3:12 pm , August 28, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাজধানীর সাথে বরিশালÑঝালকাঠী-পিরোজপুরÑবাগেরহাট-মোংলা হয়ে খুলনা বিভাগীয় সদরের নিরাপদ নৌযোগাযোগ রক্ষাকারী নির্ভরযোগ্য নৌযান ‘পিএস মাহসুদ’ বিগত কুড়িদিন ধরে বিকলাবস্থায় পড়ে আছে। ফলে ইতোমধ্যেই রাজধানীর সাথে দক্ষিণাঞ্চলের নিয়মিত নৌযোগাযোগ সপ্তাহে ৪দিনে সীমিত করা হয়েছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত ঢাকার সাথে মোংলাÑখুলনার একমাত্র যাত্রীবাহী নৌ যোগাযোগটিও বন্ধ হয়ে গেছে। ঈদ উল আযহার আগে গত ৮ আগস্ট ঢাকা থেকে ৫ শতাধীক যাত্রী নিয়ে বরিশালে যাবার পথে চাঁদপুরের ডাকাতিয়া-মেঘনা মোহনায় ‘পিএস মাহসুদ’এর মূল ইঞ্জিনের ‘ফ্লাই হুইল’এর ‘রাবার লাইলিং’ বিকট শব্দে ফেটে গিয়ে নৌযানটি বিকল হয়েপড়ে। কোনমতে নৌযানটি চাঁদপুর ঘাটে নোঙর করা সম্ভব হলেও তা আর সচল করা যায়নি। প্রায় ৮ ঘন্টা পরে পরদিন প্রত্যুষে বিকল্প নৌযান চাঁদপুরে পৌছে আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধার করে বরিশাল হয়ে পিরোজপুরের হুলারহাট পর্যন্ত পৌছে দেয়। ৯ আগস্ট বিকল নৌযানটির যন্ত্রাংশ খুলে মেরামতে নেয়া হলেও বিগত কুড়িদিনেও তা আর নৌযানটিতে ফেরত আসেনি। সরবারহকারী নিম্নমানের ঐ যন্ত্রাংশ সরবরাহ করায় তা ওয়ারেন্টি পিরিয়ডের মধ্যেই বিনষ্ট হয়েছে বলে জানা গেছে। কিন্তু এরপর থেকে সরবরাহকারী নানা অজুহাত দেখিয়ে গত কুড়ি দিনেও যন্ত্রাংশটি আর সরবরাহ করেনি। এমনকি গত সপ্তাহখানেক যাবত সরবরাহকারীর কোন হদিসও পাচ্ছেনা সংস্থাটির দায়িত্বশীল মহল। প্রতিষ্ঠানটি এর আগে একাধীক তারিখ নির্ধারন করেও যন্ত্রাংশটি সরবরাহ করেনি বলেও অভিযোগ রয়েছে। খোজ নিয়ে জানা গেছে, ঐ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব কোন কারখানা নেই। অথচ প্রতিষ্ঠানটিকে তালিকাভূক্ত করেছে সংস্থা। এব্যাপারে বিআইডব্লিউটিসি’র জিএম-কারিগরি গফুর সরকারের সাথে আলাপ করা হলে তিনি যন্ত্রাংশের অভাবে পিএস মাহসুদ বসে থাকার কথা স্বীকার করে যত দ্রুত সম্ভব যন্ত্রাংশটি সংগ্রহ করে নৌযানটি সচল করার কথা জানান। সরবারহকারী প্রতিষ্ঠানটির অসহযোগীতার কারনেই এত দিনেও নৌযানটি সচল করা সম্ভব হয়নি বলেও জানান তিনি। এব্যাপারে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের কথাও জানান সংস্থাটির এ কারিগরি কর্মকর্তা । খোজ নিয়ে জানা গেছে, সংস্থাটির হাতে ৪টি প্যাডেল জাহাজের একটি বিনা দরপত্রে ইজারা দিয়ে গেছেন বিদায়ী নৌ পরিবহন মন্ত্রী। অপর দুটিও চলছে জোড়াতালি দিয়ে। ১৯৯৫-৯৬ সালে পূণর্বাসন ও আধুনিকায়নের পারে গত ২৩বছরেও এসব ব্যয়সাশ্রয়ী নৌযানগুলোর মূল ইঞ্জিন, প্যাডেল ও উপরিকাঠামোর কোন পরিপূর্ণ মেরামত ও রক্ষনাবেক্ষন হয়নি। ফলে নৌযানগুলোর কারিগরি ত্রুটি এখন নিত্যকার ঘটনা। যাত্রী সেবা বলতেও কিছু অবশিষ্ট নেই। তবে সংস্থার চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচিব প্রনয় কান্তি বিশ্বাস এসব প্যাডেল জাহাজের পূর্ণাঙ্গ মেরামত এবং পূণর্বাসনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কথা জানিয়েছেন।