3:02 pm , September 20, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ চিকিৎসা অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ তুলে বরিশাল শেরে-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে বিক্ষোভ করেছে স্বজনরা। এসময় তারা হাসপাতালের চিকিৎসকদের খুঁজে না পেয়ে নার্সদের কক্ষের কাগজপত্র তছনছ করেছে। গতকাল শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল সোয়া ৮টা থেকে প্রায় ঘন্টাব্যাপী শেবাচিমের তৃতীয় ও পঞ্চম তলায় এই ঘটনা ঘটে। পরে থানা পুলিশের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, ‘সকাল সোয়া ৮টার দিকে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় মহিলা সার্জনারী ওয়ার্ডে সুলতানা বেগম নামের এক রোগীর মৃত্যু হয়। এর পর পরই স্বজনরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং হট্টগোল বাধিয়ে দেন।
তারা হামলার উদ্দেশ্যে হাসপাতালের পঞ্চম তলায় সার্জারী বিভাগের চিকিৎসকদের রুমে যান। কিন্তু সেখানে কাউকে না পেয়ে রুমের সামনে অবস্থান নিয়ে চিকিৎসকদের বিচার চেয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। পরে সেখান থেকে তৃতীয় তলায় মহিলা সার্জারী ওয়ার্ডে গিয়ে নার্সদের কক্ষে থাকা কাগজপত্র তছনছ করে ফেলে দেন।
মৃত রোগীর স্বজন আব্দুল আজিজ এবং জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ‘গত ২৭ আগস্ট নগরীর হেমায়েত উদ্দিন ডায়াবেটিক হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন সদর উপজেলার চর কাউয়া এলাকার বাসিন্দা বসির খানের স্ত্রী সুলতানা বেগম (৩২)। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার চার-পাঁচ দিনের মাথায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে সুলতানা বেগম। এজন্য তাকে স্থানীয় রেডক্রিসেন্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জানা যায় সিজারিয়ানের সময় চিকিৎসক সিজারিয়ানের সময় পেটের মধ্যে কাচি রেখেই সেলাই করে দেয়। এজন্য অস্ত্রপচারের জন্য গত ১৫ সেপ্টেম্বরসেখান থেকে তাকে শেরে-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের মহিলা (ফিমেল) সার্জারী ইউনিট-৩ এর অধিনে ভর্তি করা হয়। তারা বলেন, ‘গতকাল বৃহস্পতিবারও সুলতানা সুস্থ ছিলো। হাটাচলাও করেছে একা একা। তার মধ্যে হঠাৎ করেই শুক্রবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে সুলতানার মৃত্যু হয়। স্বজনদের অভিযোগ বারবার বলা সত্যেও চিকিৎসক ও সেবিকারা সুলতানার যথাযথ খোঁজ-খবর নেয়নি। এ কারনেই চিকিৎসা অবহেলায় তার মৃত্যু হয়েছে। তাছাড়া মৃত্যুর শেষ মুহুর্তে চিকিৎসকদের খুজতে তাদের রুমে গিয়েও পাওয়া যায়নি। তবে হাসপাতালের সার্জারী বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসকরা দাবী করেছেন সুলতানা নামের রোগীর অবস্থা আগে থেকেই সঙ্কটাপন্ন ছিলো। ইতিপূর্বে তার পেটে তিন বার অস্ত্রপচার হয়েছে। তবে সর্বশেষ তার কি সমস্যা ছিলো সে সম্পর্কে জানাতে অপরাগতা প্রকাশ করেন ডিউটি ডক্টররা। তারা বিষয়টি নিয়ে জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকদের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি হাসপাতাল পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেনও ফোন রিসিভ করেননি। এদিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত কোতয়ালী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহ জালাল বলেন, রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে স্বজনরা বিক্ষুব্ধ হয়। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত থাকার পাশাপাশি স্বজনরা মৃতদেহ নিয়ে চলে গেছে।