বাড়ছে সিটি মেয়র’র বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ছে সিটি মেয়র’র বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স - ajkerparibartan.com
বাড়ছে সিটি মেয়র’র বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স

2:49 pm , May 29, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ শুধুমাত্র সাধারণ নগরবাসিই নয়, বৈষম্য দুর করতে হোল্ডিং ট্যাক্স পুনঃপর্যালোচনায় আনা হচ্ছে খোদ সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ’র বাড়ি। পুনঃপর্যালোচনায় বর্ধিত ফি দিতে হবে তাকেও। গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১২টায় সিটি মেয়র এর বাসস্থান নগরীর ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কালিবাড়ি রোডস্থ ৫০৫ নম্বর হোল্ডিং এর বাড়ি (সেরনিয়াবাত ভবন) পরিমাপ করা হয়েছে। এ সময় মেয়র এর প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বিসিসি’র ১নং প্যানেল মেয়র গাজী নঈমুল হোসেন লিটু ও মহানগর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুল। এর পূর্বে সিটি মেয়র এর বাড়ি পরিমাপের জন্য তাকে লিখিত নোটিশ দিয়ে সময় চেয়ে নেন তারা।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের কর ধার্য শাখার কর নির্ধারক বেলায়েত হোসেন বাবলু বলেন, বরিশাল সিটি মেয়র যে বাড়িতে থাকেন সে বাড়িটির হোল্ডিং তার দাদা শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত এর নামে। তার অবর্তমানে মেয়র এর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হোল্ডিং ট্যাক্স পুণঃপর্যালোচনার জন্য পরিমাপ করা হয়েছে। বেলায়েত হোসেন বাবলু বলেন, পূর্বের থেকে মেয়র এর বাস ভবনে অনেক পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে তাদের দুই তলা বিশিষ্ট যে ভবনটি রয়েছে সেটি আংশিক তৃতীয় তলা করা হয়েছে। এছাড়া ভেতরে একটি সেমি পাকা স্টোর রুম ও একটি গ্যারেজ করা হয়েছে। যার পুরোটাই হোল্ডিং ট্যাক্সের আওতাভুক্ত। তিনি বলেন, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের বিধি মোতাবেক দালান প্রতি বর্গফুট ৩টাকা, সেমি পাকা আড়াই টাকা ও গ্যারেজ দুই টাকা। সে হিসেবে সিটি মেয়র এর বসবাস করা বাড়িটিতে হোল্ডিং ট্যাক্স বৃদ্ধি পাচ্ছে কয়েক গুন। হোল্ডিং ট্যাক্স পুনঃপর্যালোচনা করে কর নির্ধারন করে মেয়র মহোদয়কে চিঠি প্রদান করা হবে। এ ক্ষেত্রে বর্ধিত কর নিয়ে কোন আপত্তি থাকলে তা তাকে লিখিতভাবে জানাতে হবে। শুনানির মাধ্যমে তার আপত্তির নিষ্পত্তি করা হবে।
বেলায়েত বাবলু বলেন, মূলত নতুন স্থাপনা এবং স্থাপনা পরিবর্তন হয়েছে এমন স্থাপনাগুলো পুনঃপর্যালোচনা করা হচ্ছে। যেমন এক তলা থেকে ২ তলা বা তার অধিক, টিনের ঘর থেকে পাকা ভবন করা হয়েছে কিনা সে বিষয়টি দেখে এবং মাপ-ঝোপ করে কর নির্ধারন করা হচ্ছে। এতে দেখাগেছে, যাদের বছরে এক লাক টাকা ট্যাক্স দেয়ার কথা তারা দিচ্ছেন মাত্র ১০ হাজার টাকা। এ বৈষম্য দুর করতেই নগর কর্তৃপক্ষ পুনঃপর্যালোচনার কাজ শুরু করেছে।
বিসিসি’র ১নং প্যানেল মেয়র ও ১৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর গাজী নঈমুল হোসেন লিটু বলেন, নতুন মেয়র সেরনিয়াবাদ সাদিক আবদুল্লাহ দায়িত্ব নেয়ার আগেই এই সিটি কর্পোরেশন দেউলিয়া হয়ে ছিলো। দায়িত্ব নিয়ে এর কারন খুঁজতে গিয়ে নানা অনিয়ম এবং সমস্যা খুঁজে পান তিনি। যার মধ্যে হোল্ডিং ট্যাক্স অন্যতম। তাই ট্যাক্সের বিষয়ে বৈষম্য দূর করে সমতা ফিরিয়ে আনার কাজে হাত দেন মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ
প্রথম পর্যায়ে তিনি যারা নতুন স্থাপনা উঠিয়ে কিংবা স্থাপনা পরিবর্তন করেও ট্যাক্স ফাঁকি দিয়েছিলো তাদের ট্যাক্সের আওতায় আনার কার্যক্রম চলছে। তবে নগরীতে নতুন করে কারোর ট্যাক্স বৃদ্ধি না করে ২০১৬ সালে সাবেক মেয়র এর পরিষদে অনুমোদিত ট্যাক্সের রেট অনুযায়ী কার্যক্রম চলছে। যার মাধ্যমে কর্পোরেশনের আয়-ব্যয়ের ব্যবধান সমন্বয়ের পাশাপাশি এই কর্পোরেশনকে স্বাবলম্বী করে তোলার চেষ্টা চলছে।
এদিকে খোদ সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ’র বসবাসস্থলকে হোল্ডিং ট্যাক্স এর পুনঃপর্যালোচনায় নিয়ে আসার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে সাধারণ নগরবাসী। এই কার্যক্রম ট্যাক্স নিয়ে সৃষ্টি হওয়া বৈষম্য দূর করে সমতা ফিরিয়ে আনার কাজকে আরো বেগবান করবে বলে মনে করছেন তারা।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব কর্মকর্তার কার্যলয় সূত্রে জানাগেছে, ৫৮ বর্গ কিলোমিটার আয়োতনের বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে ৫১ হাজার ৮৯২টি ব্যক্তি মালিকানা ও ৫৭০টি সরকারি হোল্ডিং রয়েছে। যার মধ্যে এ পর্যন্ত যাচাই বাছাই করে ৫ হাজার ৪শত হোল্ডিং নম্বরে নতুন স্থাপনা আর নয়তো স্থাপনা পরিবর্তনের বিষয়টি পুনঃপর্যালচনায় উঠে এসেছে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT