2:45 pm , July 2, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রোগীর কাছ থেকে পরীক্ষা নিরীক্ষার অতিরিক্ত ফি রাখার অভিযোগে নগরীর সদর রোডের ডায়াগনস্টিক সেন্টার বেলিভিউ মেডিকেল সার্ভিসকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর এই জরিমানা আদায় করেন। পাশাপাশি আদায়কৃত জরিমানা থেকে ২৫ শতাংশ টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে অভিযোগকারীকে রোগীর স্বজনকে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ বরিশাল জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শাহ সোয়াইব মিয়া অভিযোগের বরাত দিয়ে বলেন, গত ১৩ জুন পাথরঘাটার বাসিন্দা নজমুল হক সেলিমের স্ত্রীকে রোগ দেখানোর জন্য সদর রোডের বেলভিউ মেডিকেল সার্ভিসে বক্ষব্যাধি চিকিৎসক ও শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. সিদ্দিকুর রহমানের কাছে নিয়ে আসা হয়। এ সময় তিনি রোগীর পরীক্ষা নিরীক্ষা বেলভিউ’র নিজস্ব ল্যাব থেকে করাতে বলেন। এজন্য তিনি রোগীর ব্যবস্থাপত্রে পরীক্ষা নিরীক্ষার ফি ১০ শতাংশ কম রাখার জন্য লিখে দেন।
শাহ সোয়াইব মিয়া জানান, রোগীর স্বজনরা অন্যান্য পরীক্ষা নিরীক্ষার পাশাপাশি দুটি এক্সরেও করিয়েছেন। এজন্য তাদের কাছ থেকে ১০ শতাংশ কমে পরীক্ষার ফি বাবদ রাখা হয় ৪৫০ টাকা। পরবর্তীতে একই পরীক্ষা গত ২৪ জুন নগরীর গির্জামহল্লায় মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসে করানো হয়। সেখানে একই পরীক্ষার ফি রাখে সাড়ে ৩শ টাকা। এ বিষয়টি নিয়ে রোগীর মেয়ে উম্মে মারজান ছোঁয়া বেলভিউ’র বিরুদ্ধে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করেন। উম্মেল মারজান ছোঁয়া বলেন, ২৪ জুন পুনরায় বেলভিউ মেডিকেল সার্ভিসে বক্ষব্যধি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সিদ্দিকুর রহমানের কাছে রোগীকে নিয়ে যান। ওই দিনও ডা. সিদ্দিকুর রহমান একগাধা পরীক্ষা নিরীক্ষা লিখে দিয়ে বেলভিউ থেকে করাতে বলেন। তখন রোগীর লোক ভেলভিউতে অরিক্ত টাকা নেয়ার কথা বলে মেডিনোভা থেকে পরীক্ষা করানোর অনুমতি চান। এতে ডা. সিদ্দিকুর রহমান নিজের পার্সেন্টিজ হারানোর ভয়ে রেগে রোগীর স্বজনদের সাথে অসৌজন্যমুলক আচরণ করেন। ফলে এই ঘটনায় ২৬ জুন উম্মে মারজান ছোঁয়া ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করেন। অভিযোগ করায় বেলভিউ থেকে ফোন করে রোগীর স্বজনদের পাল্টা মামলায় ফাঁসানো সহ নানান ধরনের হুমকি দেয়া হয় বলে অভিযোগ ছোঁয়ার।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শাহ সোয়াইব মিয়া বলেন, অভিযোগ পেয়ে আমরা বেলভিউ মেডিকেল সার্ভিস সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে তদন্ত করেছি। এতে দেখা যায় অন্যান্য ডায়াগনস্টিক সেন্টারের থেকে বেলভিউ মেডিকেল সার্ভিসে ১০ শতাংশ ছাড় দেয়ার পরেও নির্ধারিত ফি’র থেকে ১০০ টাকা অতিরিক্ত আদায় করা হয়েছে। এমনকি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের থেকে মূল্য তালিকায় এক্সরে পরীক্ষার ফি ১শ টাকা বাড়তি লেখা রয়েছে।
তিনি বলেন, অভিযোগের সত্যতা এ বিষয়ে শুনাণির জন্য দিন ধার্য্য করে বেলভিউ মেডিকেল সার্ভিস কর্তৃপক্ষকে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ জেলা কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়। তারা হাজির হলেও পূর্বের মূল্য তালিকা পরিবর্তন করে ৪৫০ টাকা’র স্থলে ওই এক্সরের ফি ৩৫০ টাকা লিখে নিয়ে আসে। যা ধরা পড়ে যায় ভোক্তা অধিকারের কাছে। এজন্য বেলভিউ মেডিকেল সার্ভিসকে ২০ হাজার টাকা জরিমানার পাশাপাশি পরবর্তীতে এ ধরনের কার্যক্রম না করার জন্য সতর্ক করা হয়। সেই সাথে ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ এর (৪) ধারা অনুযায়ী আদায়কৃত জরিমানার ২৫ শতাংশ অর্থাৎ ৫ হাজার টাকা অভিযোগকারী উম্মে মারজান ছোঁয়ার হাতে তুলে দেন ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তা শাহ সোয়াইব মিয়া।