2:43 pm , May 29, 2019
খান রুবেল ॥ আর মাত্র ক’দিন বাদেই প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে আপনজনদের সাথে ঈদ করতে নারীর টানে বাড়ি ফিরবে মানুষ। আর তাই প্রায় ১২ লাখ ঘরমুখো মানুষের সেবা দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে আজ ৩০ মে বৃহস্পতিবার রাত থেকে নৌ রুটে শুরু হচ্ছে বিশেষ সার্ভিস। ওই দিন ঢাকা থেকে ঈদ যাত্রী নিয়ে প্রথম বরিশালের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার নৌ-যান। যা চলবে ১২ জুন পর্যন্ত। তাই এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের সকল প্রস্তুতি। বিশেষ সার্ভিস শুরুর সাথে সাথে ১৪ দিন ব্যাপী সেবা পক্ষ পালন করবেন তারা। যাত্রীবাহী নৌ-যান মালিকদের সংগঠন জাপ এর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি আলহাজ¦ সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, প্রতি বছরই ঈদের অন্তত এক সপ্তাহ পূর্বে বেসরকারি লঞ্চগুলো ঈদের বিশেষ সার্ভিস শুরু করে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও আগামী ৩০ মে থেকে বরিশাল-ঢাকা নৌ-রুটে বিশেষ সার্ভিস শুরু হবে। তিনি বলেন, লঞ্চ কর্তৃপক্ষের জরিপ অনুযায়ী প্রতি ঈদে গোটা বরিশাল অঞ্চলে নদী পথে ১২ লাখ যাত্রী আসে। যার মধ্যে শুধুমাত্র ঢাকা থেকে বরিশালে আসে ১২ লাখ যাত্রী। এবারেও ওই একই সংসখ্য যাত্রীদের টার্গেট নিয়ে ঈদের বিশেষ সার্ভিষ শুরু হবে। সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, যাত্রী কম থাকার কারনে ঈদের পূর্বে রোটেশন অনুযায়ী লঞ্চ চলে। তবে ঈদ বিশেষ সার্ভিসে প্রায় সকল লঞ্চ এক সাথেই যাত্রী পরিবহন করে। প্রতিটি লঞ্চই ডাবল ট্রিপ দিয়ে থাকে। এক একটি বড় লঞ্চে ৫ হাজার এবং একটু ছোট লঞ্চে ৪ হাজার করে যাত্রী ওঠে।
এদিকে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ-পরিচালখ আজমল হুদা মিঠু সরকার বলেন, এবারের ঈদে রাত্রি ও দিবা সার্ভিস মিলিয়ে মোট ২৩টি বেসরকারি লঞ্চ চলাচল করবে। তাছাড়া বিআইডব্লিউটিসি’র আরো ৭টি জাহাজ বিশেষ সার্ভিসে থাকবে। সে অনুযায়ী বরিশাল-ঢাকা রুটে সরাসরি ৩০টি যাত্রীবাহী নৌ-যান চলাচল করবে। তবে গোটা দক্ষিণাঞ্চলীয় নৌ রুটে বিশেষ সার্ভিস দিবে মোট ৫২টি নৌ যান।
তিনি বলেন, এখন বর্ষা মৌসুম। এ বিষয়টি মাথায় রেখেই নৌ যান চলাচল করা হবে। যাত্রে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা না হয় সে বিষয়টিতে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বেশি। তাছাড়া দিন ঈদের আগে ও পরে ১৪ দিন নদী পথে যাতে বাল্কহেড চলাচল করতে না পেরে সে বিষয়টিতেও আমরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।
তিনি বলেন, ঈদের বরিশাল থেকে যাত্রীদের চাপ বেশি থাকে। লঞ্চের অপেক্ষায় গভির রাত পর্যন্ত যাত্রীদের টার্মিনালে অবস্থান করতে হয়। সেই বিষয়টি বিবেচনা করে পূর্বে ন্যায় নৌ বন্দরের সামনে যাত্রী ছাউনী করে দেয়া হবে। সেখানে র্যাব এবং পুলিশ সদস্যরা তাদের নিরাপত্তায় সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করবেন।
বরিশাল সদর নৌ-থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, নদী বন্দর ও যাত্রীদের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। এখানে পোশাকধারীদের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশ সদসরা দায়িত্ব পালন করবেন।
তিনি বলেন, আমি দুটি বিষয়ের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হবে। তার মধ্যে একটি নৌ বন্দর এলাকায় ভ্রাম্যমান হকার ও নদীতে নিষিদ্ধ সময়ে বাল্কহেড চলাচল। ভ্রাম্যমান হকার সেজেই যাত্রীদের অজ্ঞান করে থাকে অজ্ঞান ও মলম পার্টির সদস্যরা। এ কারনে বন্দরে কোন হকার প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। তাছাড়া দুর্ঘটনা এড়াতে যাতে বাল্কহেড চলাচল করতে না পেরে সে বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।
বরিশাল জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা দফায় দফায় বৈঠক করেছি। বৈঠকেও ঈদে আগে এবং পরে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়টিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। কেননা নৌ পথেই যাত্রীদের আসা যাওয়া বেশি। সে বিষয়টি মাথায় রেখে র্যাব, পুলিশ এবং কোস্টগার্ডকে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরাও থাকবেন নৌ বন্দরে।
তিনি বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে নৌযানে ওঠা যাবে না। লঞ্চ ছাড়ার পূর্বে এই বিষয়টি মনিটরিং করবেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, নৌ বন্দর ও নৌ পুলিশ সদস্যরা। কোন ভাবেই লোড লাইন অতিক্রম করে লঞ্চ চলাচল করতে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।