2:44 pm , September 25, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ নগরীর প্রাণকেন্দ্র সদর রোডসহ শহরের অভ্যন্তরে আদালত থেকে নিষিদ্ধ ব্যাটারি চালিত রিক্সা ও হলুদ রং এর ইজিবাইক (অটো) চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। আগামী ১ অক্টোবর থেকে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে প্রবেশ করতে পারবে না এসব ব্যাটারি চালিক রিক্সা ও ইজিবাইক। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়ে গতকাল বুধবার সকাল থেকেই মহানগরীতে মাইকিং এর মাধ্যমে প্রচারাভিযান চালাচ্ছে ট্রাফিক বিভাগ।
এদিকে শুধুমাত্র শহরের মধ্যেই নয়, হাইকোর্ট থেকে নিষিদ্ধ হওয়া এসব অবৈধ যান নাগরিকদের ভোগান্তি লাঘব এবং দুর্ঘটনা ও যানজট মুক্ত নিরাপদ সড়ক গড়ে তোলার লক্ষে পর্যায়ক্রমে গোটা মহানগরীতে চলাচল বন্ধ করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন নগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার খায়রুল আলম। তিনি জানান, ‘আগে থেকেই হলুদ অটো এবং ব্যাটারি চালিত রিক্সা চলাচলের বিষয়ে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা ছিলো। সে অনুযায়ী ইতিপূর্বে শহরের মধ্যে অটোরিক্সা চলাচল বন্ধ করে দেয় হয়। পরবর্তীতে এগুলো স্থায়ীভাবে বন্ধের উদ্যোগ গ্রহনের প্রাক্কালে বরিশাল সিটি মেয়র এর নির্দেশে ইজিবাইক (হলুদ) অটোর চলাচল পুনরায় স্বাভাবিক হয়। উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘গণহারে অবৈধ অটোরিক্সা চলাচলের কারণে নগরীর প্রাণকেন্দ্র সদর রোড এলাকায় যানজট বেড়ে যায়। সীমাহীন ভোগান্তির পাশাপাশি দুর্ঘনটায় হতাহতের ঘটনাও ঘটতে থাকে। ফলে বিষয়টি নিয়ে অনেক দিন ধরেই নাগরিকদের মধ্যে ভিন্ন প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। তাই ব্যাটারি চালিত অবৈধ রিক্সা ও ইজিবাইক বন্ধের দাবি তোলেন নগরবাসি। এর প্রেক্ষিতে সিটি কর্পোরেশন ও নগর ট্রাফিক বিভাগ অবৈধ ইজিবাইক ও ব্যাটারিক্সা চলাচল বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যা আগামী ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে। প্রথম ধাপে ওইদিন সকাল থেকে জিলা স্কুল মোড় থেকে জেলখানার মোড়, কাকলীর মোড় ফজলুল হক এভিনিউ সড়ক হয়ে সিটি কর্পোরেশনের ও সেটেলমেন্ট অফিস মোড়, ডাচবাংলা ব্যাংকের মোড় থেকে হেমায়েত উদ্দিন (গির্জামহল্লা) হয়ে ফলপট্টি মোড়, ভাটারখাল ক্রসিং থেকে ডিসি অফিস গেট, সিটি কর্পোরেশনের নগর ভবনের সামনে থেকে ফলপট্টি মোড় হয়ে চকেরপুল পর্যন্ত হলুদ ইজিবাইক ও ব্যাটারির রিক্সা চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে।
তিনি বলেন, দ্বিতীয় ধাপে এসব অবৈধ ব্যাটারি চালিক যান গোটা মহানগরী এলাকায় চলাচল বন্ধ করে দেয়া হবে। তবে নতুন করে কোন যান চলাচলের সিদ্ধান্ত হয়নি। পরবর্তী মেট্রো আরটিসি’র সভায় সিটি মেয়র এবং পুলিশ কমিশনার মহোদয়ের দিক নির্দেশনা অনুযায়ী বৈধ এবং পরিবেশ সম্মত যানবাহন চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে ট্রাফিক বিভাগের এই উর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, প্রায় এক যুগ পূর্বে নগরীতে চলাচল শুরু করে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক। ওই সময় সিটি কর্পোরেশন থেকে এই ইজিবাইক চলাচলে বৈধতা দেয়া হয়। সেই সাথে প্রদান করা হয় লাইসেন্স। বিসিসি’র দ্বিতীয় পরিষদের মেয়র প্রায়ত শওকত হোসেন হিরন প্রথম দফায় ১৬শ অটোরিক্সার লাইসেন্স প্রদান করেন। তার মধ্যেই উচ্চ আদালত থেকে অটোরিক্সা নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়। সেই নিষেধাজ্ঞার মধ্যে চলে অটোরিক্সা। তাছাড়া তৃতীয় পরিষদের মেয়র আহসান হাবিব কামাল দায়িত্ব গ্রহনের পরে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে লাইসেন্স প্রদান করলে অটোরিক্সার সংখ্যা বেড়ে দাড়ায় ২ হাজার ৬১৬টি। তার সাথে চলাচল করে অনুমোদন বিহিন আরো প্রায় চার হাজার ইজিবাক। ফলে নগর জুড়ে সিমাহিন যানজট সৃষ্টি হয়। এর পাশাপাশি ট্রাফিক বিভাগকের কতিপয় কর্মকর্তা ও শ্রমিক নামধারী নেতারা অটোরিক্সা নিয়ে বীট বানিজ্যে মেতে ওঠে। এ নিয়ে আজকের পরিবর্তনে একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে টনক নড়ে ট্রাফিক বিভাগ এবং নগর কর্তৃপক্ষের। এর প্রেক্ষিতে তারা অটোরিক্সা বন্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন।