লঞ্চে নেই নুন্যতম নিরাপত্তা লঞ্চে নেই নুন্যতম নিরাপত্তা - ajkerparibartan.com
লঞ্চে নেই নুন্যতম নিরাপত্তা

3:06 pm , June 11, 2019

সাঈদ পান্থ ॥ ঈদের ছুটি শেষে বরিশাল থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের কর্মস্থলে ছুটছে দক্ষিণাঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ। কিন্তু এই মানুষ বা যাত্রীর নিরাপত্তায় কোন ব্যবস্থা লক্ষ করা যায়নি। বিভিন্ন অভ্যন্তরিন রুটের লঞ্চ ও বাসে তিল ধারণের যায়গা নেই। কেউ কেউ আবার ঝুকিঁ নিয়ে বাস ও লঞ্চের ছাদে চেপে কর্মস্থলে ফিরতে লঞ্চঘাট ও নথুল্লাবাস বাস টার্মিনালে ভীর করছেন। এর মধ্যে বড় বিপত্তির বিষয় হাজার হাজার যাত্রী বহন করা লঞ্চে নেই আনসার। সেখানে কোন দুরবৃত্ত কোন অপরাধ সংঘঠিত করলে তার নিরাপত্তায় কোন ব্যবস্থা রাখেনি লঞ্চ কোম্পানীগুলো। যদিও সুরভী ও সুন্দরবন লঞ্চ কোম্পানীতে আনসার রয়েছে। বাকি লঞ্চগুলোতে কোন আনসার নেই। বরিশাল নৌ বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-বরিশাল রুটের যাত্রীবাহি বিশাল আকৃতির লঞ্চগুলোর অধিকাংশে যাত্রীদের নিরাপত্তায় আইনশৃংখলা বাহিনীর কোন সদস্য নেই। সর্বশেষ বেতন স্কেলে আনসার সদস্যদের বেতন বৃদ্ধি পাওয়ায় লঞ্চ থেকে আনসার প্রত্যাহার করেন লঞ্চ মালিকরা। ফলে প্রতিবছরের মতো এবারের ঈদ উৎসব শেষে কর্মস্থলে ফেরা নৌপথে যাত্রীদের যাতায়াত করতে হচ্ছে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যেই। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার ভাইস চেয়ারম্যান ও সুন্দরবন লঞ্চ কোম্পানীর চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, ‘সর্বশেষ জাতীয় পে স্কেলে আনসার সদস্যদের বেতন অনেক বেড়েছে। এতে প্রতিমাসে আনসার সদস্যদের জন্য লঞ্চ মালিকদের ব্যয় হবে লক্ষাধিক টাকা। মালিকরা ওই টাকা বহন করতে অস্বীকার করায় লঞ্চে আনসার রাখা হচ্ছে না।’ রিন্টু বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আইনশৃংখলা সংক্রান্ত সভায় একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। আনসারদের বেতন ৫০ ভাগ হারে লঞ্চ মালিক ও আনসার বিভাগকে বহন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে বরিশাল জেলা আনসার ও ভিডিপি কমান্ড্যান্ট মো: কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আগের স্কেলে আনসার সদস্যদের বেতন ছিল সাড়ে ৮ হাজার টাকা। সর্বশেষ স্কেলে হয়েছে ১৩ হাজার টাকা। বেতন বৃদ্ধির পরই লঞ্চ মালিকরা লঞ্চ থেকে আনসার প্রত্যাহার করেন। বিষয়টি বিভাগীয় কমিশনারকে জানানো হয়েছিল।’ ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফেরা নৌ যাত্রী তৌফিক আমিন তনু জানান, ‘ঈদের সময় ঢাকা-বরিশাল রুটের প্রতিটি লঞ্চে ৫/৬ হাজার যাত্রী থাকবে। এদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া লঞ্চ মালিকদের দায়িত্ব।’ বেসরকারী ফার্মে চাকুরীরত রাশেদ ইমাম নামে এক নৌ যাত্রী জানান, ‘পূর্বে প্রায় প্রতিটি লঞ্চে -আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্য ছিল। কোন তাদের উঠিয়ে দেয়া হয়েছে এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিৎ।’
বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ এর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ পরিচালক আজমল হুদা মিঠু সরকার বলেন, ‘আমরা যাত্রীদের নিরাপত্তায় প্রতিবারের মত এবছর ও নানা কর্মসূচী হাতে নিয়েছি। কিন্তু লঞ্চের আইন-শৃংখলার বিষয়টি নিয়ন্ত্রন করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় বা পুলিশ বিভাগ। এ বিষয়ে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।’ বরিশাল জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, ‘যাত্রীদের নিরাপত্তায় বরিশাল জেলা প্রশাসন থেকে নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট থাকে। মনিটরীং করে যাত্রী ওঠা ও ওভারলোডিং করতে দেয়া হচ্ছে না। প্রতিটি লঞ্চে সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর কোন দুরবৃত্তকারী কোন অপরাধ করে লঞ্চ থেকে বের হয়ে যাওয়ারও সুযোগ নেই। তবে প্রতিটি লঞ্চে যাতে করে আনসার বা নিজস্ব ব্যবস্থায় নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগ করা হয় এই বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ এর সাথে আলোচনা করা হবে।’
এব্যাপারে মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান (পিপিএমবার) বলেন, ‘লঞ্চ মালিকরা নিজস্ব ব্যবস্থানায় নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিবে এই বিষয়ে লঞ্চ মালিকদের বলা হয়েছে। আনসার না থাকলেও যেন নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা যায় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আনসারের বেতন বৃদ্ধির কারণে আনসার নেয়া হচ্ছে না। এটি শুধুই অজুহাত। এটা হতে পারে না। প্রতিটি লঞ্চেই যাত্রী নিরাপত্তায় আনসার বা সিকিউরিটি ফোর্স নিয়োগ করতে হবে।’

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT