3:08 pm , June 16, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ নগরীর ডিসি লেক’র তীরে গেলেই পাওয়া যাচ্ছে বড় বড় কাতল, রুই, সিলভারসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। গত দুই দিন ধরে পথচারী ও স্থানীয়রা ডিসি লেকের পানিতে অর্ধমৃত অবস্থায় ভেসে উঠা এসব মাছ ধরছে তারা। গতকাল রোববার বিকেলেও স্থানীয় এক যুবক প্রায় ২০ কেজি ওজন সাইজের বিশাল কাতল মাছটি পেয়েছে ওই লেকে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে দুষনের কবলে পড়ে লেকের পানি পচে নষ্ট হয়ে গেছে। বর্তমানে পানির অবস্থা মাছসহ বিভিন্ন জলজ প্রানীর জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে। তাই লেকের পানিতে থাকা মাছসহ বিভিন্ন জলজ প্রানী মরে কিংবা অর্ধমৃত অবস্থায় ভেসে উঠছে। এতে নগরীর অন্যতম বিনোদন এলাকাখ্যাত ও গরমে প্রশান্তি পেতে লেকের পাড়ে, গ্রীন সিটি পার্ক ও বঙ্গবন্ধু উদ্যানে আসা দর্শনার্থীরা বিপাকে পড়ছেন। লেকের পচা পানি, মাছসহ মৃত জলজ প্রানীর দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন দর্শনার্থীরা। নগরীর ভিআইপি এলাকা হিসেবে পরিচিত বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বাসভবন এলাকা রাজাবাহাদুর সড়ক ও বঙ্গবন্ধু উদ্যানের মাঝে এ লেকটির অবস্থান। এ লেকের পশ্চিম তীরে জেলা প্রশাসক’র বাসভবনের সামনে একটি সুদৃশ্য ঘাটলাও রয়েছে। জেলা প্রশাসকের মালিকানাধীন ও তত্ত্বাবধানে থাকায় এ লেকটি ডিসি লেক হিসেবে পরিচিত। স্থানীয়রা জানায়, গত প্রায় দুই মাস ধরে লেকের পানি পচে দুর্গন্ধ বের হওয়া শুরু হয়। বর্তমানে পচাঁ পানির দুগন্ধে লেকের পাড়ে যাওয়া দুরহ হয়ে পড়েছে। গত দুই দিন ধরে লেকের মাছ মরে ও বড় বড় মাছ অর্ধমৃত অবস্থায় ভেসে উঠছে। গত দুই দিনে অনেক মাছ ধরা পড়েছে। এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আরেফিন বাদল জানান, ডিসি লেকের পানি নষ্ট হওয়ার বিষয়ে তারা এখন পর্যন্ত কিছুই জানেন না। তাদেরকে এই বিষয়ে কেউ অবহিত করেননি। কি কারনে নষ্ট হয়েছে তাও তারা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত নন। আজ তাদের একটি টিম ওই স্থানে যাবে এবং পানি নষ্ট হওয়ার বিষয়টি পরিক্ষা করা হবে বলেও জানান তিনি।
বরিশাল জেলার নাজির হাবিবুর রহমান জানান, লেকের পানি নষ্ট হয়েছে মাস দুই আগেই। তবে এর কোন সঠিক কারন আমাদের জানা নেই। তবে গত দেড় মাস পুর্বে মৎস বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ি পানি শোধনের জন্য ১০ মন চুনা ফেলা হয়েছিল। এতেও পানি শোধন না হয়ে তা আরো বিষাক্ত হয়ে গেছে। ফলে মাছ মরে ভেসে উঠছে। তিনি আরো জানান, রোববার মৎস বিভাগের কর্মকর্তারা লেকটি পরিদর্শন করেছেন। তারা পানি শোধনের জন্য নতুন করে ওষুধ প্রয়োগ করেছেন। এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস বলেন, আমি নিজেই পুকুরের পানি পরিক্ষা করেছি। সর্বশেষ রোববার পানি শোধনের জন্য ১০ হাজার টাকা মূল্যের ২শ কেজি জিওলাইক নামক ওষুধ পানিতে দেয়া হয়েছে। এটি পানির সাথে মিশে গেলে মাছ মরা বন্ধ হবে। তবে এ ওষুধ প্রয়োগের পরে বৃষ্টি হওয়া জরুরী। কেননা বৃষ্টি ছাড়া ওষুধ পানির সাথে মিশানো সম্ভব না। যেহেতু বৃষ্টি হয়নি তাই লেকে পাম্পের মাধ্যমে নতুন পানি দেয়া জরুরী হয়ে পড়েছে।