3:10 pm , July 8, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ কলাপাড়া উপজেলার চরচাপলী গ্রামের মেধাবী শিক্ষার্থী মানসুরা আক্তারের পাশে দাড়িয়েছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ১০ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এটিএম শহিদুল্লাহ কবির। গত ৫ই জুলাই দৈনিক আজকের পরিবর্তনের কুয়াকাটা প্রতিনিধি মিজানুর রহমান বুলেট মেধাবী শিক্ষার্থী মানসুরা মিমকে নিয়ে “মহিপুরে স্বপ্ন ভঙ্গে মেধাবীর কান্না” একটি আর্টিকেল লিখেন। ঐ লেখাটি দেখে এটিএম শহিদুল্লাহ কবির গতকাল দুপুরে তার কার্যালয়ে মিমকে লেখা পড়ার সুবিধার্থে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেন। এ সময় দৈনিক আজকের পরিবর্তন সম্পাদক কাজী মিরাজ উপস্থিত ছিলেন। মানসুরা আক্তার মিম অর্থ সংকটের কারণে পঞ্চম শ্রেণি পাশ করে প্রাথমিকের গন্ডি পেরোলেও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেনি। মাত্র ১০ বছর বয়সে তার সহপাঠীরা যখন বই খাতা নিয়ে স্কুলে যেতো, ঠিক সেই সময়ে তাকে যেতে হয়েছে সুতার কারখানায়। দুই বছর সুতার কারখানায় দিনরাত কাজ করার কারনে ৬ষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে পড়া হয়নি মীমের। ক্ষুধা দারিদ্রতার সাথে যুদ্ধ করে দুই বছরের জমানো কিছু টাকা দিয়ে পরিবারের অসম্মতিতে অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হয় মীম। পটুয়াখালীর মহিপুর থানার সাগর ঘেষা ধুলাসার ইউনিয়নের চর চাপলী গ্রামের রিকশা চালক নাসির হাওলাদারে মেয়ে মীম গ্রামে গ্রামে ঘুরে পড়ার ফাঁকে প্রাইভেট পড়িয়ে শিক্ষাযুদ্ধ চালিয়ে এ বছর এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। প্রাইভেট পড়িয়ে জমানো ১২শ টাকা দিয়ে আলহাজ্ব জালালউদ্দিন কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হলেও আর্থিক সংকটে উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন অধরাই থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। মীমের ঘরে অসুস্থ্য মা জাকিয়া বেগম মৃত্যুশয্যায়। প্রায় দুই মাস হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা করালেও আর্থিক সংকটে এখন ঘরে বসে কোন রকম চিকিৎসা হচ্ছে। বাবা রিকশা চালিয়ে যা পায় তা দিয়ে অসুস্থ্য মায়ের ঔষধ, দু’মুঠো ভাত যোগাড় ও পঞ্চম শ্রেণিতে পড়–য়া ভাই আলাইহীমের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে মীমকে কলেজে পড়ানো তাঁর পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাই ঘরে রান্নার কাজ, অসুস্থ্য মায়ের সেবা শুশ্রুসা করে শিক্ষাজীবনের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে গ্রামে ঘুরে ঘুরে কয়েকটি প্রাইভেট পড়িয়ে কলেজে ভর্তি হলেও এখনও বই কেনা হয়নি মীমের। নেই কলেজে যাওয়ার একটু ভালো পোষাক। মায়ের অসুস্থ্যতায় আর্থিক দৈণ্যতায় চিকিৎসা করাতে না পারার দুঃখে ঘরের কোনে বসে গুমড়ে কাঁদলেও ভবিষ্যতে তার মায়ের মতো কেউ যাতে কষ্ট না পায় তাই ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন মীমের। কিন্তু মেধাবী এ মীমের স্বপ্ন হয়তো থেমে যাবে উচ্চ শিক্ষা শুরুর মাঝ সিড়িতে। তাই উচ্চবিত্তদের কাছে মিমের লেখা পড়া চালিয়ে যাবার জন্য তার মা সহায়তা চেয়েছেন।