যে কারনে কোন প্রকার মাথাচাড়া দেয়ার সুযোগ পাচ্ছে না জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা। নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করতে গিয়ে ধরা পড়ে যাচ্ছে র্যাবের ফাঁদে। র্যাব-৮ এর দেয়া তথ্য অনুযায়ী জঙ্গি বিরোধী অভিযোগে তাদের সর্বশেষ সফলতা ছিলো ঢাকা থেকে দুই জেএমবি সদস্যকে গ্রেফতার। ধানমন্ডি ও খিলগাঁও এলাকা থেকে মো. আব্দুল্লাহ শরীফ (৩২) ও জাকির হোসেন (৩১) নামের দুই সক্রিয় জেএমবি সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৮। এদের মধ্যে আব্দুল্লাহ ফরিদপুরের নগরকান্দা থানাধীন জুঙ্গুরদী গ্রামের মৃত ফিরোজ শরীফের ছেলে এবং জাকির হোসেন বরিশালের হিজলা উপজেলার হরিনাথপুর গ্রামের আব্দুল মালেক হাওলাদারের ছেলে।
র্যাব জানিয়েছে, ‘বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের জঙ্গী/উগ্রপন্থী গোষ্ঠী সমূহ আগের মত শক্তিশালী না থাকলেও গোপনে তারা যাতে পুনরায় সংগঠিত না হতে পারে সে জন্য এলিট ফোর্স র্যাব-৮ জাগ্রত। তারা তাদের শক্তিশালী এবং চৌকষ গোয়েন্দাদের সহযোগিতায় একের পর এক জঙ্গি বা উগ্রপন্থীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে সক্ষম হচ্ছে।
অপরদিকে বরিশাল আদালত সূত্রে জানাগেছে, ‘র্যাবের হাতে গ্রেফতারকৃত জেএমবি সদস্যরা আদালতের কাছে স্বীকারক্তি দিচ্ছে। তারা জঙ্গি কার্যক্রমে সক্রিয় থাকার বিষয়টি স্বীকার করছে। পরে তাদের কারাগারে প্রেরণ করছেন বিচারক। র্যাব-৮ এর উপ-অধিনায়ক মেজর খান সজিবুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘জঙ্গি এবং উগ্রপন্থী শুধু র্যাব বা প্রশাসনের একার সমস্যা নয়, এটা গোটা জাতির সমস্যা। তাই জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে র্যাব-৮ সবসময় তৎপর। জঙ্গিরা যাতে পূর্বের ন্যায় সংগঠিত না হতে পারে সে বিষয়ে আমাদের সজাগ দৃষ্টি রয়েছে। র্যাব-৮ এর চলমান জঙ্গি ও সন্ত্রাস বিরোধী তৎপরতায় গত দুই বছরে জেএমবি’র ১৭ জন সক্রিয় সদস্য গ্রেফতার হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সংগঠিত নয়, বরং জেএমবি সদস্যরা নিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করছে। যারা গ্রেফতার হচ্ছে তাদের সন্দেহ হলেই গ্রেফতার করা হচ্ছে না। বরং আমরা তাদের দীর্ঘ সময় ধরে পর্যবেক্ষন এবং গোয়েন্দা নজরদারীতে রাখছি। যখন মনে হচ্ছে সন্দিগ্ধ ব্যক্তি সত্যিকারের জেএমবি সদস্য তখনই তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘আমরা আমাদের কার্যক্রম চালাতে গিয়ে যতটুকু লক্ষ্য করতে পেরেছি তাতে এখন পর্যন্ত যেসব জঙ্গি বা উগ্রপন্থি গ্রেফতার হয়েছে তার মধ্যে বরগুনা ও ভোলা জেলার বাসিন্দাই বেশি। সর্বোপরি জঙ্গি ও উগ্রবাদ দমনে র্যাব-৮ এর তৎপরতা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন র্যাব-৮ এর ওই কর্মকর্তা।