বরিশালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছে বরিশালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছে - ajkerparibartan.com
বরিশালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছে

3:22 pm , August 1, 2019

সাঈদ পান্থ ॥ এডিস মশার অস্থিত মিলেছে বরিশালেও। প্রথম অবস্থায় শুধুমাত্র ঢাকা ফেরত রোগীদের মাঝে ডেঙ্গু জীবানু পাওয়া যেত। এখন আর ঢাকা ফেরত নয়, বরিশালে থাকা অবস্থায়ই মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে ডেঙ্গু রোগে। ঢাকা থেকে বরিশালে আসা লঞ্চ ও বাস করে ডেঙ্গু মশা বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে। যার কারণে এখন রাজধানী ঢাকায় আক্রান্ত হয়ে বরিশালে আসার রোগীর সাথে পাল্লা দিয়ে এই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে বরিশালের মানুষ। এর বেশী প্রকট দেখা গেছে মুলাদী উপজেলায়। এ অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ঢাকা থেকে বরিশালসহ সারা দেশে যাওয়া বাস ও লঞ্চে কোন মশা না থাকতে পারে সে দিকে লক্ষ্য রাখা। পাশাপাশি এই সব যানবাহনে মশক নিরোধ ওষুধ প্রয়োগ করা। শেবাচিম হাসপাতালের ৩ তলায় মেডিসিন ওয়ার্ডে সকাল সাড়ে ১০ টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানকার মেডিসিন ওয়ার্ড ১ এ সংস্কার কাজ চলছে। যার কারণে মেডিসিন বিভাগ ২ এর সাথে ১ নম্বর ওয়ার্ডকে যুক্ত করে চিকিৎসা চলছে। নারী পুরুষ এক সাথে ওয়ার্ড ছাড়িয়ে বারান্দা ও বারান্দা ছাড়িয়ে সিড়ির করিডোরের মেঝেতে অবস্থান নিয়ে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।
হাসপাতালের ৪র্থ তলায় মেডিসিন বিভাগ ৩ এ চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকা বরিশাল জেলার মুলাদী উপজেলার বাসিন্দা কৃষক লোকমান হোসেনের স্বজনরা জানান, লোকমানতো ঢাকা যায় নি। তবে তার কেন ডেঙ্গু হলো। শুনেছি ঢাকা থেকে ডেঙ্গু রোগ নিয়ে আসা হয়। বরিশালে ডেঙ্গু হয় না। কিন্তু লোকমানতো ঢাকা যায়নি, মুলাদীতে বসেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। গত সপ্তাহ থেকে লোকমান জ্বরে ভুগছিলেন। পরে বেশী অসুস্থ হয়ে পড়লে গত রোববার লোকমানকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে পরীক্ষা নিরিক্ষা করে তার ডেঙ্গু সনাক্ত করা হয়েছে। বরিশাল কলেজের মার্স্টাস শেষ বর্ষের ছাত্র (ম্যানেজমেন্ট বিভাগ) জহিরুল ইসলাম শেবাচিম হাসপাতালের ৪র্থ তলায় মেডিসিন বিভাগ ৪ এ চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। তিনিও ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে তিনিও কৃষক লোকমান হোসেনের মত ঢাকায় না গিয়েই ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তিনি বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের নয়ানী গ্রামের বাসিন্দা। জহিরুল ইসলাম জ্বর নিয়ে গত ২৮ জুলাই এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। পরে পরীক্ষা নিরিক্ষা করে তার শরীরেও ডেঙ্গুর জীবানু পেয়েছে চিকিৎসকরা। সেই থেকে তার চিকিৎসা সেবা চলছে এই হাসপাতালে।
শেবাচিম হাসপাতালের মেডিসিন ওর্য়াডের রেজিষ্টার ডা: এইচ এম মাসুম বিল্লাহ জানান, ‘প্রতিদিনই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সবাই ডেঙ্গু সন্দেহ করে আসলেও সবাই কিন্তু ডেঙ্গু রোগী নয়। অনেকে জ্বর হলেই মনে করেন তার ডেঙ্গু হয়েছে। পরে পরীক্ষ নিরিক্ষা করে তাদের সেবা দিতে হয়। তবে লোকবলের অভাবে আমরা নানা সমস্যায় পড়ছি। বিশেষ করে চিকিৎসক সংকট রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘মেডিসিন বিভাগ ১, ২, ৩ ও ৪ এ বেড সংকট রয়েছে। বেড কম না থাকায় রোগীদের ফ্লোরে রেখে চিকিৎসা সেবা দিতে হচ্ছে আমাদের। তারপরও আমরা সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের প?রিচালক ডাঃ বাকির হোসেন বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগী?দের চাপ দিন দিন বৃ?দ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আগে ঢাকা থেকে ডেঙ্গু রোগীরা আসতো। এখন বরিশালে বসেও কয়েকজন রোগী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। তাই লঞ্চ ও বাসে মশক নিধন ওষুধ প্রয়োগ করে আসা ভাল। না হলে বরিশালের মত সারা দেশে ডেঙ্গু রোগী ছড়িয়ে পড়বে। পাশাপাশি এডিস মশাও ছড়িয়ে পড়বে।’

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT