ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানী করা প্রথম কয়লার চালান পৌছেছে পায়রা বন্দরে ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানী করা প্রথম কয়লার চালান পৌছেছে পায়রা বন্দরে - ajkerparibartan.com
ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানী করা প্রথম কয়লার চালান পৌছেছে পায়রা বন্দরে

3:10 pm , September 19, 2019

এনইউ সোহাগ, কলাপাড়া ॥ কলাপাড়ায় বিসিপিএল বিদ্যুত কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ২০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে প্রথমবারের মতো এমভি জিন হাই টং-৮ নোঙর করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে হংকংয়ের পতাকাবাহী এ জাহাজটি ইন্দোনেশিয়ার বালিকপানান বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে এক সপ্তাহ পর পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে ভিড়ে। শেষ বিকালের দিকে জাহাজ থেকে কয়লা জেটির সংক্রিয় বেল্টের মাধ্যমে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অভ্যন্তরে পৌছানো শুরু হয়।
পায়রা বন্দরের একটি সূত্র জানায়, পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য প্রথম কয়লাবাহী জাহাজটি ফেয়ার ওয়ে বয়া অতিক্রম করে রাবনাবাদ চ্যানেলে সকাল নয়টায় প্রবেশ করে। এরপর জাহাজটির শুল্কায়নসহ যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ। জার্মানীর ওল্ডেন ড্রাফট কেরিয়ার্স লিমিটেডের মাধ্যমে বাংলাদেশের বেনকন সেটারনস লিমিটেড পোর্ট এজেন্ট হিসেবে এ কয়লা আমদানী করেছে। এ প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ এ মালেক বলেন, আমরাই পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য সব সময় কয়লা আমদানি করবো।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানীর (বিসিপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম খোরশেদুল আলম, প্রকল্প পরিচালক শাহ্ আবদুল মওলা, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ সাইদুর রহমান, চীফ হাইড্রোগ্রাফার লে. কমান্ডার মো. সাইফুল ইসলাম, বিসিপিসিএলের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক চি ইউসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।
পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের ডক মাষ্টার এস এম শরিফুর রহমান কর্তৃক দেয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানা গেছে, পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানী (বিসিপিসিএল) বছরে প্রায় ৪০ লক্ষ মেট্রিক টন কয়লা আমদানী করবে।
পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ সাইদুর রহমান বলেন, আমরা যতদুর জানি বিসিপিসিএল জেটিতে অক্টোবর মাসে ৪টি জাহাজ আসবে। ডিসেম্বর মাসে ৮টি জাহাজ আসবে। মাসে সর্বোচ্চ ২০-২২টি জাহাজ আনতে পারবো। ক্রমান্বয়ে জাহাজের সঙ্গে বাড়তে থাকবে। এর মাধ্যমে আমরা বলতে পারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের পায়রা বন্দরের বাস্তবায়ন শুরু হলো।
তিনি আরও বলেন, পায়রা বন্দরের জন্য সরকারি অর্থায়নে প্রথম টার্মিনাল নির্মাণের কার্যক্রম চলছে। বাংলাদেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রা অত্যন্ত সম্ভাবনাময় একটি বন্দর। অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রকল্প হিসেবে এই বন্দরকে পুর্ণাঙ্গ সুবিধাসহ একটি আধুনিক বন্দর হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কোরিয়ান পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক জেটি, টার্মিনাল, সংযোগ সড়ক এবং আন্ধারমানিক নদের বালিয়াতলী-ইটবাড়িয়া পয়েন্টে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু নির্মাণের কার্যক্রম চলছে। এ ছাড়াও পিপিপি পদ্ধতিতে একটি কয়লা টার্মিনাল নির্মাণের প্রকল্প অনুমোদনের চুড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এই দুটি টার্মিনাল নির্মাণসহ ক্যাপিটাল ড্রেজিং শেষে ২০২২ সাল নাগাদ পায়রা পুর্ণাঙ্গ সমুদ্র বন্দর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রা দিনে দিনে ব্যস্ততম বন্দরের রূপ নিবে। এই বন্দর পুরোপুরি চালু হলে দক্ষিণাঞ্চলসহ সারাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ২০১৬ সালের ১৩ আগষ্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পায়রা বন্দরের মুরিং পয়েন্টে শীপ টু শীপ লাইটারেজের মাধ্যমে আংশিক অপারেশনাল কার্য?মের শুভ উদ্বোধন করেন। এরপর থেকে এ পর্যন্ত মোট ৩৪ টি বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজের অপারেশনাল কার্যক্রম পায়রা বন্দরের মাধ্যমে সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানীর (বিসিপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম খোরশেদুল আলম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের ফসল হলো পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালন করার জন্য গোপালগঞ্জ থেকে পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র পর্যন্ত ১৬০ কি. মি. দীর্ঘ বিদ্যুৎ লাইন টানতে হয়েছে। রাস্তাঘাট, নদী-নালা, বাড়ি-ঘর অতিক্রম করে আসতে হয়েছে। এ জন্য সময় কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। কয়লা আমদানীর মধ্য দিয়ে পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু করা যাবে। আমরা ডিসেম্বরের প্রথম দিকে পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৬৬০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিট থেকে থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বানিজ্যিকভাবে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করতে পারবো।’

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT