3:17 pm , July 16, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ শেষ পর্যন্ত আর বাঁচানো গেল না কাভার্ড ভ্যানের চাপায় গুরুতর আহত মহানহর পুলিশের ট্রাফিক সার্জেন্ট গোলাম কিবরিয়া মিকেলকে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৫৮ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষনা করেন। মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান ও ঢাকা মেডিকেল কলেজে (ঢামেক) এর ক্যাম্প পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আবদুল খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দুই বছর বয়সী এক ছেলে সন্তানের জনক সার্জেন্ট মিকেল পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার সুবিদখালী বন্দরের বাসিন্দা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ইউনুস আলী সরদারের বড় ছেলে।
এদিকে সার্জেন্ট কিবরিয়াকে চাপা দেয়ার ঘটনায় মহানগরীর বন্দর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। যমুনা গ্রুপের কাভার্ডভ্যান চালক আব্দুল জলিল সিকদারকে আসামী করে ১৫ জুলাই রাতে ট্রাফিক পরিদর্শক রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
মামলায় চালক টাঙ্গালের মির্জাপুরের বাসিন্দা মো. জলিল সিকদারের বিরুদ্ধে বেপরোয়া গতিতে যান চালানো, সিগন্যাল অমান্য, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, সরকারি সম্পত্তির (মোটরসাইকেল) ক্ষতিসাধন, হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণসহ ৭টি ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে বলে বন্দর থানার অফিসার ইন-চার্জ(ওসি) গোলাম মোস্তফা হায়দার নিশ্চিত করেছেন।
অপরদিকে গতকাল মঙ্গলবার রাতে নিহত সার্জেন্ট মিকেলকে বরিশালে নিয়ে আসা হয়েছে। এর আগের রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের শহীদ শিরু মিয়া মিলনায়তনে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। আজ বুধবার বরিশাল পুলিশ লাইন্সে তার প্রতি শ্রদ্ধা ও বাহিনীর সম্মাননা জানানো হবে। পরে পুলিশ লাইন্সে তার দ্বিতীয় জানাজা হবে। সেখান থেকে তার নিজ গ্রামের বাড়ীতে নেয়া হবে। সেখানে দাফন করা হবে বলে পুলিশ সুত্রে জানা গেছে।
সোমবার বেলা সোয়া ১২টার দিকে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের কর্নকাঠিতে বরিশাল বিশ^বিদ্যালয় সংলগ্ন জিরো পয়েন্ট এলাকায় পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলেন সার্জেন্ট গোলাম কিবরিয়া মিকাইল।
এসময় যমুনা গ্রুপের পটুয়াখালীগামী বেপরোয়া গতির একটি কাভার্ডভ্যানকে (ঢাকা মেট্রো-উ-১২-২০৫৪) থামাতে সংকতে দেন সার্জেন্ট কিবরিয়া। কিন্তু কাভার্ডভ্যানটির চালক সংকেত অমান্য করে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করে।
তখন সার্জেন্ট কিবরিয়া মোটরসাইকেল নিয়ে ধাওয়া করে কাভার্ডভ্যানটি আটকের চেষ্টা করে। সার্জেন্ট কিবরিয়া ট্রাকের আগে উঠে সিগনাল দিলে কাভার্ডভ্যান চালক জলিল সিকদার তাকে চাপা দিয়ে চলে যায়। এতে কিবরিয়ার দুই পায়ের চার স্থানে ভেঙে যায় এবং মুত্রথলি ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
পরে স্থানীয়র তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তিকরে। পাশাপাশি কাভার্ডভ্যান ও পালিয়ে যাবার চেষ্টা কালে চালক জলিল সিকদারকে আটক করে পুলিশ।
এদিকে সার্জেন্ট কিবরিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে সোমবার বিকাল সোয়া ৫টার দিকে তাকে এয়ার এ্যাম্বুলেন্স যোগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তিকরা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তাকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরী বিভাগের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। এর পর সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সকালে তার মৃত্যু হয়।