3:04 pm , June 12, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল সরকারী মডেল স্কুল এন্ড কলেজের গনিত বিভাগের শিক্ষক’র বিরুদ্ধে প্রেমিকা বিএম কলেজ ছাত্রীকে হত্যার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যালয়েওই সংবাদ সম্মেলন করেন ছাত্রী মিলি ইসলামের মা পারভীন খানম। কন্যা মিলি’র হত্যার বিচার ও হত্যাকারীকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, তার কন্যা বিএম কলেজের মাস্টার্স (হিসাব বিজ্ঞান) বিভাগের পরীক্ষার্থী ছিলো। গত ৩ মে বরিশাল নগরীর ২৮ নং ওয়ার্ডের ফিসারী রোডের আলী আজিমের ভাড়া বাসা থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
তিনি বলেন, বরিশাল মডেল স্কুল এন্ড কলেজের গনিত বিভাগের শিক্ষক পুলিন চন্দ্র সরকার হিন্দু হয়েও কন্যা মিলিকে মুসলমান হিসেবে পরিচয় দেয়। এছাড়াও তার স্ত্রী ও সন্তান থাকার বিষয় গোপন করে। পরে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক করে। দীর্ঘদিন তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। এমনকি আমার কন্যা মিলি ইসলামকে বিয়ে করবে বলে আশ্বস্ত করে।
হত্যাকান্ডের দুই মাস পূর্বে আমরা পুরো বিষয়টি জানতে পারি। তখন পুলিন একদিন আমাদের নথুল্লাবাদের বাসায় গিয়ে মিলি ও আমাদের হুমকি দেয়। সে মিলিকে বিয়ে করতে পারবেনা বলে জানায়। বিষয়টি মিলি পুলিনের স্কুলের অধ্যক্ষ ও বাসায় জানিয়ে দেবে বলে হুশিয়ারী দিলে পুলিন তাতে বাঁধা দেয়। অভিযোগ করার জন্য মিলি দু’দিন স্কুলে গিয়ে আবার ফিরে আসে। পরে পুলিন মিলিকে কারো কাছে কিছু না বলার জন্য পরামর্শ দেয়। এছাড়াও মিলিকে বিয়ের আশ্বাস দেয়।
তিনি আরো জানান, ঘটনার আগের দিন মিলি ইসলাম ফিসারী রোডের ওই বাসায় সে ও তার স্বামী থাকবে বলে ভাড়া নেয়। রাতে পুলিন বাসায়ও আসে বলে জানায় বাড়ির মালিকের স্ত্রী শিউলী আজিম। আত্মহত্যার খবর পেয়ে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘরের দরজা খোলা পায়। এসময় মিলির ফোন একটি পানি ভর্তি পাতিলের মধ্যে ডুবানো ছিলো। আর মিলি গলায় ওড়না দিয়ে ফ্যানের সাথে ঝোলানো ছিলো তবে তার পা মাটিতেই ছিলো। এই ঘটনায় তিনি (মা) বাদী হয়ে পুলিন চন্দ্র সরকারসহ অজ্ঞাত নামা আরো কয়েকজনকে আসামী করে বরিশাল মহানগর হাকিম আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। যার মামলা নম্বর ৬৪/১৯। আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য পিআইবিকে নির্দেশ দিয়েছেন। পরে পুলিশ বরগুনা জেলার সদর থানাধিন ২নং গৌরীচন্ন এলাকা থেকে পুলিনকে গ্রেপ্তার করে। তবে পুলিশ পুলিনের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা গ্রহন করে তাকে ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৪ ধারায় আদালকে প্রেরন করে। উক্ত মামলায় পুলিন চন্দ্র সরকার গত ৯ জুন আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পায়। ইতিমধ্যে পুলিন সরকার জামিনে মুক্তি পেয়ে সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে আমাদের হুমকি দিচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে আরো একটি হত্যাকান্ড হবে বলেও তারা হুশিয়ারী দেন।