3:08 pm , June 24, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ নারায়নগঞ্জের স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে উজিরপুরে এনে হত্যা মামলার প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সেই সাথে হত্যাকান্ডের রহস্যও উদঘাটন করেছে তারা। লেনদেন সংক্রান্ত কারনে স্বর্ণ ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম চৌধুরীতে (৪৮) নারায়নগঞ্জ থেকে অপর স্বর্ণ ব্যবসায়ী সহ চারজন তাকে অপহরন করে উজিরপুরে এনে হত্যার পর লাশ গুম করতে পেট কেটে পরিত্যক্ত পুকুরে ফেলে দেয়া হয়। গতকাল সোমবার নগরীর পুলিশ লাইন্স এর ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে জেলা পুলিশ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত ৭ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উজিরপুর উপজেলার মুগাকাঠি গ্রামের হালিম মোল্ল্যার বাড়ি সংলগ্ন ঠান্ড বিবি’র খালের উত্তর পাশে ভরত এর ছাড়া বাগান বাড়ির পুকুর থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সহায়তায় লাশ সনাক্ত করা হয়। উদ্ধার হওয়া মৃত ব্যক্তির নাম নজরুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি কুমিল্লা সদর থানাধিন শালধর স্বর্ণকার পাড়া’র মৃত রূপ মিয়া চৌধুরীর ছেলে। ব্যবসার স্বার্থে পরিবার পরিজন নিয়ে ২৫ বছর ধরে নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের ১নং বাকাইল মোবারক শাহ সড়কে ভাড়া বাসায় বসবাস করতো। স্থানীয় বাবুরাইল এলাকায় তার চৈতি জুয়েলার্স নামের স্বর্ণের দোকান রয়েছে।
পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বলেন, লাশ উদ্ধারের ঘটনায় নিহতের ছেলে মুন্না চৌধুরী বাদি হয়ে উজিরপুর মডেল থানায় ৮ জুন একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর -০৬। ওই মামলার তদন্তভার দেয়া হয় উজিরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হেলাল উদ্দিনকে।
পুলিশ সুপার জানান, তদন্ত কর্মকর্তা বিশ^স্থ সোর্স নিয়োগ এবং তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার সাথে জড়িত আবুল তালুকদার (৪০) নামের এক আসামীকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। সে উজিরপুরের কাজিরা গ্রামের মৃত খালেক তালুকদারের ছেলে এবং নারায়নগঞ্জের বাবুরাইল এলাকার অলংকারৎ ব্যবসায়ী।
পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আবুল তালুকদার স্বর্ণ ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম চৌধুরীকে হত্যার দায় স্বীকার করে। স্বীকারক্তিতে আবুল তালুকদার পুলিশকে জানায়, নজরুল চৌধুরীর সাথে তার ব্যবসায়ীক লেনদেন ছিলো। ওই লেনদেন সংক্রান্ত কারনে গত ২রা জুন নজরুল ইসলামকে উজিরপুরে ধরে আনা হয়। উদ্ধার করা হয় হত্যার কাজে ব্যবহৃত গামছা ও ব্লেড।
পরে তাকে উপজেলার মুগাকাঠি গ্রামের ভরত এর ছাড়া বাগানে এনে গামছা দিয়ে শ^াস রোধ করে হত্যা করা হয়। এর পর লাশ গুমের উদ্দেশ্যে ব্লেড দিয়ে পেট কেটে পুকুরে ফেলে দেয়। এ কাজে আবুল তালুকদারকে সহযোগিতা করে আরো তিন জন। হত্যার পর ওই রাতেই মৃত ব্যক্তির পকেটে থাকা ৫০ হাজার টাকা নিয়ে সড়ক পথে বাস যোগে ঢাকায় চলে যায় হত্যাকারীরা।
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, সোমবার দুপুরে হত্যার দায় স্বীকার করা আবুল তালুকদারকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে। সে আদালতেও হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। বাকি তিন আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম।