3:20 pm , July 25, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ চরমোনাই’র বুখাইনগর রাজধর গ্রামের আলোচিত দলিল লেখক রিয়াজ হত্যা মামলায় নাঈম চৌকিদার বাবু নামের সন্ধিগ্ন এক আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় তার কাছ থেকে নিহত রিয়াজের ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে নগরীর সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত নাঈম চৌকিদার বাবু চরমোনাই ইউনিয়নের বুখাইনগর এলাকার রাজধর গ্রামের বাসিন্দা। তবে সে নগরীর ১০ নম্বর ওয়ার্ডস্থ কেডিসি রাজ্জাক স্মৃতি কলোনীতে শ^শুর বাড়িতে থাকে। তিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কোতয়ালী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফিরোজ আল মামুন বলেন, দলিল লেখক রিয়াজ হত্যাকান্ডের পর থেকে তার ব্যবহৃত তিনটি মোবাইল ফোন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে আমি দায়িত্ব গ্রহনের পরে মোবাইল ট্রাকিং পদ্ধতি ব্যবহার করে নিখোঁজ মোবাইলের মধ্যে একটি’র সন্ধান নিশ্চিত হই। পরে বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে মোবাইলটি উদ্ধার সহ ২ জনকে আটক করা হয়।
এসআই ফিরোজ আলম মামুন বলেন, দু’জনকে আটক করা হলেও মুলত নাঈম চৌকিদারকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তাকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে। এছাড়া তার সাথে আটক হওয়া সুজন নামের অপর ব্যক্তিকে সাক্ষী করা হয়েছে। কেননা নাঈম এর কাছ থেকে উদ্ধারকৃত মোবাইল থেকে যে সিম কার্ডটি উদ্ধার করা হয়েছে সেটার মালিক সুজন। তবে মোবাইলটি কিভাবে তার কাছে গেলো সে বিষয়টি আমরা এখনো স্পষ্ট নই। তাই তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করা হবে।
এসআই ফিরোজ আল মামুন বলেন, রিয়াজ হত্যা মামলার জট খুলেছে অনেক আগেই। তবে এখন পর্যন্ত ঘটনার অন্যতম আসামী মাসুম এখনো পলাতক রয়েছে। আশা করছি খুব শিঘ্রই তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে। সে ইতিমধ্যে পুলিশের রেকির মধ্যে পড়েছে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, সম্পত্তি আত্মসাত ও সার্বিক দিক থেকে সুখে থাকতে গত ১৮ এপ্রিল পরকিয়া প্রেমিক ও তার সহকারীকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে দ্বিতীয় স্ত্রী আমিনা আক্তার লিজা খুন করে তার স্বামী চরমোনাই’র বুখাইনগরের বাসিন্দা দলিল লেখক রেজাউল করিম রিয়াজকে। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য লিজাকে পুলিশ আটক করে। পরে লিজা হত্যার দায় স্বীকার করে নেন। পাশাপাশি ঘটনার সাথে তার পরকিয়া প্রেমিক মাসুম ও ইদ্রিস জড়িত রয়েছে বলে তথ্য দেয়। এই ঘটনায় নিহতের ভাই মো. মনিরুর ইসলাম রিপন বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এদিকে মামলায় অগ্রোগতী না থাকা, তদন্ত কাজে ধীরগতী এবং আসামীদের সাথে সক্ষতা গড়ে তোলার অভিযোগে মামলার প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই বশির আহমেদকে রিয়াজ হত্যা মামলা থেকে অব্যহতি দেয়া হয়। পরে কোতয়ালী মডেল থানার চৌকশ পুলিশ অফিসার এসআই ফিরোজ আল মামুনকে এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। এর পর পরই তিনি নিহত রিয়াজের মোবাইল ফোন উদ্ধার সহ একজন গ্রেফতার করেন।