3:14 pm , August 25, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ সদর উপজেলার চরমোনাইতে ইউপি সদস্য’র সহযোগিতায় কিশোরীর অমতে একটি বাল্যবিয়ে সম্পাদন হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রথম পর্যায়ে পুলিশের বাধায় বিয়ে পন্ড হলেও পরে নগরীতে এসে তাদের বাল্য বিয়ে সম্পন্ন করা হয়েছে। ২৪ জুন শনিবার চরমোনাই ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডস্থ ডিঙ্গামানিক কাঠেরপুল এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। জোর করে বিয়ের পিঁড়িতে বসানো কিশোরী সুমাইয়া (১৪) ওই এলাকার আব্দুল করীম এর মেয়ে এবং বুখাইনগর দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্রী।
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইউপি সদস্য হেলাল। তার দাবি পরিবার জোর করে ওই কিশোরীর বিয়ের চেষ্টা করলেও পরে তা পুলিশের উপস্থিতিতে পন্ড হয়ে যায়। তবে বাল্যবিয়ে নিয়ে হেলাল মেম্বারে দেয়া বক্তব্যে অসামঞ্জস্যতা খুঁজে পাওয়া গেছে। তবে ছেলের নাম-পরিচয় খুঁজে পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় প্রতিবেশীরা জানান, কিশোরী মাদ্রাসা ছাত্রীর অমত থাকা সত্যেও শনিবার সকালে তার বিয়ের আয়োজন করে পরিবারের লোকেরা। এসময় স্থানীয় মেম্বার হেলালের উপস্থিতিতে বিয়ে পড়ানোর প্রস্তুতি নেয় বুখাইনগরে বিয়ের কাজী রেজাউল ইসলাম। এক প্রকার জোর যবরদস্তিই করেই করা হচ্ছিলো কিশোরীর বিয়ের আয়োজন। যা এলাকায় জানাজানি হলে ঘটনাস্থলে হাজির হয় সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ। তাদের হস্তক্ষেপে সে দফায় ভেঙে যায় বাল্য বিয়ের অনুষ্ঠান।
সূত্রগুলো আরো জানায়, পুলিশ চলে গেলে শনিবার বিকালে পুনরায় বিয়ের আয়োজন করা হয়। তবে সেটা চরমোনাইতে নয়। হেলাল মেম্বারের যোগসাজসে বরিশাল নগরীতে কোন এক কাজী অফিসে গিয়ে বরের উপস্থিতিতে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করে তার পরিবার। এ বিষয়ে কিশোরী সুমাইয়ার পরিবারের সাথে তাদের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধীকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চরমোনাই’র চার নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হেলাল। তিনি বলেন, বিয়ে সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। তাছাড়া শনিবার সকালে আমি চরমোনাইতে নয়, বরং বরিশালে হাসপাতালে ছিলাম। তবে ইউপি সদস্য হেলাল বিয়ে সম্পর্কে কিছু না জানলেও বলে ফেলেন সাংবাদিকের কথার মারপ্যাচে বলে ফেলেন বরের সংক্ষিপ্ত ঠিকানা। বরের বাড়ি গলাচিপা বলে জানান তিনি। ঝামেলার কথা শুনে বর পক্ষ বরিশালে না আসায় বিয়ে হয়নি বলেও তার। অপর এক বক্তব্যে ইউপি সদস্য বলেন, বিয়ে পড়াবার জন্য স্থানীয় রেজাউল কাজী আমাকে ফোন করেছিলো। আমি যাইনি। কাজীকে মেয়ের বয়স এবং কাগজপত্র দেখে শুনে বিয়ে পড়াতে বলি। কিন্তু বয়স না হওয়ায় কাজী বিয়ে পড়াতে রাজী হয়নি। এজন্য আমার এবং কাজীর ওপর চাপ সৃষ্টিও করা হয়। তার মধ্যে খবর পেয়ে পুলিশ এসে পড়ায় বাল্যবিয়ে পন্ড হয়ে যায়। এমনকি পরবর্তীতে বরিশালে গিয়ে বিয়ে হয়েছে কিনা সে সম্পর্কে কিছু জানা নেই বলে ব্যস্ততা এখিয়ে এড়িয়ে যান এইপি সদস্য।