2:50 pm , July 2, 2019
কলাপাড়া প্রতিবেদক ॥ নিজ বাস ভবনের সম্মুখে মোটরসাইকেল মহড়া দিয়ে সন্ত্রাসীদের গুলি ছোড়ার ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন কলাপাড়া উপজেলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং মুক্তিযোদ্ধা এসএম রাকিবুল আহসান। গত সোমবার রাতে কলাপাড়া পৌরশহরের এতিমখানাস্থ বাস ভবনের সম্মুখে গুলি বর্ষনের পর গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কলাপাড়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি জানায়, গত ৩১ মার্চ কলাপাড়া উপজেলা পরষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে অংশ নিয়ে নির্বাচিত হই। নির্বাচন চলাকালিন সময় স্থানীয় এক র্শীষ নেতার প্রত্যক্ষ নির্দেশে উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি অংশ আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর বিজয়ী করার অপচেষ্টা চালায়। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পরাজিত বিদ্রোহী প্রার্থী এবং ওই শীর্ষ নেতার নির্দেশে এক দল বিশৃঙখল সন্ত্রাসিরা উপজেলার মহিপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধরণ সম্পাদক ও প্রবীন নেতা মো. নুরুল ইসলাম, উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল রহমান তালুকদার, ছাত্রলীগ নেতা শুভসহ অসংখ্য নেতা-কর্মী এবং সমর্থক বৃন্দদের রক্তাক্ত যখম এবং মারধর করা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালানো হয়েছে। এমনকি বর্তমানে প্রতিদিন কলাপাড়া পৌরশহরে মোটরসাইকেল যোগে গুন্ডাদের প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া চলে। এবিষয়টি কলাপাড়া থানা, মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং জেলা আইনশৃঙ্খলা উপস্থাপন করেছি। কিন্তু এদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি।
তার ধারাবাহিকতায় গত সোমরা রাত নয়টা ১০ মিনিটের সময় নিজ বাস ভবনে দলীয় কর্মী মো. তৈয়বুর রহমান ও সাজ্জাদুল ইসলাম চানুর সঙ্গে কথা বলছিলাম। এর মধ্যে ১৩ থেকে ১৫টি মোটরসাইকেল যোগে একদল লোক এসে আমার ও বতর্মান সাংসদ অধ্যক্ষ মহিব্বুর রহমান এর বাসার সামনে এসে মোটরসাইকেল গুলো সাড়িবদ্ধ ভাবে রেখে অবস্থান নেয়। এরপরই হঠাৎ গুলির শব্দ শুনে আমার সঙ্গে থাকা তৈয়বুর রহমান ও সাজ্জাদুল ইসলাম চানু তাদের গুলির ছোড়ার বিষয় জানতে চাইলে তারা উত্তর দেয় ‘ট্রান্সমিটার বিষ্ফোরণ হয়েছে, মোটরসাইকেলের চাকা বিষ্ফোরন হয়েছে। অথচ তাদেও দেওয়া বর্ণনা মাপিক সে সব কিছুই হয়নি। আমার বাসার সামনে শর্টগান দিয়ে গুলি ছোড়া হয়েছে। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে নিশ্চিত হয়ে বলছি, শর্টগাণ দিয়ে গুলি ছোড়া হয়েছে। এরপই আমার প্রতিবেশী সাংসদের বাসায় তিনি বসবান না করার সুবাদে সেখানে বসবাসকৃত তার আত্মীয় আনিচুর রহমানের কাছে ঘরের ভিতর কে আছে জানতে চাইলে সে জানায়, ঘরের ভিতর ছাত্র নেতা আশিক তালুকদার অবস্থান করছে। অপরিচিত লোক জন আগমনের বিষয় জানতে চাইলে আশিক তালুকদার তাকে উত্তরে জানায়, তারা তার সঙ্গে দেখা করতে এসেছে। গুলি ছোড়ার বিষয়ে রাতেই কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জালাল উদ্দিন আহমদ, কলাপাড়া থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন।
এঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে মঙ্গলবার কলাপাড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরীর প্রস্তুতি চলছে বলে উপজেরা চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের অবহিত করেন এবং একই সঙ্গে তিনি লিখিত বক্তব্যে জানান, বতর্মানে তিনি দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের প্রতিটি মুহুর্ত আতঙ্কেও মধ্যে কাটিয়েছি। জীবনের শেষ মুহুর্তে আমি ও আমার পরিবার কলাপাড়াবাসীর সার্বিক সহযোগিতা প্রার্থনা করছেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এস,এম রাকিবুল আহসান বলেন, তার বাসার সম্মুখে শর্টগানের গুলি ছোড়ার সঙ্গে আশিক তালুকদারের লোকজন জড়িত আছে।
এব্যাপারে ছাত্রলীগ নেতা আশিক তালুকদার জানায়, আমিসহ মুহিব ভাইর স্বজনরা ঘরের ভিতর ছিলাম। কিন্তু বাইওে কি হয়েছে তা আমরা জানতামনা। ঘরের বাইরে কারা ছিলো তা আমি জানতামই না। ঘর থেকে বের হয়ে দেখি বাইরে থানা পুলিশসহ অন্যান্যরা। গুলি ছোড়ার বিষয় আমার সম্পৃক্ততা নেই। আমার ছাত্র রাজনৈতিক দীর্ঘ সময়ে সশস্ত্র রাজনীতিতে বিশ্বাসী ছিলাম না এখনো নেই। কিছু দিন পর কলাপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগ কমিটি গঠন কার্যক্রম শুরু হবে। সেই কমিটিতে আমিসহ প্রকৃত ছাত্র এবং ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বিধায় আমার বিরুদ্ধে এমন সড়যন্ত্র চালাচ্ছে একটি মহল। আমাকে জড়িয়ে অভিযোগ উপস্থাপন করা সেই সড়যন্ত্রের অংশ। কলাপাড়া থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম জানান, এঘটনায় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দুপুরেই একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গ তদন্ত করে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। উপজেলা আওয়ামী লীগের বাসার সম্মুখে অনাকাঙ্খিত ঘটনার পর বর্তমানে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে।
সাংবাদি সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, কলাপাড়া পৌর মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার, কুয়াকাটা পৌর মেয়র আঃ বারেক মোল্লা। জেলা পরিষদের সদস্য মো. আসলাম হাওলাদার, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম বাবুল খান এবং উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে ১১ জন চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন।