বিপদ সীমার উপরে কীর্তনখোলা ও মেঘনা সহ ৬টি নদীর পানি বিপদ সীমার উপরে কীর্তনখোলা ও মেঘনা সহ ৬টি নদীর পানি - ajkerparibartan.com
বিপদ সীমার উপরে কীর্তনখোলা ও মেঘনা সহ ৬টি নদীর পানি

3:23 pm , August 7, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ লঘুচাপের প্রভাবে কীর্তনখোলা ও মেঘনা সহ আশপাশের নদী গুলোতে প্রচন্ড মাত্রায় পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে কীর্তনখোলা সহ ৬টি নদীর পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করেছে। বাকি নদীগুলো বিপদ সীমার কাছাকাছি রয়েছে। এর ফলে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে নদীর তীরবর্তি নি¤œাঞ্চল। গৃহবন্ধি হয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষ। সরেজমিনে দেখাগেছে, গত ৬ আগস্ট থেকে হঠাৎ করেই দক্ষিণাঞ্চলের নদী-নদী ও খালের পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। ওইদিন রাতেই প্রচন্ড বাতাস এবং দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারনে বিপদ সীমা অতিক্রম করে বরিশাল নগর ঘেষা কীর্তনখোলা নদীর পানি। এজন্য নগরীর নি¤œাঞ্চল হিসেবে পরিচিত পলাশপুরের কিছু, রূপাতলী, কালিজিরা এলাকার কিছু অংশ নদীর জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে। তাছাড়া পানি বৃদ্ধির কারনে শহরের খাল এবং নর্দমার পানিও বের হতে পারছে না।
এদিকে হঠাৎ করে নদীর পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করায় নতুন করে ভাঙনের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে নদীর তীরবর্তী মানুষের মাঝে। নির্ঘুম রাত কাটছে তাদের। জোয়ারের পানির সাথে সাথে নদীর বিশাল অংশ নদী গর্ভে বিলিন হওয়ার আশংকা করছে তারা। এমন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে ভাঙন এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। ভাঙ্গন রোধে নিচ্ছেন জরুরী অস্থায়ী প্রটেকশনের ব্যবস্থা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি বিজ্ঞান শাখার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মাসুম জানান, পূর্ণিমার কারনে গত ৩ আগস্ট নদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও তা আবার নেমে যায়। তবে সেটা বিপদ সীমার কাছেও আসেনি। কিন্তু বুধবার সকাল থেকে হঠাৎ করেই নদীর পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করতে শুরু করেছে। এর মধ্যে সর্বশেষ বুধবার সন্ধ্যার জরিপ অনুযায়ী কীর্তনখোলা নদীর পানির স্তর সর্বোচ্চ ২৫৯ সেন্টিমিটার বেড়ে গিয়ে বিপদ সীমার চার সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।একইভাবে নয়াভাঙ্গলী নদী’র পানির স্তর বৃদ্ধি পেয়েছে সর্বোচ্চ ৩৩৮ সেন্টিমিটার। যা বিপদ সীমার থেকে ১০৬ সেন্টিমিটার বেশি। পায়রা নদীর পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করে ২৯২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিষখালী নদীর পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করে ২৩২ সেন্টিমিটারে পৌছেছে। বিপদ  সীমার ২৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বিষখালী নদীর পানি। একই নদীর বরগুনা ও পাথরঘাটা পয়েন্টের পানিও বিপদ সীমা অতিক্রম করেছে। বিপদ সীমা ২৬৮ ছুয়েছে বলেস্বর নদীর পানি। বিপদ সীমা অতিক্রম করেছে মেঘনা নদীর পানি। বিপদ সীমা ৩৪১ সেন্টিমিটার অতিক্রম করে ৩৯৫ সেন্টিমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে নদীর পানি।
উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাসুম বলেন, দূর্ণীঝরের পূর্ভাবাসের পাশাপাশি লঘুচাপের কারনে বাতাসের গতিবেগ বেড়ে গেছে। এ কারনে দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীগুলোতে পানির চাপ বেড়ে গিয়ে বিপদ সীমা অতিক্রম করছে। তবে যে ঘুর্ণিঝড়টি রয়েছে তা ভারতের দিকে অগ্রসর হওয়ায় দূর্বল হয়ে পড়ছে। তাই খ্রব দ্রুতই নদীর পানি কমে যাওয়ার ধারনা করছেন তিনি। অপরদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাইদ বলেন, উত্তরাঞ্চলের পানি নেমে যেতে শুরু করেছে। এজন্য দক্ষিণাঞ্চলের নদীগুলোতে পানির চাপ একটু বেশি। এর পাশাপাশি লঘুচাপের কারনে বাতাদের তীব্রতা বেড়ে যাওয়া নদীতে পানি বেড়ে যাচ্ছে।এই কর্মকর্তা বলেন, এমনেতেই বর্ষাকাল হওয়ায় বিভিন্ন নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এখন যেভাবে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে যাবার সম্ভাবনাও রয়েছে। বিশেষ করে পানি নেমে ওয়ার সময় এই আশংকাটা বেশি থেকে যায়। তাই পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সার্বিক প্রস্তুতি নেয়া রয়েছে। বিশেষ করে যেসব এলাকায় নদী ভাঙন হচ্ছে তা আমরা পরিদর্শন করে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি। বিশেষ করে যেসব স্থানে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে সেইসব এলাকায় জরুরী অস্থায় প্রটেকশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT