3:23 pm , August 1, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) সহ বিভাগের হাসপাতাল গুলোতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দুইশ ছাড়িয়েছে। এ পর্যন্ত হাসপাতাল গুলোতে চিকিৎসা গ্রহন করেছেন ২৪০ জন রোগী। যার মধ্যে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। তাছাড়া গত ২৪ ঘন্টার হিসেবে নতুন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৫৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসরাইল হোসেন সহ চিকিৎসাধিন রয়েছেন ১৮২ জন। চিকিৎসা গ্রহন শেষে বাড়ি ফিরেছে ৮৯ জন।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ও ডেঙ্গু জ¦র সম্পর্কিত কন্ট্রোল রুমের প্রধান ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ৩৩ জন রোগী বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে এই হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহন করেছেন ১৮৯ জন। যার মধ্যে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে এবং চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫৫ জন রোগী। এছাড়া বরিশাল জেলায় সিভিল সার্জনের আওতায় বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ পর্যন্ত ১৪ জন রোগী চিকিৎসা গ্রহন করেছেন। যার মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে ভর্তি হয়েছে ৫ জন ও চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ১ জন। চিকিৎসাধিন রয়েছেন ১৩ জন। এ জেলার গৌরনদী উপজেলায় মারাগেছে একজন।
পটুয়াখালী জেলায় এ পর্যন্ত ৪১ জন চিকিৎসা গ্রহন করেছেন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় নতুন ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৫ জন ও বর্তমানে চিকিৎসাধিন রয়েছে আরো ২৬ জন। এছাড়া চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১০ জন।
ভোলা জেলায় এ পর্যন্ত ২৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা গ্রহন করেছেন। সর্বশেষ গত ২৪ ঘন্টায় নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে ৭ জন। চিকিৎসা গ্রহন শেষে বাড়ি ফিরেছেন ৭ জন। বর্তমানে চিকিৎসাধিন রয়েছেন ১৬ জন।
পিরোজপুর জেলায় এ পর্যন্ত ১৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা গ্রহন করেছেন। সর্বশেষ গত ২৪ ঘন্টায় নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে ২ জন। চিকিৎসা গ্রহন শেষে বাড়ি ফিরেছেন ৪ জন। বর্তমানে চিকিৎসাধিন রয়েছেন ১০ জন।
বরগুনা জেলায় এ পর্যন্ত ৪০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা গ্রহন করেছেন। সর্বশেষ গত ২৪ ঘন্টায় নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে ৫ জন। চিকিৎসা গ্রহন শেষে বাড়ি ফিরেছেন ১১ জন। বর্তমানে চিকিৎসাধিন রয়েছেন ৩০ জন।
এছাড়া ঝালকাঠি জেলায় এ পর্যন্ত ৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা গ্রহন করেছেন। সর্বশেষ গত ২৪ ঘন্টায় নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে ১ জন। চিকিৎসা গ্রহন শেষে বাড়ি ফিরেছেন ১ জন। বর্তমানে চিকিৎসাধিন রয়েছেন ৬ জন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, যেসব রোগী আক্রান্ত হয়েছে তার মধ্যে বেশিরভাগ রোগীই ঢাকা থেকে ডেঙ্গু জ¦র নিয়ে বরিশালে এসেছে।
তিনি বলেন, উপজেলা পর্যায়ে চিকিৎসক সংকট রয়েছে। তার মধ্যেও বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় চিকিৎসক, নার্সদের সমন্বয়ে গেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সকলের ছুটি বাতিল করে আমরা চিকিৎসক ও নার্সদের এ বিষয়ে নিয়মিত প্রশিক্ষণ সহ সেমিনার করে আসছি।
পাশাপাশি প্রতিটি উপজেলা থেকে ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যন্ত স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেঙ্গু জ¦রের কারন, লক্ষণ এবং এর থেকে সচেতন হওয়ার বিষয়ে অবহিত করছেন। প্রচার প্রচারনার অংশ হিসেবে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে।
ডেঙ্গু রোগীদের পরামর্শ স্বরুপ স্বাস্থ্য বিভাগের এই কর্মকর্তা বলেন, এডিস মশা থেকে ডেঙ্গু জ¦র হয়ে থাকে। আর এ মশা পরিস্কার পানিতে থাকে। যে কারনে মধ্যে গোসলখানায়, টয়লেটে, ঘরের আঙ্গিনায়, টায়ার কিংবা ডাবের খোশা, ফুলের টব সহ যেসব স্থানে পানি জমে থাকে সেগুলো সব সময় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
তাছাড়া দিনের বেলায় ঘুমোতে গেলে অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের সার্বক্ষনিক নীভির পর্যবেক্ষনে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থা বিভাগের এই কর্মকর্তা। সেই সাথে ডেঙ্গুর কোন লক্ষণ দেখা দেয়া মাত্রই সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের স্মরণাপন্ন হতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।