বালু মিশ্রিত স্রোতের ঢলে ফেরিতে যানবাহন পারাপারে বিপর্যয় বালু মিশ্রিত স্রোতের ঢলে ফেরিতে যানবাহন পারাপারে বিপর্যয় - ajkerparibartan.com
বালু মিশ্রিত স্রোতের ঢলে ফেরিতে যানবাহন পারাপারে বিপর্যয়

3:19 pm , July 21, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ভারত থেকে ধেয়ে আসা অত্যাধীক বালু মিশ্রিত প্রবল স্রোতের ঢলের কারনে দেশের অভ্যন্তরীন নৌপথে ফেরি চলাচলে ভয়াবহ বিপর্যয় অব্যাহত রয়েছে। ফলে দেশের দক্ষিন ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার সাথে রাজধানী ছাড়াও চট্টগ্রাম অঞ্চল সহ পদ্মা-মেঘনার পূর্বাংশের সাথে সড়ক পরিবহন ব্যাবস্থা ক্রমশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। রবিবার সকাল ৬টার পূর্ববর্তি ২৪ঘন্টায় দেশের প্রধান ফেরি সেক্টরগুলোতে যাবাহন পারাপার মাত্র ৬ হাজার নেমে এসছে। আর পারাপারের অপেক্ষায় ছিল আরো ৩ হাজারের মত যানবাহন। অথচ স্বাভাবিক অবস্থায় দেশের প্রধান ফেরি সেক্টরগুলোতে প্রায় ১০ হাজার যানবাহন পারাপার হয়ে থাকে। ফেরি সেক্টরের এ বিপর্যয়ের ফলে পাটুরিয়াÑদৌলতদিয়া, শিমুলিয়াÑকাঠালবাড়ী, চাঁদপুরÑশরিয়াতপুর, ভোলাÑলক্ষ্মীপুর এবং লাহারহাটÑভেদুরিয়ার ফেরি ঘাটগুলোতে বিপুল সংখ্যক যানবাহনের হাজার হাজার যাত্রী এবং পরিবহন কর্মীদের মানবিক সংকট ক্রমশ বাড়ছে। রবিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত পাটুরিয়া সেক্টরে প্রায় ৬শ, মাওয়া সেক্টরে সাড়ে ৯শ, চাঁদপুর সেক্টরে প্রায় ৯শ, ভোলা-লক্ষ্মীপুর সেক্টরে ৩শ এবং লাহারহাটÑভেদুরিয়া সেক্টরে শতাধীক যানবাহন আটকে ছিল। এমনকি প্রবল শ্রোতের সাথে অত্যাধিক মাত্রার বালুর কারনে ঘন ঘর ফেরি বিকল হচ্ছে। ফলে যানবাহন পারাপারও প্রায় অর্ধেক হৃাস পেয়েছে। অত্যাধিক বালু মিশ্রিত প্রবল শ্রোতের কারনে প্রপেলারের স্যাফট-এর স্ট্যান টিউব ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে ফেরিগুলোর মূল ইঞ্জিন এবং গীয়ারও অকার্যকর হয়ে পড়ছে ঘন ঘন। মাওয়া সেক্টরের পদ্মার তীব্র শ্রোত অতিক্রম করতে পারছেনা ‘ডাম্ব ফেরি’গুলো। এ সেক্টরের ৭টি ডাম্বফেরি বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে রাজধানীর সাথে বরিশাল ও খুলনা বিভাগ সহ ফরিদপুর অঞ্চলের ২১টি জেলার সংক্ষিপ্ত সড়ক পথে যানবাহন পারপার মারাত্মক বিপর্যয়ের কবলে। এসেক্টরে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় যানবাহন পারাপার হয়েছে মাত্র ১ হাজার ৩২৫টির মত। যা স্বাভাবিক সময়ের অর্ধেকেরও কম। আর অপেক্ষমান ছিল প্রায় ৮শ। এদিকে প্রবল শ্রোতের কারনেও আরিচার সেক্টরে পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়া, মাওয়া সেক্টরের শিমুলিয়াÑকাঠালবাড়ী ও মঙ্গলমাঝির ঘাট, চাঁদপুরের সেক্টরের শরিয়তপুর, ভোলাÑলক্ষ্মীপুর এবং বরিশালÑভোলার মধ্যবর্তি ভেদুরিয়াÑলাহারহাট রুটে যানবাহন পারাপার যথেষ্ঠ ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বিআইডব্লিউটিএ এবং টিসি’র দায়িত্বশীল সূত্রের মতে, সীমান্তের ওপার থেকে অত্যাধিত বালু মিশ্রিত প্রবল শ্রোতের ঢল দেশের অভ্যন্তরীন নদ-নদী দিয়ে বঙ্গোপসাগরে প্রবাহিত হচ্ছে। পাশাপাশি গত সপ্তাহখানেক ধরে দেশের উত্তরাঞ্চল সহ মধ্যাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমান স্বাভাবিকের চেয়ে হৃাস পাওয়ায় উজানের ঢলের সাথে মিশ্রত বালুর বেশীরভাগই সাগরে পতিত হচ্ছে। ফলে এসব বালু সাগর মোহনা পর্যন্ত বিস্তৃত হচ্ছে। সাথে প্রবল শ্রোতে ফেরি সহ সব ধরনের নৌযান চলাচলই ব্যাহত হচ্ছে। প্রবল শ্রোতের সাথে অত্যাধীক বালুর কারনেই চলতি মাসে বিআইডব্লিউটিসি’র ফেরি সেক্টরগুলোতে অন্তত ২৫টি ফেরি বিকল হয়েছে। সংস্থার কারিগরি বিভাগের কর্মীরা দিনরাত কাজ করে একটি ফেরি সচল করার আগে আরেকটি বিকল হচ্ছে। রবিবার দুপর পর্যন্ত আরিচা সেক্টরের পাটুরিয়াÑদৌলতদিয়া এবং মাওয়া সেক্টরের শিমুলিয়াÑকাঠালবাড়ী রুটের ২টি করে রো-রো ফেরি বিকল ছিল। এছাড়া প্রবল শ্রোত অতিক্রম করে চলতে না পাড়ায় মাওয়া সেক্টরে ৭টি ডাম্ব ফেরির সবগুলোই বসিয়ে রাখতে হয়েছে।
ভোলাÑলক্ষ্মীপুর রুটের ৪টির মধ্যে ১টি কে-টাইপ ফেরি বিকল হয়ে পড়ায় ঐ সেক্টরে রবিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ঘন্টায় মাত্র ১শ যানবাহন পারাপার সম্ভব হয়েছে। অপেক্ষমান ছিল আরো প্রায় ৩শ। সাগর মোহনার নিকট দুরের উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিয়ে ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ উপমহাদেশের সর্বাধীক দুরত্বের এ ফেরি সেক্টরে চট্টগ্রাম অঞ্চলের সাথে বরিশাল সহ দক্ষিণÑপশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার সড়ক যোগাযোগ রক্ষা করা দুরুহ হয়ে পড়ছে। চট্টগ্রামÑবরিশালÑখুলনা মহাসড়কের বরিশাল ও ভোলার মধ্যবর্তি ভেদুরিয়াÑলাহারহাট রুটে ৪টি ইউটিলিটি ফেরি বৃহস্পতিবার সকালের পূর্ববর্তি ২৪ঘন্টায় প্রায় ৩শ যানবাহন পারাপার করলেও অপেক্ষমান ছিল আরো শতাধীক। এসব বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিআইডব্লিউটিসি’র চেয়ারম্যান ও পরিচালক-কারগরি ও বানিজ্যর সাথে আলাপ করার চেষ্টা করেও তাদের টেলিফোন ও সেল ফোনে পাওয়া যায়নি।

https://youtube.com/mubinmuyein

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT