3:17 pm , May 21, 2019
বানারীপাড়া প্রতিবেদক ॥ বানারীপাড়ায় শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের চাখারের ১০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভবন,চিকিৎসক ও নার্সদের কোয়ার্টার (বাস ভবন )দুটি জর্জাীর্ন হয়ে পড়েছে। ছাদ থেকে খসে পড়া কংক্রিট আর প্লাষ্টারের হাত থেকে রক্ষা পেতে ডাক্তার, নার্স আর রোগীদের সব সময় তটস্থ থকতে হয়। হাসপাতালের মূল ভনটির ভগ্নদশা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যা ধসে পড়ে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা করা হচ্ছে। বাংলার বাঘ খ্যাত শের-ই বাংলা আবুল কাসেম ফজলুল হককে কেন্দ্র করে বৃটিশ শাসন আমলে বানারীপাড়া উপজেলার অজো পাড়া গাঁ চাখার গ্রামে গড়ে উঠেছিল শহর সাদৃশ্য এলাকা। উপ-শহর বললেও ভুল হবে না।সেখানে ১৯৪০ সালে চাখার ফজলুল হক কলেজ স্থাপিত হওয়ায় গোটা দক্ষিনাঞ্চলের লেখা পড়ার কেন্দ্র বিন্দু ছিল চাখার। একটি শহরের আদলে গড়া চাখারে গড়ে উঠেছে বালক ও বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়।রয়েছে ডাকবাংলো,পুলিশ ফাড়ি, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, সাবরেজিষ্ট্রি অফিস,ইউনিয়ন ভূমি অফিস,ডায়াগনষ্টিক সেন্টার, ব্যাংক,বীমা,এনজিও অফিস, শের-ই বাংলা স্মৃতি জাদুঘর ও বিশ্রামাগার।বানারীপাড়া উপজেলা সদরে গাড়ী পৌঁছার আগেই চাখার থেকে গাড়ী চলাচল শুরু হয়।এরই ধারাবাহিকতায় আশির দশকের গোড়ার দিকে চাখারে প্রতিষ্ঠা করা হয় ১০ শয্যার একটি হাসপাতাল। সেই হাসপাতালের দ্বিতল ভবনটির বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ফাটল,খসে পড়ছে প্লাষ্টার,সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাদ থেকে চূইয়ে ভিতরে পানি পড়ে একাকার হয়ে যায়।এরই মধ্যে চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম। ১০ শয্যা বিশিষ্ট চাখার হাসপাতালে গেলে দেখাযায় এ করুন অবস্থা।ওই হাসপাতালে ২ দুইজন এমবিবিএস চিকিৎসক,একজন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার,৪জন নার্স, ফার্মাসিষ্ট ও একজন কুক মশালচি রয়েছে। আছে খাদ্য সরবরাহকারী ঠিকাদার। ভবনের যা অবস্থা তাতে কোন রোগী রাখা য়ায়না। যার কোথাও যাওয়ার উপায় থাকে না তারাই একান্ত বাধ্য হয়ে এখানে ভর্তি হন। চিকিৎসকও বললেন এর মধ্যে রোগী রেখে কোন বিপদে পড়ি এ ভয় থাকে সর্বদা। ওই হাসপাতালে সার্বক্ষনিক আতংকের মধ্যে কাটান ডা.সামছি জাহান সোনিয়া ও ডা.উম্মে সালমা,উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার তাসলিমা খানম ও ফার্মাসিষ্ট হাসনাইন সহ অন্যান্য ষ্টাফরা।অপরদিকে ডাক্তার ও নার্সদের বাস ভবনের অবস্থা আরো করুন।সেখানে প্লাষ্টার খসে পড়ে দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচতে সামিয়ানা টানানো হয়েছে।যার ওপর বৃষ্টির পানি ঠেকানোর জন্য রয়েছে পলিথিন। এরই মধ্যে বাস করছেন একজন নার্স।পয়োঃনিস্কাশনের ব্যবস্থাও করুন।ঝুকিপূর্ণ ভবনে থাকছেন না চিকিৎসক। এদিকে একান্ত নিরুপায় হয়ে এখানে দু’একজন রোগী ভর্তি হন।হাসপাতালে রোগীদের খাবার সরবরাহকারী(ঠিকাদার) শাহ আলম জানান দু-একজন রোগীর খাদ্য সরবরাহ করা যে কত কঠিন তা প্রকাশ করাও মুসকিল।দু’একজনের জন্য বাজার করা,রান্না করা কিভাবে সম্ভব।এর চেয়ে হোটেল থেকে এনে দেওয়া ভাল।এ ব্যাপারে বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এস এম কবির হাসান আতংক ও দূর্ঘটনা এড়াতে অতিদ্রুত ওই ভবনগুলো ভেঙ্গে নতুন ভবন নির্মাণের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়ে বলেন ইতিপূর্বে ঝুকিপুর্ন হিসেবে ঘোষনা করার জন্য উর্ধবতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে তারা ছবি তুলে প্রতিবেদন দিতে বলায় তাও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ ব্যপারে কার্যকরী কোন পদক্ষেপ না নেওয়া হয়নি। সম্প্রতি অতিরিক্ত স্বাস্থ্য সচিব মোস্তাক আহম্মেদ বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও চাখার ১০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে ভবনের জরাজীর্ণ অবস্থা দেখে নতুন ভবন নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন বলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জানান।