এবার শ্রমিকদের বিরুদ্ধে লঞ্চ মালিকদের অঘোষিত ধর্মঘট এবার শ্রমিকদের বিরুদ্ধে লঞ্চ মালিকদের অঘোষিত ধর্মঘট - ajkerparibartan.com
এবার শ্রমিকদের বিরুদ্ধে লঞ্চ মালিকদের অঘোষিত ধর্মঘট

3:20 pm , July 24, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ‍॥ নৌযান শ্রমিকরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করলেও অঘোষিতভাবে ধর্মঘট পালন করছে বরিশাল-ঢাকা সহ অভ্যন্তরিন নৌ রুটের নৌ-যান মালিকরা। এ কারনে বুধবার রাতে বরিশাল থেকে মাত্র দুটি যাত্রীবাহী লঞ্চ ছেড়ে গেলেও ঢাকা থেকে একটি মাত্র যাত্রীবাহী লঞ্চ বরিশালের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাত্রা শুরু করে। বাকি সবগুলো লঞ্চ নদী বন্দরে নোঙর করে রাখা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ঢাকায় লঞ্চ মালিক সমিতি কার্যালয়ে নৌযান শ্রমিকদের স্বেচ্ছাচারিতা এবং জিম্মিদশা থেকে মুক্তি’র বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত সকল ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষনা দিয়েছেন যাত্রীবাহী লঞ্চ মালিকরা।

এমনকি তাদের এই সিদ্ধান্তের সাথে একাত্ত্বতা প্রকাশ করেছেন পন্যবাহী নৌযান মালিকরাও। যাত্রীবাহী লঞ্চ মালিকদের সংগঠন জাপ এর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও বরিশাল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ¦ সাইদুর রহমান রিন্টু এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ঈদ-কোরবানী আসলেই নৌযান শ্রমিকরা দাবী আদায়ের নামে আন্দোলন শুরু করে। তারা মালিকদের সাথে কোন আলোচনা ছাড়াই ধর্মঘট করে। কোটি কোটি টাকার সম্পদ ফেলে রেখে চলে যায়। তাদের অত্যাচারে আমরা এখন পুরেপুরিভাবে বিরক্ত। তাদের কারনে এখন আর ব্যবসা করা সম্ভব হচ্ছে না।

সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, ইতিপূর্বে নৌযান শ্রমিকদের যে দাবী ছিলো তা আমরা পুরন করে দিয়েছে। এসময় তারা আমাদের লিখিত দিয়েছে যে আগামী ৫ বছরে নতুন করে আর কোন দাবী তোলা বা আন্দোলনে যাবে না। কিন্তু ছয় মাস না যেতেই শ্রমিকরা পুনরায় আন্দোলনের নামে লঞ্চ ফেলে চলে গেছে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে এই লঞ্চ মালিক বলেন, লঞ্চ আমার সম্পদ। শ্রমিকরা এখানে কাজ করে। কিন্তু তাদের মনে হয়েছে লঞ্চ ফেলে রেখে চলে গেছে। আবার মনে হয়েছে তারা লঞ্চে উঠে কাজ শুরু করেছে। মনে হচ্ছে তারাই সব কিছু। কিন্তু আমরা শ্রমিকদের অহেতুক অত্যাচার এবং জিম্মি দশা থেকে মুক্তি চাই। তাই তারা শ্রমিকরা কাজে যোগ দিলেও আমরা লঞ্চ মালিকরা এ বিষয়ে স্থায়ী কোন সিদ্ধান্তে না পৌছানো পর্যন্ত আর লঞ্চ চালাবো না।

আর এ বিষয় নিয়ে বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় রাজধানীর পল্টনে লাঞ্চ মালিক সমিতি কার্যালয়ে সভা করবো। সেখানে যাত্রীবাহী নৌযান মালিকদের পাশাপাশি পন্যবাহী কার্গো মালিকরাও থাকবেন। সেখানে শ্রমিকদের স্বেচ্ছাচারিতা ও জিম্মিদশা থেকে রক্ষা পেতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এর আগ পর্যন্ত বরিশাল-ঢাকা সহ সকল রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন জাপ এর সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু।

এদিকে বিআইডব্লিউটিএ’র বরিশাল নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. কবির হোসেন বলেন, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ৬টি যাত্রীবাহী নৌযান বুধবার সকালে বরিশালে এসে পৌছেছে। ওই ৬টি লঞ্চই বরিশাল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবার কথা। কিন্তু এর মধ্যে শুধুমাত্র কীর্তনখোলা-১০ ও ফারহান-৮ ছেড়ে গেছে। বাকি ৪টি লঞ্চ পন্টুনে বার্দিং অবস্থায় রয়েছে। তাছাড়া ঢাকা থেকে ৬টি লঞ্চ বরিশালে আসার কথা থাকলেও সেখান থেকে শুধুমাত্র টিপু-৭ লঞ্চটি যাত্রী নিয়ে ছেড়ে আসে।

এ প্রসঙ্গে যাত্রীবাহী লঞ্চ মালিকদের সংগঠন জাপ এর সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, বরিশাল থেকে যে দুটি লঞ্চ ছেড়ে গেছে তাতে হজের যাত্রী ছিলো। তাছাড়া লঞ্চ দুটি আগেভাগেই যাত্রী উঠে ভির জমায়। তাই সভাপতির অনুমতি সাপেক্ষে লঞ্চ দুটি বরিশাল থেকে ছেড়ে যায়।

তবে ঢাকা থেকে এমভি টুপু-৭ লঞ্চটি ছাড়ার বিষয়ে মালিক সমিতির কোন অনুমতি ছিলোনা। সমিতির সিদ্ধান্ত ছাড়া ওই লঞ্চটি ছেড়ে যাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে সমিতির নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ বিষয়ে সমিতি নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহন করবেন বলেও জানান লঞ্চ মালিক সমিতির এই নেতা।

উল্লেখ্য, ১১ দফা দাবীতে মঙ্গলবার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে বরিশাল-ঢাকা সহ সারা দেশে নৌযান শ্রমিকরা কর্মবিরতি শুরু করে। নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে কর্মবিরতি চলছিলো। এর ১৬ ঘন্টা পরে বিকাল সাড়ে ৪টায় কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে যোগদেয় শ্রমিকরা। সে অনুযায়ী বরিশাল থেকে অভ্যন্তরিন রুট গুলোতে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়।

কিন্তু রাতে লঞ্চ মালিকরা তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বরিশাল-ঢাকা সহ দুরপাল্লার রুটে যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেয়।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT