2:55 pm , May 28, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দক্ষিণাঞ্চলে ঈদ বাজার ধীরে ধীরে জমে উঠছে। সরকারী বেসরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ও বোনাস পাবার সাথে ঈদের বেচাকেনায় আরো গতি আসবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীগন। তবে দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি কৃষকের অবস্থা এবার যথেষ্ট নাজুক হওয়ায় ঈদের বাজারেও তার বিরূপ প্রভাব পড়ছে। উপরন্তু এবার ঈদের বাজারে তৈরী পোষাক থেকে শুরু করে মুরগী গোশত সহ প্রায় প্রতিটি পণ্যের দামই গত বছরের চেয়ে ১০ থেকে ২৫% পর্যন্ত বেশী বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। গত বছর যেখানে প্রতি কেজি গরুর গোসত ৫শ টাকার মধ্যেই কিনতে পেরেছিলেন ক্রেতারা, এবার সেখানে সর্বনিম্ন সাড়ে ৫শ টাকা গুনতে হচ্ছে। ঈদের আগের রাতে তা আরো অন্তত ৫০ টাকা বৃদ্ধির আশংকা রয়েছে। দেশী মুরগী সহ কক ও সোনালী মুরগীর দামও কিছুটা চড়া। ব্রয়লার মুরগীর দাম প্রতি কেজি এখন পৌনে ২শ টাকার কাছে। এলাচ, দারুচিনি সহ মসলার দামও গত বছরের চেয়ে অনেক চড়া।
অপরদিকে এবার নগরীর বাজারে তৈরী পোশাক কিনতে নিম্নÑমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তের প্রথম পছন্দ ব্রান্ডসপ গুলো। দর্জিবাড়ী, ইজি, ইনফিনিটি, রিচম্যান-লুবনান, ক্যাটস আই,প্লাস পয়েন্ট সহ বেশ কিছু ব্রান্ড সপ গত কয়েক বছরে বরিশালের বাজারে বড় ধরনের ভাগ বসিয়েছে। বাতানকুল পরিবেশে একছাদের নিচে বিভিন্ন দামের ও বাহারী পোশাক মেলায় বেশীরভাগ ক্রেতাই একদামের এসব দোকানগুলোতে ভীড় করছেন।
তবে এবারো মেয়েদের শাড়ী ও থ্রী-পীস সহ বাচ্চদের পোষাকের জন্য নগরীর হেমায়েত উদ্দিন রোড ও চকবাজারেই ক্রেতাদের আগ্রহ বেশী। এছাড়া ফজলুল হক এভেনিউতে হাজী মহাসিন মার্কেটে নিম্নবিত্ত পরিবারগুলোর ভীড় বাড়ছে। স্টিমার ঘাটের সিটি মার্কেটেও ক্রেতাদের আনাগোনা বাড়ছে। সব মার্কেটগুলো ইতোমধ্যে বাহারী রঙের আলোক মালায় সজ্জিত হয়েছে।
মেয়েদের কাছে এবার ভারতীয় গাউন সহ লেহাঙ্গা ও বেনারসী থ্রি পিসের চাহিদা বেশী। এবার অত্যাধীক গরমের কারনে শাড়ীর বাজারে সুতি শাড়ীর কদর কিছুটা বেশী বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন। এছাড়া টাংগাাইল, জামদানী, বেনারসি ও কাতান শাড়ীর চাহিদাও রয়েছে।
তবে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতির মূল যোগানদাতা কৃষক ও কৃষির অবস্থা এবার সাম্প্রতিককালের নাজুক পর্যায়ে থাকায় ঈদের বাজারে তেমন কোন প্রবৃদ্ধি নেই। ধানের অব্যাহত দর পতনে কৃষক পরিবারগুলোতে চলছে নিরব হাহাকার। কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে কৃষকের বুক ফাঁটা আর্তনাদ। ফলে ঈদের আনন্দ দক্ষিণাঞ্চলের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর কাছে যথেষ্ঠ ফিকে হয়ে গেছে ইতোমধ্যে।