3:04 pm , July 30, 2019

শাকিল মাহমুদ বাচ্চু, উজিরপুর ॥ উজিরপুরে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে মাদ্রাসার ব্যাটারী চালিত কাভার্ড ভ্যান খালে পড়ে দুই শিক্ষার্থীর ঘটনাস্থলেই মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও আরো আহত হয়েছে ১৬ শিক্ষার্থী। এরমধ্যে গুরুতর অবস্থায় ১০ শিক্ষার্থীকে উজিরপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার ধামুড়া-উজিরপুর সড়কের মুলপাইন নির্মল মাস্টারের বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত দুইশিশু শিক্ষার্থী হলো- মুলপাইন গ্রামের জয়নাল আবেদীনের কন্যা লামিয়া আক্তার (৬) ও সাকরাল গ্রামের সেলিম হাওলাদারের ছেলে আবদুল্লাহ (৭)। আহতদের মধ্যে উজিরপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে শিক্ষার্থী মুক্তা আক্তার, হোসাইন, তাসমিয়া, রহমতুল্লাহ, আতিক, তামিম, রহমান, বেল্লাল, আব্দুল্লাহ, নিশাত ও মুসা মোল্লাকে । প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, উপজেলার মুলপাইন দারুসুন্নাহ নূরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী বহনকারী একটি কাভার্ড ভ্যান সাকরাল থেকে ১৮ শিক্ষার্থীদের নিয়ে মাদ্রাসার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথিমধ্যে মাদ্রাসা থেকে আধা কিলোমিটারদুরে নির্মল মাষ্টারের বাড়ির সামনের সড়কের মোড় ঘোরার সময় চালক নিয়ন্ত্রন হারিয়ে কাভার্ড ভ্যান উল্টে খালের মধ্যে পড়ে। ভ্যানচালক খাল থেকে উঠে ডাক-চিৎকার করলে স্থানীয়রা এসে শিশুদের উদ্ধার করে। কাভার্ড ভ্যানের গেট লক করা থাকায় শিশু শিক্ষার্থীরা বের হতে পারছিল না। লক খুলে শিশুদের বের করে আনা হয়। শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসক দুই শিক্ষার্থী লামিয়া ও আব্দুল্লাহকে মৃত ঘোষনা করেন। ভ্যান লক থাকায় উদ্ধারের পূর্বেই শ্বাসরোধ হয়ে ঘটনাস্থলেই ওই দুই শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। আহত হয় ওই ভ্যানে থাকা আরও ১৬ জন শিক্ষার্থী। আহতদের মধ্যে ৬ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। বাকি ১০ শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উজিরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মাকসুদুর রহমান জানিয়েছেন, শিশুরা পানিতে ডুবে আতংকিত হয়ে পড়েছিল। তারা শারীরিকভাবে তেমন কোন আঘাতপ্রাপ্ত হয়নি। তাদের চিকিৎসা চলছে। উজিরপুর মডেল থানার ওসি শিশির কুমার পাল জানিয়েছেন, ঘটনা শোনার সাথে সাথে পুলিশ ও দমকল ইউনিটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে রিকশাভ্যানটি উদ্ধার করে। এমনকি কোন শিশু নিখোঁজ রয়েছে কিনা তার খোঁজ খবর নেয়া হয়। তবে ঘটনার পর ভ্যান চালক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি। এদিকে ঘটনার পরপরই উজিরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে চিকিৎসাধীন শিশুদের খোঁজখবর নেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রাকিব। সেখানে দুই শিশুর বেশী অসুস্থ থাকায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তার ব্যবহৃত গাড়িযোগে তাদের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।