কারণ ছাড়াই চাকুরিচ্যুত আরবান প্রাইমারী হেলথ কেয়ার সার্ভিস প্রকল্পের ৩৩ কর্মী কারণ ছাড়াই চাকুরিচ্যুত আরবান প্রাইমারী হেলথ কেয়ার সার্ভিস প্রকল্পের ৩৩ কর্মী - ajkerparibartan.com
কারণ ছাড়াই চাকুরিচ্যুত আরবান প্রাইমারী হেলথ কেয়ার সার্ভিস প্রকল্পের ৩৩ কর্মী

2:59 pm , September 2, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ কোন নোটিশ ছাড়াই মৌখিক আদেশে চাকরিচ্যুত করা হলো সিটি কর্পোরেশনের আরবান প্রাইমারী হেলথ কেয়ার সার্ভিস ডেলিভারী প্রকল্পের ৩৩ কর্মীকে। এরা বিগত ১৩ বছর ধরে প্রকল্পের অধিনে ৫টি প্রতিষ্ঠানে কাজ করে আসছিলো। গত ১ সেপ্টেম্বর রোববার বিকেলে প্রকল্পের নতুন কাজ পাওয়া সীমান্তিক নামক এনজিও কর্তৃপক্ষ তাদের চাকরি নেই বলে জানিয়ে দেয়। এ ক্ষেত্রে পরিশোধ করা হয়নি তাদের আট মাসের বকেয়া বেতন। ফলে জীবনের শেষ বয়সে এসে চাকরি হারিয়ে পথে বসার আশঙ্কা করছে ওই ৩৩টি পরিবারা। গতকাল সোমবার বিকেলে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবের সাংবাদিক মাইনুল হাসান মিলনায়তনে প্রকল্পের চাকুরিচ্যুত কাউন্সিলর সহ দুটি এনজিও অন্যান্য কর্মিদের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন তারা।
লিখিত বক্তব্যে চাকুরিচ্যুত কর্মীদের পক্ষে ইউপিএইচসিএসডিপি-২ এর ক্লিনিক্যাল কাউন্সিলর কামরুল নাহার রেশমা বলেন, ‘আরবার প্রাইমারী হেলথ্ কেয়ার সার্ভিস ডেলিভারী প্রকল্পটি’ স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের একটি প্রকল্প। ২০০৬ সালে এর শুরু থেকে আমরা ৮৫ জন এই প্রকল্পের অধিনে মেরি ষ্টোপস ও সৃজনী বাংলাদেশ নামক এনজিওতে কাজ করে আসছি। প্রতি ৫ বছর পর পর প্রকল্পের এনজিও সংগঠন পরিবর্তন হলেও নিয়ম অনুযায়ী আমাদের দিয়েই কাজ করানো হচ্ছিলো। কিন্তু নতুন দরপত্রে কাজ পাওয়া সীমান্তিক নামক একটি এনজিও প্রতিষ্ঠান পূর্ব নোটিশ ছাড়াই ৮৫ জনের মধ্যে থেকে আমাদের ৩৩ জনকে চাকরি থেকে বাদ দিয়ে দেয়। লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, এই প্রকল্পের দাতা সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী ২০০৬ সাল থেকে যে সমস্ত কর্মী প্রকল্পে কাজ করে আসছে, তারাই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করার সুযোগ পাবে। সে অনুযায়ী আমরা পূর্বের প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টানা একমাস কাজ করে আসছিলাম। শুধু তাই নয়, এখনো প্রজেক্টের কাছে আমাদের আট মাসের বেতন-বোনাস বকেয়া আছে। তা কবে পাবো সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন ব্যাখ্যা কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। তার মধ্যে দাতা সংস্থার নিয়ম ভঙ্গ করে আমাদের ৩৩ জনকে শুধু একটি মৌখিক আদেশে চাকুরি থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রত্যেকের চাকরির বয়স সীমা অতিক্রম হয়েছে। এ কারনে কোথাও কাজের সন্ধান নেয়া অনেক কষ্টসাধ্য। এসব বিষয় বিবেচনা করে চাকুরিচ্যুত হওয়ার পুর্ভাবাস পেয়ে চাকরিতে টিকে থাকার জন্য আমরা বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর সাথে দেখা করতে যাই। তাকে না পেয়ে নগর পিতার পিএস সুমন ভাইয়ের সাথে কথা বলি। তিনি মেয়র স্যারের সাথে কথা বলে আমাদের স্বপদে বহাল রাখবেন বলে আশ^স্থ করেন। কিন্তু এর দু’দিন পরেই সীমান্তিক নামক ওই এনজিও কর্তৃপক্ষ আমাদের চাকরিচ্যুত করে।
এ প্রসঙ্গে জানতে প্রকল্পের নতুন কার্যাদেশ পাওয়া সীমান্তিক এনজিও প্রতিষ্ঠানের প্রজেক্ট ম্যানেজার (পিএম) মো. শাহনেওয়াজ বলেন, গত ১ আগস্ট এই প্রজেক্ট আমাদের হস্তান্তর নেয়ার কথা। কিন্তু বিভিন্ন ঝামেলার কারনে তা করতে পারিনি। ১ সেপ্টেম্বর থেকে আমরা আমাদের কাজ শুরু করেছি।
দাতা সংস্থার শর্তের বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, বরিশালের প্রজেক্টে আমাদের নিজস্ব কোন লোক নেই। পূর্বে থেকে যারা কাজ করে আসছেন তাদেরকেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রাখা হয়েছে। তবে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নতুন-পুরাতন মিলিয়ে তালিকা আমাদের দিয়েছে। সেই তালিকা অনুযায়ী আমাদের কাজ চালিয়ে যেতে বলেছেন। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দেয়া তালিকা অনুসরন করতে গিয়ে পূর্বের ৩৫ ভাগ কর্মী পদ পড়েছে। তবে এজন্য আমাদের এনজিও কর্তৃপক্ষ দায়ি নয়।
তবে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসরাইল হোসেন বলেন, প্রতি ৫ বছর পর পর প্রকল্পের এনজিও’র পরিবর্তন আসবে এটা স্বাভাবিক। তবে এক এক এনজিও’র এক এক নিয়ম থাকতে পারে। হয়তো সেই নিয়মের কারনেই ওই ৩৩ জন বাদ পড়েছে। এ বিষয়ে আমার বা আমাদের কারোর কিছু জানা নেই। তাছাড়া এটি এনজিও’র ব্যাপার। এখানে আমাদের কোন হাত নেই।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT