3:00 pm , July 31, 2019

লক্ষ্মীপুর রুটে সীট্রাক সার্ভিসটিও গত বছর থেকে বন্ধ রয়েছে। এর ফলে চট্টগ্রাম অঞ্চলের যাত্রীদের চট্টগ্রাম থেকে সড়ক পথে লক্ষ্মীপুর এসে সেখান থেকে নিরাপদ নৌযানে বরিশালে পৌছার পথও রুদ্ধ হয় গেছে। অথচ উপকুলীয় নিরাপদ নৌ যোগাযোগের জন্য সরকার প্রতিবছর ৫০ লাখ টাকা নগদ ভতুর্কি দিচ্ছে রাষ্ট্রীয় এ নৌ পরিবহন সংস্থাটিকে। এরপরেও নিরাপদ উপকুলীয় সার্ভিসটি পূণর্বহালে উদাসীন রাষ্ট্রীয় নৌ পরিবহন সংস্থাটি।
কথিত নৌযানের অভাবে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত ঢাকাÑবরিশালÑখুলনা রকেট স্টিমার সার্ভিসটি আবারো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে । মোংলাÑঘাশিয়াখালী চ্যানেলটি উন্নয়নের পরে ২০১৬ সালে সপ্তাহে একদিন করে ঢাকা থেকে খুলনা পর্যন্ত রকেট স্টিমার সার্ভিসটি চালু করা হয়েছিল। অথচ সংস্থাটির হাতে ৪টি প্যাডেল জাহাজ ও ২টি নতুন স্ক্রু-হুইল নৌযান রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, নিয়মিত রক্ষনাবেক্ষন ও মেরামতের অভাবে সংস্থার নতুন পুরনো সবগুলো নৌযানেরই জীর্ণ দশা। অথচ এসব নৌযানের মেরামতের নামে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা ব্যয় দেখান হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
আসন্ন ঈদ উল আজহার আগে ৮আগস্ট অপ্রোয়জনীয়ভাবে ঢাকা থেকে দুটি নৌযান ছাড়া হচ্ছে চাঁদপুর-বরিশাল হয়ে পিরোজপুরের বড় মাছুয়া ও বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ পর্যন্ত। অভিযোগ রয়েছে, সাধারন যাত্রীর চাপ না থাকলেও শুধুমাত্র কেবিন যাত্রীদের জন্য এ বিশেষ ব্যাবস্থা। অথচ ৯আগস্ট মূল জন¯্রােত শুরু হলেও সেদিন মাত্র একটি নৌযান ঢাকা থেকে ছাড়ছে সংস্থাটি। অনুরূপভাবে ঈদের আগের দিন ১১আগস্ট সর্বাধিক ভীড়ের দিনও ঢাকা থেকে মাত্র ১টি নৌযান ঢাকা ছাড়ছে।
উপরন্তু সংস্থার নিয়মিত নৌযানগুলো সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় এবং বিশেষ সার্ভিসগুলো সন্ধ্যা ৭ টায় ঢাকা থেকে ছাড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যা মোটেই যাত্রী বান্ধব নয় বলে অভিযোগ উঠেছে ইতোমধ্যে। যানজট অতিক্রম করে ঐ সময়ে কোন যাত্রীর পক্ষে ঢাকার সদরঘাটে পৌছা সম্ভব নয় বলে সরকারী নৌযানগুলো আরো অন্তত এক ঘন্টা পরে ঢাকা থেকে ছাড়ার ব্যবস্থা করার দাবী রয়েছে। বিগত ঈদের সময়ও ঐসব সময় কার্যকর থাকায় রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির নৌযানগুলো ধারন ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করেছে। এবারো যে তার খুব অন্যথা হবে তা মনে করছেন না পর্যবেক্ষক মহল।
এদিকে মেরামতের নামে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ের পরেও সংস্থাটির নতুন পুরোনো সবগুলো নৌযানই কারিগরি ত্রুটির কারনে ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে প্রায় ৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সংগ্রহ করা ‘এমভি বাঙালী’ ও ‘এমভি মধুমতি’ নৌযান দুটি যাত্রী বান্ধব না হওয়ায় তাতে ভ্রমনে সবার আগ্রহ কম। উপরন্তু এসব নৌযানেও একের পর এক কারিগরি ত্রুটি লেগে আছে। অত্যাধিক পরিচালন ব্যয়বহুল এসব নৌযানে গত জুন পর্যন্ত প্রায় ১৬ কোিট টাকা লোকশান গুনতে হয়েছে সংস্থাটিকে। ফলে এসব নৌযান বানিজ্যিক পরিচালনের চেয়ে বসিয়ে রাখলে লোকসানের মাত্রা কমে। তবে অভিযোগ রয়েছে, সংস্থাটির একটি স্বার্থান্বেশী মহল ব্যয় সাশ্রয়ী প্যাডেল হুইল নৌযানগুলোর পরিবর্তে এসব ব্যয়বহুল নৌযান পরিচালন-এ অতিমাত্রায় আগ্রহী।
দুটি স্ক্রু-হুইল নৌযান সংগ্রহের পরে মেরামত ও রক্ষনাবেক্ষনে চরম উদাসীনতায় বিশ্ব ঐতিহ্যেতর স্মারক ৪টি প্যাডেল-হুইল জাহাজই এখন ধংসের পথে। ইতোমধ্যে বিনা দরপত্রে ‘পিএস অস্ট্রিচ’ জাহাজটি একটি বেরকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে ইজারা দেয়া হয়েছে। অপর ৩টি নৌযানেরও জীর্ণদশা। নামে মাত্র জোড়াতালি দিয়ে চলছে। অথচ মূল ইঞ্জিন সহ এসব নৌযান-এর পরিপূর্ণ পূণর্বাসন করলে তা আরো অন্তত দ্ ুদশক চলতে সক্ষম বলে কারিগরি বিশেষজ্ঞগন জানিয়েছেন। ১৯৯৫ সালে নতুন ইঞ্জিন সংযোজন ও পূণর্বাসনের পরে গত প্রায় ২৫ বছরে এসব নৌযানের আর কোন পরিপূর্ণ মেরামত সহ মেজর ওভারহলিং হয়নি।