3:03 pm , September 20, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ টানা ৫টি মাস অতিক্রম করল সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের বুখাইনগর রাজধর গ্রামের দলিল লেখক রেজাউল করিম রিয়াজ হত্যার ঘটনা। কিন্তু এখন ধরা পড়েনি রিয়াজের মুল ঘাতক মাসুম হাওলাদার। এরই মধ্যে নানা অভিযোগে প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তাকে মামলার দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে। নতুন তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত’র দু’মাস হয়ে গেলেও ঘাতক মাসুমের কাছে পৌছতে পারেনি পুলিশ। ফলে আবারও প্রশ্ন উঠেছে মামলার তদন্ত ও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। জানাগেছে, ‘চলতি বছরের গত ১৮ এপ্রিল দিবাগত রাতে নিজ ঘরে জবাই করে হত্যা করা হয় রাজধর গ্রামের রেজাউল করিম রিয়াজকে। এই ঘটনায় তার স্ত্রী আমিনা আক্তার লিজাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এমনকি জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকারের পাশাপাশি ঘটনার পরিকল্পনা ও রহস্যও প্রকাশ করে লিজা। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী রিয়াজ হত্যাকান্ডের পেছনে মুল পরিকল্পনাকারী লিজার পরকিয়া প্রেমিক আলতাফ হোসেন দফাদারের ছেলে মাসুম হোসেন ও হাইল্লা নামে পরিচিত ইদ্রিস।
এদিকে ঘটনার রহস্য উদঘাটনে পুলিশের সফলতা আসলেও তদন্ত কর্মকর্তা’র অদক্ষতার কারণে মুল পরিকল্পনাকারী মাসুমকে গ্রেফতারে ব্যর্থ হন তারা। যদিও মামলার তদন্ত কার্যক্রম নিয়ে শুরু থেকেই তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ ওঠে। বিশেষ করে আসামী পক্ষের সাথে গোপন সক্ষতা গড়ে তুলে অবৈধ অর্থের লেনদেনের অভিযোগ ওঠে সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা এসআই বশিরের বিরুদ্ধে। যা নিয়ে আজকের পরিবর্তনে একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর প্রেক্ষিতে এসআই বশিরকে তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার পরবর্তী অপর চৌকশ তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ফিরোজ আল মামুনকে দায়িত্ব দেয়া হয়।
তিনি দায়িত্ব গ্রহনের মাত্র ক’দিনের মাথায় নিহত রিয়াজের মোবাইল ফোন উদ্ধারের পাশাপাশি মাসুমের সহযোগী ইদ্রিসকে গ্রেফতার করে। রিমান্ডে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এতে কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য উদঘাটন হয়েছে বলেও দাবী পুলিশের। তবে এখনো হত্যার মুল পরিকল্পনাকারী মাসুমের কাছে পৌছতে পারেনি কোতয়ালী পুলিশ। এমনকি মামলার চার্জশিট কবে হবে সে নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
যদিও বাদী পক্ষ অভিযোগ তুলেছেন নিহত রিয়াজের অর্থ-সম্পদ নিয়ে গোপন মিশনের। যে মিশনে পুলিশের কোন এক কর্মকর্তার গোপন সক্ষতা রয়েছে বলেও মনে করেন তারা। মামলার বাদী এবং নিহতের ভাই রিপন জানান, নতুন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ফিরোজ আল মামুন দায়িত্ব নেয়ার পরে মামলার অনেকটা অগ্রগতি হয়। কিন্তু হঠাৎ করেই সেই অগ্রগতি থেমে গেছে। যদিও এখনো আসামীকে গ্রেফতারের জোর চেষ্টা চলছে বলে দাবী আই.ও’র।
বাদী রিপন বলেন, রিয়াজের অনেক অর্থ সম্পদ রয়েছে। যা ভাগবাটোয়ারা নিয়ে গোপনে গেম চলছে। আর এই গেমটি খোদ আসামী অর্থাৎ নিহতের স্ত্রী আমিনা আক্তার লিজা খেলছেন। যার পেছনে কাজ করছেন পুলিশের কোন এক কর্মকর্তা। তাছাড়া আসামী পক্ষই কলকাঠি নেড়ে পলাতক আসামীকে ধরাছোয়ার বাইরে রাখছেন।
এ প্রসঙ্গে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এবং উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) এর বক্তব্য জানতে তাদের সরকারি নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তা রিসিভ করেননি। তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ফিরোজ আল মামুন বলেন, ‘পলাতক আসামী মাসুম খুব কৌশল করে চলছে। যে কারনে অনেক কাছে গিয়েও তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে সে পুলিশের রেকির মধ্যেই রয়েছে। খুব দ্রুতই তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আশার বিষয়ে আশাব্যক্ত করেন তিনি।
এসআই মামুন বলেন, ‘এখনো নিহত রিয়াজের ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পুলিশের কাছে এসে পৌছেনি। ফরেনসিক বিভাগ কেন তদন্ত রিপোর্ট আটকে রেখেছেন তা আমার বোধগম্য নয়। তবে বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দেখবেন জানিয়ে ফিরোজ আল মামুন বলেন, আসামী না ধরে এবং ময়না তদন্ত রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত চার্জশিট দেয়া সম্ভব নয়।