3:04 pm , July 21, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ জামিন হলো না বরগুনার আলোচিত ডিস ব্যবসায়ী ও কলেজ ছাত্র রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী ও নিহতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির।
তার পক্ষে করা জামিনের আবেদন আপিল শুনানী শেষে জামিন না মঞ্জুর করেন বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. সিরাজুল ইসলাম গাজী। এর আগে রোববার (২১ জুলাই) সকাল ১১টায় শুরু হয় আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি’র জামিনের শুনানি। এতে মিন্নি’র পক্ষে জামিন শুনানি করেন বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মাহবুবুল বারী আসলাম এ্যাডভোকে গোলাম মোস্তফা কাদের, এ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ ইমন, এ্যাডভোকেট দীপক চন্দ্র হালদার, এ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল নোমান, এ্যাডভোকেট সাহিদা বেগম, এ্যাডভোকেট আব্দুর রশীদ ও এ্যাডভোকেট মো. মিজানুর রহমান সহ ১৩ আইনজীবী। এদের মধ্যে চারজন ঢাকা থেকে আসা আসকের নিজস্ব আইনজীবী।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বরগুনা আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) সঞ্জিব দাস বলেন, মুলত তিনটি কারনে মিন্নিকে জামিন দেয়া হয়নি। যার মধ্যে একটি কারণ মিন্নি নিজেই। সে আদালতে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।
এছাড়া মামলার দ্বিতীয় আসামী রিফাত ফরাজী জানিয়েছে মিন্নি হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত। পাশাপাশি অপর আসামী রাব্বি আকন সেও বলেছে মিন্নি হত্যাকান্ডের মাস্টার মাইন্ড ছিলো। ঘটনার আগে মিন্নি এদের সাথে যোগাযোগ করেছে। তাদের সাথে পরিকল্পনা করেছে। এ কারনেই মিন্নির জামিন আবেদন না মঞ্জুর করা হয়।
এদিকে মিন্নি’র পক্ষের আইনজীবী আইন ও সালিশ কেন্দ্রের চার সদস্য’র প্রতিনিধি দলের সিনিয়র কো-অর্ডিনেটর আবু আহম্মেদ ফয়জুল কবির বলেন, পুনরায় মিন্নি’র জামিন আবেদন করা হবে। এজন্য আমরা বেশ কিছুদিন বরগুনায় অবস্থান করবো। মিন্নি’র পক্ষে লড়বার জন্য এখনো দেড়শ জন আইনজীবী প্রস্তুত রয়েছে। প্রয়োজনে তারাও বরগুনায় আসবেন।
অপরদিকে আসকের তদন্ত কর্মকর্তা হাসিবুর রহমান বলেন, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে আমরা রিফাত হত্যার কারণ সহ সত্যি ঘটনা বের করে আনবো। কোন নিরপরাধ যাতে শাস্তি না পায় সে বিষয়টিতে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। এ ক্ষেত্রে সর্ব মহলের সহযোগিতা প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, রিফাত শরীফকে হত্যার অভিযোগ এনে তার বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে নামধারী এবং ৪/৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে প্রধান সাক্ষী ছিলেন নিহতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি।
হত্যাকান্ডের ১৯ দিন পরে ১৬ জুলাই প্রধান সাক্ষী মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ লাইন্সে নিয়ে যায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। একই দিন দীর্ঘ ১২ ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদের পরে রাত ৯টার দিকে মিন্নিকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।
এর পর ১৭ জুলাই বিকাল সোয়া ৩টায় বরগুনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিন্নিকে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে নেয়ার ৪৮ ঘন্টার মাথায় ১৯ জুলাই মিন্নিকে আদালতে হাজির করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেয়া হয়। এর পর গত শুক্রবার তাকে কারাগারে প্রেরন করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় এ পর্যন্ত ১৫ জন আসামি গ্রেফতার হয়েছে। যাদের মধ্যে ১৪ জন হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।