3:26 pm , August 22, 2019
শাকিল মাহমুদ বাচ্চু, উজিরপুর ॥ বর্ষার শুরতেই ফুটতে শুরু করেছে শাপলা । উজিরপুর উপজেলার সাতলা বিল এলাকা এখন শাপলার অনাবিল সৌন্দর্য্যে ভরপুর। সূর্যের আভাকেও যেনহার মানিয়েছে বিলের পানিতে লতাপাতা গুল্মে ভরা শত সহ¯্র লাল, নীল ও সাদা শাপলা। এ যেন প্রকৃতির বুকে এক নকশি কাঁথা অপরুপ সৌন্দর্য্যে। বছরের ৭ মাস সময় ধরে শতশত একর জমির পানির মধ্যে কোটি কোটি জন্ম নেয়া নানা রং এর শাপলাগুলো এক নজর দেখার জন্য সকাল দুপুর সন্ধ্যায় হাজারো মানুষ ভিড় জমাচ্ছে শাপলা বিল গুলোতে। পর্যটকদের আনাগোনায় দিনদিন মুখরিত হচ্ছে শাপলার রাজ্য সাতলা এলাকা। ওই এলাকার গ্রামাঞ্চলের সহজ সরল মানুষগুলো বিলের পানিতে জীবন সংগ্রামের আয়ের পথ হিসাবে বেছে নিয়েছে শাপলা তোলাকে। তারা সকালের সূর্যের আলো ফোটার আগেই ছোট ছোট নৌকা নিয়ে নেমে পড়ে বিলে শাপলা তোলার জন্য। পানির মধ্য থেকে সৌন্দর্যপূর্ন শাপলাগুলো তুলে এনে বাজারে বিক্রি করে জিবিকা নির্বাহ করছে শতশত পরিবার। প্রায় ২শত বছর ধরে সাতলার বিল গুলোতে শাপলা জন্ম হচ্ছে। ওই এলাকার প্রায় ৫০ভাগ আদিবাসীরা শাপলার চাষ ও বিপনন কাজের সাথে জড়িত রয়েছে। স্থানীয়রা অনেকেই জানিয়েছেন, তাদের এলাকায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পর্যটকদের সুবিধার্থে সাতলা এলাকায় আবাসন ব্যবস্থার দাবী করেছেন। গত ১৭ আগষ্ট শনিবার উজিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ সিকদার বাচ্চু উজিরপুরের সাতলার শাপলা বিলের সৈন্দর্য্য উপভোগ করতে আসা পর্যটকদের জন্য কালবিলা এলাকায় একটি ছোট্ট পরিসরে আবসন নির্মানের স্থান নির্ধারন করেছেন। তিনি বলেন সাতলা দিনেদিনে পর্যটক নগরীতে পরিনত হওয়ায় তারা সাতলার শাপল বিলকে পরিপূর্ন রুপদিতে নানা মূখী কাজ হাতে নিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন। সাতলার ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক আজাদ জানিয়েছেন, একসময় শাপলার তেমন কোন চাহিদা না থাকায় পানিতে জন্মে পানিতেই মরে পঁচতে হতো। দিনে দিনে শাপলার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় তা বাজারে বিক্রি করতে শুরু করে দিনমজুররা। এখন প্রায় সারা বছর ধরেই শাপলা পাওয়া যাওয়ায় বিশেষ করে বরিশালে আর এ অঞ্চলের মানুষ খাদ্যের তালিকায় শাপলাকে প্রাধান্য দিচ্ছে। তার ইউনিয়ন সাতলার বুক জুড়ে শাপলার সৌন্দর্য্যে উপভোগ করার জন্য সব শ্রেনীর মানুষ ভিড় করছে। শাপলা তোলার কাজে জড়িত দিনমজুর বেলায়েত(৩৮) বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শাপলা তুলে বাজারে বিক্রি করে চলছে তার সংসার। প্রতিদিন ৩/৪ শত টাকা আয় হয় তাদের । এছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিনোদন ও প্রকৃতি প্রেমী মানুষের কাছে নানা সামগ্রী বিক্রী করে অর্থিক লাভবান হচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানা শ্রেনী পেশার মানুষ সাতলার শাপলা বিলের প্রাকৃতিক সৈন্দর্য্য উপভোগ করছেন সরৎ, শীত ও হেমন্তকালে। ঢাকার নবাবগঞ্জ থেকে আসা পর্যটক সুমান্ত (২২) বলেছেন তিনি প্রকৃতির সৈন্দর্য উপভোগ করতে এতদুর ছুটে আসছেন । অপর একজন বরগুনার আমতলীর সুমন(২৫) বলেন শাপলা বিলের অপরুপে তিনি পুলকিত ও মুগ্ধ ।