লঞ্চের টিকিট নিয়ে হাহাকার লঞ্চের টিকিট নিয়ে হাহাকার - ajkerparibartan.com
লঞ্চের টিকিট নিয়ে হাহাকার

2:52 pm , May 27, 2019

পান্থ ॥ আসন্ন ঈদ উৎসব পালনে বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলে আসতে চাওয়া মানুষ পড়েছে বিপত্তিতে। যেন এই অঞ্চলের অন্যতম যাতায়াত মাধ্যম লঞ্চের টিকিট সোনার হরিন হয়ে গেছে। কোন লঞ্চ কোম্পানীর কাউন্টারেই মিলছে না লঞ্চের টিকিট। সব কাউন্টার থেকে জানানো হচ্ছে কোন টিকিট নেই। অপরদিকে দালালের কাছে মিলছে সেই সোনার হরিন টিকিট। তবে তা সংগ্রহ করতেহচ্ছে বাড়তি ৫শ থেকে ২ হাজার টাকা বেশী দরে। উচ্চমূল্যে সে সব টিকিট সংগ্রহ করে বাড়ি ফেরা ও ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরতে হচ্ছে যাত্রীদের। যদিও প্রতি বছরের মত এ বছরও ঈদকে সামনে রেখে বরিশাল-ঢাকা নৌরুটে অত্যাধুনিক ও বিশালাকারের নতুন লঞ্চ যুক্ত হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা বরিশাল নৌ রুটে এ বছর ২৬ লঞ্চ চলাচল করবে। এর পাশাপাশি সরকারি সংস্থা বিআইডব্লিউটিসির ৫টি জাহাজ চলাচল করবে এই রুটে। অপরদিকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে অভ্যন্তরীন রুটের ৩০টি ছোট লঞ্চ। ঢাকার লঞ্চ কোম্পনী গুলোর মধ্যে রয়েছে, সুন্দরবন, সুরভী, কীর্তনখোলা, অ্যাডভেঞ্চার, পারাবত, ফারহান, টিপু, গ্রীন লাইন। এই কোম্পানী গুলোর লঞ্চের পাশাপাশি এ বছর এই বহরে যুক্ত হচ্ছে মানামি ও অ্যাডভেঞ্চার-৫। এসব লঞ্চে সিঙ্গেল, ডাবল, ভিভিআইপি, ভিআইপি, সেমি ভিআইপি, সৌখিন ও ফ্যামিলি ক্যাটাগরিতে দুই হাজার ৫৩৩টি কেবিন রয়েছে। পাশাপাশি এ সব লঞ্চে ধারণ ক্ষমতা রয়েছে ৪১ হাজার ৩৪৮ যাত্রীর। কিন্তু এই ঈদে প্রতিদিনই ৫ হাজারের বেশী কেবিনের চাহিদা রয়েছে। একইভাবে গড়ে প্রায় ১ লাখ করে যাত্রী বরিশালে আসবে। এ সব কারণে লঞ্চর টিকিট সোনার হরিনে রূপ নেয়।
রমজান শুরুর পর থেকেই সাধারণ যাত্রী ও তাদের স্বজনরা এসব কেবিন পেতে লঞ্চের অফিস ও কাউন্টার গুলোতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। ওই সময় তাদের কাছ থেকে স্লিপ জমা রাখা হয়। তবে নির্ধারিত সময়ে তাদের নামে কোনও কেবিন থাকে না বলে অভিযোগ রয়েছে। কেবিনের খাতায় নাম থাকে প্রভাবশালী ব্যক্তির ও মালিক পক্ষের লোকজনের। এ কারণে, প্রতিবছর ঈদ মৌসুমে প্রভাবশালী ব্যক্তি অথবা লঞ্চ মালিক পক্ষের লোকজনের মাধ্যমে কেবিন নিতে হয় সাধারণ যাত্রীদের। বাড়ি ফেরার নানা ঝক্কির সঙ্গে যোগ হয় টিকিট পাওয়ার জন্য লবিংয়ের ঝক্কি। আর যাদের প্রভাবশালীদের সঙ্গে পরিচয় নেই, তাদের ভরসা কালোবাজারের দালাল চক্র। যাত্রীরা বলছেন, কাউন্টারগুলোতে টিকিট না পাওয়া গেলেও বরিশাল নদীবন্দরে অতিরিক্ত ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা দিলেই দালালদের কাছে পাওয়া যায় কেবিনের টিকিট।
অভিযোগের বিষয়ে সুন্দরবন নেভিগেশনের বরিশাল অফিস ম্যানেজার মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘প্রয়োজনের তুলনায় কেবিন কম হওয়ায় কেউ কেউ কেবিনের টিকিট না পেয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। আমরা প্রকৃত যাত্রীদের হাতে টিকিট দিতে আগে থেকেই নানা ব্যবস্থা নিয়েছি।’ এমভি কীর্তনখোলা লঞ্চ কোম্পানির ম্যানেজার মো. বেল্লাল হেসেন জানান, আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে কেবিনের টিকিট ছাড়া হয়। পরে এসে টিকিট না পেয়ে অনেকে ক্ষুব্ধ হয়ে নানা অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, ‘ঘরমুখো অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ সামলাতে ঈদের তিন দিন আগে থেকে ডবল ট্রিপের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সর্বোচ্চ যাত্রীসেবা দিতে আমাদের আন্তরিকতার কোনও কমতি থাকবে না।’ দালালদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আইনশৃংখলা কমিটির মিটিং এ বিষয়ে কঠোর অবস্থা রয়েছে প্রশাসন, লঞ্চ মালিক ও বিআইডব্লিউটিএ। আমরা নানা ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করেছি।’ বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ-র নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ-পরিচালক আজমল হুদা মিঠু সরকার বলেন, ‘কালোবাজারী রোধে আমরা বরাবরের মত কঠোর অবস্থানে রয়েছি। সম্প্রতি দুই দালালকে ধরে আমরা ভ্রামমান আদালতের মাধ্যমে সাজা প্রদান করেছি। এ বছর দালাল রোধে আমরা আরো কঠোর অবস্থানে রয়েছি।’

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT