ইলিশ শূন্য পোর্ট রোডর পাইকারী মাছ বাজার ইলিশ শূন্য পোর্ট রোডর পাইকারী মাছ বাজার - ajkerparibartan.com
ইলিশ শূন্য পোর্ট রোডর পাইকারী মাছ বাজার

3:18 pm , June 28, 2019

পরিবর্তন ডেস্ক ॥ মৌসুমের এই সময়ে ইলিশে সয়লাব থাকার কথা দক্ষিণের সবচেয়ে বড় ইলিশ মোকাম পোর্ট রোড মৎস্য আড়ত। কিন্তু সাগরে সব ধরনের মাছ শিকারে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা এবং বৃষ্টি না থাকা সহ তীব্র গরমের কারণে অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতেও পাওয়া যাচ্ছে না কাঙ্খিত ইলিশ। তাই অনেকটা ইলিশ শূন্য বলা যায় বরিশালের পোর্ট রোডের ইলিশ মোকাম। এতে করে কর্মহীন হয়ে পড়েছে হাজার হাজার ইলিশ শ্রমিক। এদিকে সাগর মোহনায় এবং অভ্যন্তরীণ নদীতে ধরা পড়া কিছু ইলিশ বাজারে এলেও দাম চড়া। যা সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে বলছেন ক্রেতারা। যদিও আগামী কয়েক দিন পর অভ্যন্তরীণ নদী এবং সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে আশা বরিশাল মৎস্য বিভাগের। অভ্যন্তরীণ নদ-নদী এবং সাগরে সারা বছরই কম-বেশি ইলিশ পাওয়া যায়। কিন্তু জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৪ মাস ইলিশের ভরা মৌসুম। মৌসুম শুরুর প্রাক্কালে প্রতিবছর এই সময় শত শত মণ ইলিশে সয়লাব থাকতো বরিশালের ইলিশ মোকাম। গভীর সমূদ্র এবং অভ্যন্তরীণ নদীতে শিকার করা ইলিশ নিয়ে ব্যস্ততম সময় কাটতো পাইকার, আড়তদারসহ শ্রমিকদের। কিন্তু এ বছর ব্যতিক্রম। আড়ত মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার কারণে সাগরে মাছ ধরতে পারছে না জেলেরা। পানি কম থাকায় অভ্যন্তরীণ নদীতেও মাছ আসছে না। এ কারণে অনেকটা ইলিশ শূন্য বরিশালের মোকাম। ইলিশ ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা জানান, জাঁটকা শিকারে প্রতি বছর মৎস্য বিভাগের ৮ মাসের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এছাড়া অভয়াশ্রমে মাছ শিকারে ২ মাসের এবং মা ইলিশের ডিম নিরাপদ প্রজননের জন্য ইলিশ শিকারে ২২দিনের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এর উপর আবার নতুন করে সমূদ্রে মাছ শিকার ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এ কারণে জেলেরা সারা বছরই নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে নদী-সাগরে মাছ শিকার করতে পারছে না। তাই মোকামগুলোতেও ইলিশের সরবরাহ শূন্যের কোটায়। গত দুই দিন ধরে অভ্যন্তরীণ নদী এবং সাগর মোহনায় জেলেদের জালে ধরা পড়া ৫০ থেকে ৬০ মণ ইলিশ এসেছে বরিশাল মোকামে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দামও ছিল বেশ চড়া। শুক্রবার বরিশালের মোকামে ৬শ’ থেকে ৯শ’ গ্রাম (এলসি) সাইজ প্রতি মণ ইলিশ ৪৪ হাজার, ১ কেজি সাইজের প্রতি মণ ৫৫ হাজার, ১ হাজার ২শ’ গ্রাম সাইজ প্রতি মণ ৬৫ হাজার এবং ১ কেজি ৪শ’ গ্রাম সাইজ প্রতি মণ ৮০ হাজার এবং দেড় কেজি সাইজের প্রতি মণ ইলিশ পাইকরী বিক্রি হয়েছে ৯০ থেকে ৯২ হাজার টাকায়। চড়া দাম হওয়ায় মানুষ ইলিশের স্বাদ ভুলে যেতে বসেছে বলে মন্তব্য করেছেন পোর্ট রোডের মাছ বাজারের ক্রেতা মোশারফ হোসেন। এত দাম দিয়ে সাধারণ জনগণের পক্ষে ইলিশ কিনে খাওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা। এদিকে মোকামে ইলিশের সরবরাহ কম হওয়ায় শ্রমিকরাও বেকার হয়ে পড়েছে। তাদের অনেকেই বিকল্প পেশা বেছে নিয়েছেন বলে জানান কর্মহীন শ্রমিকরা। বরিশাল জেলা মৎস্য দপ্তরের কমকর্তা (ইলিশ) ড. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, এমনিতেই তীব্র গরম, তার উপর নদীতেও পানি কম। এ কারণে সাগরের মাছ নদীতে আসছে না। তাই জেলেদের জালে ইলিশও ধরা পড়ছে না। তবে আগামী ২৩ জুলাই নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে এবং বৃষ্টি-বর্ষা হলে অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতেও প্রচুর ইলিশ পড়বে। তখন জেলে, আড়তদার ও শ্রমিকদের মুখে হাঁসি ফুটবে বলে আশা করেন ইলিশ বিশেষজ্ঞ ড. বিমল চন্দ্র দাস। অপরদিকে বাজারে ইলিশের সরবরাহ কম এবং দাম চড়া হওয়ায় অন্যান্য মাছের দামও তুলনামুলক বেড়েছে বলে জানান বেসরকারি চাকরিজীবী নুরুল ইসলাম নুরু।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT