দূষনের কবলে ডিসি লেক পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শন দূষনের কবলে ডিসি লেক পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শন - ajkerparibartan.com
দূষনের কবলে ডিসি লেক পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শন

3:05 pm , June 17, 2019

মর্তুজা জুয়েল ॥ অযত অবহেলা আর রক্ষণাবেক্ষনের অভাবেই নগরীর প্রনকেন্দ্রের সৌন্দর্যবর্ধনকারী ঐতিহ্যবাহী ডিসি লেকের পানি দূষনের জন্য দায়ী বলে জানিয়েছে পরিবেশ বিভাগ। জেলার অন্যতম দৃষ্টিনন্দন লেকটিকে অপব্যবহারেরও অভিযোগ রয়েছে পার্শ্ববর্তী বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানর বিরুদ্ধে। পাশাপাশি  সুয়ারেজ লাইনের বর্জ্য নিষ্কাশন হওয়ার প্রভাবও রয়েছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। গতকাল সোমবার বিকেলে বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যায়ের ৩ সদস্যের একটি দল লেকটির চারদিক পরিদর্শন ও দূষিত পানির নমুনা সংগ্রহ করেছে। অধিদপ্তরের পরিচালক আব্দুল হালিম, পরিদর্শক তোতামিয়া এবং বায়োকেমিষ্ট মুনতাসির রহমান পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করেন। দলটির পর্যবেক্ষনে ময়লা ও বর্জ্য ফেলে পানি দূষন, তৈলাক্ত পরিত্যক্ত খাবার ফেলা, ডিজলভ অক্সিজেনের মাত্রা কমে যওয়া, ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি, সালোক সংশ্লেষন প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়ার মত কারন উঠে এসেছে। বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তর কার্য্যালয়ের ল্যাবরেটরীতে পরীক্ষার পর আজ এ বিষয়ে রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ার কথা রয়েছে। বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের বায়োকেমিষ্ট মুনতাসির রহমান জানান, লেকটির পাশ্ববর্তী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে পরিত্যক্ত তৈলাক্ত খাবার ফেলা হচ্ছে। ঐ তৈলাক্ত খাবারের কেল পানির উপরে ভেসে খাকায় সূর্যের আলো প্রবেশ বাধা প্রাপ্ত হয়ে সালোকশংশ্লেষন প্রক্রিয়া বিঘœ ঘটছে। লেকটির চােিদতে প্রচুর লতাগুল্ম ও উদ্ধিদ তৈরী হয়েছে । পরবর্তীতে তা পরিষ্কার না করায় তা পচে পানিতে মিশ্রিত হয়েছে।  এ পচন থেকে পর্যপ্ত ব্যাকটেরিয়া তৈরী হয়। স্বাভাবিকের তুলনায় অতিরিক্ত ব্যাকটেরিয়া পানির মধ্যে বিদ্যমান অক্সিজেন গ্রহন করেছে। ফলে অক্সিজেনে ঘাটতি তৈরী হয়েছে। তবে কত পরিমান অক্সিজেন ঘাটতি হতে পারে তা  পরিক্ষা না করে নিশ্চিত করে বলা যাবেনা বলে জানান তিনি। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কোন পানিতে ডিজলভ অক্সিজেনের পরিমান প্রতি লিটারে  নূন্যতম ৪.৫ মিলি থেকে ৮.০০ মিলি উপস্থিত থাকে। অক্সিজেনের পরিমান এর  নিচে হলে মাছ সহ অন্যান্য জলজ প্রানীর বেচে থাকা সম্ভব নয়।
এদিকে ডিসি লেক সংলগ্ন তারকা মানের হোটেল গ্রান্ড পার্ক থেকে পরিত্যক্ত খাবার সহ বিভিন্ন বর্জ্য ফেলা হচ্ছে নিয়মিত। লেকটির পূর্ব দিকের শেষ প্রান্তে হোটেলটির স্মোকিং জোন তৈরী করা হয়েছে। সেখান থেকে  বিপুল পরিমানের ময়লা সরাসরি লেকটিতে ফেলা হচ্ছে। এছাড়া ব্যাপ্টিষ্ট মিশন ও আমবাগানের মধ্য থেকে প্রবাহিত ছোট খালটির একটি প্রান্ত এসে লেকটিকে যুক্ত করেছে। শীত মৌসুমে খালটির পানি সংযোগ লেকের সঙ্গে বন্ধ থাকলেও বর্ষা মৌসুমে দূষিত পানি প্রবাহিত হয়ে লেকে প্রবেশ করে বলে জানান স্থানীয়রা।
তারা জানান,বর্তমানে লেকের পানি থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে।এখানে বসবাসস করার মত পরিবেশ নেই। লেকের রপানি দূষিত হওয়ায় জারা জরিত তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন করার দাবী জানান তারা।এছারা যারা এ লেকের সঙ্গে নিয়ম উপক্ষো করে সুয়ারেজের মাধ্যমে বর্জ্য নিষ্কাশন করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত পদক্ণে নেয়ার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করেন তারা।
এদিকে পানি  দূষিত হয়ে পরার পর ৩ দিন আগে থেকে মাছ মরা যওয়া অরম্ভ হলেও তা এখনোর অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিনই  নগরীর ডিসি লেক’র তীরে গেলেই পাওয়া যাচ্ছে বড় বড় কাতল, রুই, সিলভারসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। গত দুই দিন ধরে পথচারী ও স্থানীয়রা ডিসি লেকের পানিতে অর্ধমৃত অবস্থায় ভেসে উঠা এসব মাছ ধরছে তারা। লেকের পানিতে থাকা মাছসহ বিভিন্ন জলজ প্রানী মরে কিংবা অর্ধমৃত অবস্থায় ভেসে উঠায় নগরীর অন্যতম বিনোদন এলাকাটি হুমকির মুখে পড়েছে।
উল্ল্যেখ্য বৃটিশ স্বাসনামলে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মি.বেল  এ লেকটি খনন করেন। বর্তমানে এ এলাকটি নগরবাসীর অন্যতম একটি বিনোদন কেন্দ্র।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT