2:42 pm , September 23, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ টাকার বিনিময়ে সেনাবাহিনীতে চাকুরি দেয়ার কথা বলে প্রতারণাকালে সাইফুল ইসলাম (২৫) নামের এক ভূয়া মেজরকে আটক করেছে র্যাব-৮ সদস্যরা। এ সময় তার সাথে থাকা ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী’ লেখা সাদা রংয়ের একটি প্রাইভেট কার উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা ১২টার দিকে নগরীর চৌমাথা লেক সংলগ্ন এলাকা থেকে স্থানীয়রা তাকে আটক করে র্যাবের হাতে সোপর্দ করে। তবে কৌশলে পালিয়ে গেছে ভুয়া মেজরের সাথে থাকা প্রাইভেট কারের চালক। আটককৃত সাইফুল ইসলাম বানারীপাড়া উপজেলার বিশারকান্দি ইউনিয়নের কুমারের পাড় এলাকার নুরুজ্জামান হাওলাদারের ছেলে বলে দাবি করেছে। এর আগে গত বছরের ২৮ অক্টোবর বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভূয়া চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে রোগীর সেবা করতে গিয়ে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশের হাতে আটক হয়েছিলো। ভুক্তভোগী নগরীর চৌমাথা এলাকার ডিআর মটরস এন্ড কার ডেকোরেশনের মালিক মো. ইশতিয়াক তুহিন জানান, সাইফুল প্রায়ই তার প্রাইভেট কার ডেকরেশনের মালামাল কিনতে আসতো। সেই সুযোগে তার ও পরিবার সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতো। এক পর্যায় তিনি নিজেকে সেনাবাহিনীর মেজর পরিচয় দিয়ে ইশতিয়াক তুহিনের ছোট ভাইকে চার লাখ টাকার বিনিময়ে সেনাবাহিনীতে চাকুরি পাইয়ে দেয়ার প্রস্তাব দেয়। এতে রাজি হয়ে যায় ইশতিয়াক ও তার বাবা। সে অনুযায়ী সোমবার তুহিনের ভাই’র বায়োডাটা ও নগদ ৫০ হাজার টাকা নিতে পুনরায় ডিআর মটরস এন্ড কার ডেকোরেশন নামক প্রতিষ্ঠানে আসে। তুহিন বলেন, ‘ওই ব্যক্তি নিজেকে সেনাবাহিনীর লোক পরিচয় দিলেও তার আচরণ এবং ভাব-ভঙ্গি সন্দেহজনক মনে হয়। কেননা তিনি কখনো নিজেকে সেনাবাহিনীর মেজর আবার কখনো চিকিৎসক পরিচয় দেয়। ফলে সাইফুলের বিষয়টি র্যাব-৮ কে অবহিত করেন তারা। পরে র্যাব সদস্যা ঘটনাস্থলে পৌছে ভূয়া মেজর সাইফুল ইসলামকে আটক ও তার ব্যবহৃত প্রাইভেটক কারটি জব্দ করে র্যাব-৮ সদর দপ্তরে নিয়ে যায়। তবে সাইফুলকে আটকের সময় ঘটনাস্থলে থাকা র্যাব কর্মকর্তা এ বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি। পরবর্তীতে এই বিষয়ে সাংবাদিকদের জানাবেন বলেও তারা জানিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, সাইফুল ইসলাম নামের ওই প্রতারক বিগত ২-৩ বছর ধরে নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে সহজ সরল মানুষের সাথে প্রতারনা করে আসছিলো। সে শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রোগীদের ফাঁদে ফেলে সে রোগী ও তাদের স্বজনদের টাকা হাতিয়ে নেয়। এছাড়া দুই বছর পূর্বে শেবাচিম হাসপাতালের চিকিৎসক পরিচয় দেয় প্রতারক সাইফুল। তখন হাসপাতালের কর্মচারী আব্দুর রশিদের কাছ থেকে তার ছেলেকে চাকুরি দেয়ার কথা বলে এক লাখ ৫ হাজার টাকা নিয়ে উধাও হয়। সর্বশেষ গত বছরের ২৮ অক্টোবর সাইফুল তার গলার সাথে স্টেথোস্কোপ ঝুলিয়ে হাসপাতালের ক্যান্সার বিভাগের সামনে ঘোরাফেরা করে। তখন কর্মচারী আব্দুর রশিদ তাকে চিনে ফেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাহায্যে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।